আমাশয় রোগের লক্ষণ এবং ঘরোয়া চিকিৎসা (জরুরী হেলথ টিপস)

আমাশয় রোগের লক্ষণ –আমাশয় এমন একটি রোগ যার সাথে কমবেশি সকলেই পরিচিত। আমাশয় রোগের ভয়াবহতা কম থাকলেও এই রোগের ভোগন্তি কিন্তু কম নয়। এটি অন্তরে প্রদাহ সৃষ্টিকারী একটি রোগ যার ফলে পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মত সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অন্ত্রের রূপ গুলোর মধ্যে আমাশয় একটি অন্যতম রোগ।

হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া এই রোগ অনেকেরই হয়েছে তাই এই রোগ সম্পর্কে তেমন কিছু বলার নেই।এই রোগের ভয়াবহতা তেমন না থাকলেও একে হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক নয় কেননা আমার সয় অনেক সময় অনেক রোগের সাথে সম্পৃক্ত থাকে।

আমাশয় রোগের লক্ষণ

যক্ষা বা টিবি রোগের লক্ষণ

সাধারণত তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত এইরোগটি স্থায়ী হতে পারে। কোনভাবে যদি পেটে জীবাণু প্রবেশ করে তাহলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এই রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমেইএই রোগ থেকে নিরাময় সম্ভব তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন হয় না। সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা দিলেই বোঝা যায় আমাশয় হয়েছে।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আমাশয় রোগের লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে আজকের আর্টিকেলটি শুরু করব আপনাদের উদ্দেশ্যে। যাদের আমাশয় রোগ নিয়ে জানার আছে তারা অবশ্যই আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।আজকের আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত আপনাদেরকে আমাশয় রোগের লক্ষণ এবং ঘরোয়া চিকিৎসা কি বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব তাই সাথে থাকুন।

আমাশয় রোগ কি

জনসংখ্যা বহুল বাংলাদেশে আমাশয় একটি অতি পরিচিত রোগ। বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাবার কিংবা ময়লাযুক্ত বিভিন্ন খাবার পেটে যাওয়ার ফলে এই রোগ দেখা দেয়। সাধারণত দেখা যায় কিছুক্ষণ পর পর মলত্যাগ করা এবং মলের সাথে মিউকাস বা রক্ত বের হওয়া আমাশয় রোগের লক্ষণ। অনেক সময় মলের সাথে পিচ্ছিল পদার্থ বের হয় যাকে বলা হয় আম।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

যদি মলের সাথে এই পিচ্ছিল পদার্থ থাকে তাহলে নিশ্চিত হওয়া যায় আমাশয় রোগ হয়েছে। এই রোগে রোগী অনেক সময় অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। আমাশয় এমন একটি রোগ যা অন্তরের প্রদাহ দ্বারা চিহ্নিত গ্যাস্ট্রেটাইনাল ব্যাধি কে নির্দেশ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাশয় কে ডায়রিয়া দ্বারা চিহ্নিত করেছেন যেখানে পাতলা জলযুক্ত মলে রক্তের উপস্থিতি থাকে।

আমাশয় রোগের কারণসমূহ

আমাশয় রোগের বিভিন্ন কারণ রয়েছে।আমার সঙ্গে সাধারণত ভাইরাল ব্যাকটেরিয়া বা প্রোটোজোয়া সংক্রমণের কারণে বেশিরভাগ হয়ে থাকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের খাবার দাবার পচা বাসি খাবার অপরিষ্কার থেকেই এই রোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমাশয় রোগের কারণসমূহ নিচে তুলে ধরা হলো;

১) দূষিত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আমাশয় রোগ হয়ে থাকে।

২)দূষিত পানি এবং অন্যান্য পানীয় জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাশয়ের সৃষ্টি হয়।

৩)অনেক সময় আমার শোয়ের সংক্রমিত ব্যক্তিদের দ্বারা হাত ধুলে আমাশয় এর সম্ভাবনা থাকে।

৪) ময়লা আবর্জনা যুক্ত পানিতে সাঁতার কাটা গোসল করা ইত্যাদির মাধ্যমে আমাশয়ের সৃষ্টি হতে পারে।

৫) সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে শারীরিক সংস্পর্শ থাকলেও আমাশয় রোগের সম্ভাবনা থাকে।

বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন অঞ্চলে দূষিত প্রাণী পান করার মাধ্যমে আমাশয় রোগ ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় দুর্বল স্যানিটেশনের কারণে ও আমাশয়ের সৃষ্টি হয়।

আমাশয় রোগের লক্ষণ

আমাশয় রোগের লক্ষণ হিসেবে অনেকের ক্ষেত্রে অনেক রকম উপসর্গ দেখা দেয়। অনেক সময় এই উপসর্গগুলো হালকা থেকে গুরুতর এবং বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। আমাশয় রোগের উপসর্গগুলো তিন থেকে সাত দিনের বেশি সময় ধরে থাকতে পারে। আমাশয় রোগের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো;

১) পেটে ব্যথা অনুভব করা।

২) পেট অস্বাভাবিক ফুলে যাওয়া।

৩) ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত বের হওয়া।

৪) বমি বমি ভাব হওয়ার বা বমি হয়ে যাওয়া।

৫) বারবার পাতলা পায়খানা হয়।

৬) শারীরিক দুর্বলতা চলে আসে।

আমাশয় রোগের সংক্রমণ যদি তীব্রতর হয় তাহলে রোগী জলশূন্যতায় ভোগে যার কারণে এর উপসর্গগুলো এমন হয় যে-

১) ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

২) প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।

৩) অতিরিক্ত পানি তৃষ্ণা লাগে।

৪) জ্বর এবং সাথে সর্দি থাকে।

৫) পেশি খিঁচুনি ব্যথা হয়।

৬) দৈহিক শক্তি কমে যায়।

৭) ওজন কমে যায়।

আমার সব রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

আমাশয় রোগ গ্রীষ্মকালে বেশি পরিলক্ষিত হয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার খাওয়া এবং জীবন যাপন করার আমাশয় রোগের প্রধান কারণ। যেহেতু সচরাচর এই রোগে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাই এই রোগ নিয়ে আতঙ্ক তেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় না। তবে গুরুতর অবস্থা হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কিন্তু প্রাথমিকভাবে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। চলুন দেখে নেই আমার সব রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো কি কি;

বেশি বেশি পানি পান করা

যেহেতু আমাশয় রোগের ফলে বারবার পাতলা পায়খানা হয় এবং শরীর থেকে পানি অনেকটাই বের হয়ে যায়  যার কারণে মানুষ জলশূন্যতায় ভোগে। এমতাবস্থায় বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে যাতে করে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা না দেয়। যদি পানি বেশি দূষিত হয় তাহলে অবশ্যই ফুটিয়ে পান করার চেষ্টা করবেন।

খাবার স্যালাইন

ডায়রিয়া বা আমাশয় রোগে বারবার পায়খানা হওয়ার কারণে শরীর থেকে পানি ইলেক্ট্রোলাইট বের হয়ে যায় যার ফলে শরীরের ডিহাইড্রেট দেখা দিতে পারে।শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি খাবার স্যালাইন খেতে হবে।

তরল জাতীয় খাবার

আমাশয় রোগীদের পানিসূন্যতা পূরণ করতে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। তরল জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে যেমন ভাতের মার, লেবুর শরবত, ডাবের পানি, ঘরে বানানো খাবার স্যালাইন ইত্যাদি।

লেবু এবং পুদিনা

লেবু গরমের জন্য একটি ফ্রেস ফল। লেবুর কেচে রস বের করে তার সাথে একটু চিনি ও লবণ দিয়ে খেলে শরীর অনেকটাই আরাম পায় এবং পানির ঘাটতি পূরণ হয়। আর পুদিনা আপনার পেটকে প্রশমিত করতে বেশ কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা অ্যান্টিভাইরাল এন্টিফাঙ্গাল এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল কাজ করে। পুদিনা পাতা হজমের সমস্যা দূর করে। আপনি যদি চান তাহলে পুদিনা পাতার রস বের করে লেব ুর রস যোগ করে খেলে তার শরীরের অনেকটাই পানির ঘাটতি দূর করবে এবং হজম ক্ষমতা ঠিক রাখবে।

আদা চা

আদা চা অনেক রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। আদা চায়ের বেশ গুণ রয়েছে। আমার শরীর চিকিৎসার জন্য এটি একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। আদা চা পান করার ফলে হজমের সমস্যা দূর হবে খাবারের স্থবিরতার গ্রাস করবে এবং পেটকে শক্তিশালী করবে।

ডালিম

ডালিমের রস আমার সব বন্ধ করার জন্য দুর্দান্ত কাজ করে। আমার সহ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার একটি উপকরণ হলো ডালিমের রস। ডালিমের রসের পাশাপাশি ডালিম পাতাও এই রোগের একটি ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে কাজ করে। ডালিম পাতা গরম ফুটন্ত পানিতে দিয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে পান করলে আমাশয় রোগের জন্য এটি উপকার।

আমাশয় রোগ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

আমার শরীর রোগ প্রতিরোধ করতে হলে আগে থেকেই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে যাতে করে এই রোগের সংক্রমণ কমে।

*ঘনঘন হাত ধুবেন।

*বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত।

*স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার খাওয়া উচিত।

*সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত।

*পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সেনিটেশন ব্যবহার করা উচিত।

*খাবার ঢেকে রাখা জরুরী।

*বাসি পচা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আমাশয় সাধারণত তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে কমে যায়। উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো প্রয়োগ করার মাধ্যমে আমাশয় রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব। যদি কারো কারো ক্ষেত্রে আমাশয়ের প্রকোপ তীব্রতর থাকেতাহলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করবেন।

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

আমাশয় থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?

উত্তর: আমাশয়থেকে মুক্তি পেতে বিশুদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত এবং বিভিন্ন তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত যা পেটকে ঠান্ডা রাখবে এবং পানির ঘাটতি পূরণ করবে এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে।

আমাশয় রোগ কি?

উত্তর: আমারশয় মূলত অন্ত্রের প্রদাহ দ্বারা চিহ্নিত গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ব্যাধিকে বোঝায়।

আমাশয় রোগের সম্ভাবনা কখন বেশি থাকে?

উত্তর: অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দূষিত খাবার এবং পানি থেকে এই রোগের সৃষ্টি। এছাড়াও গ্রীষ্মকালীন গরমে এই রোগের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

শেষ কথা-

আমাশয় রোগের লক্ষণ আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর বিস্তারিত বিষয়গুলো অবশ্যই আপনারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আমাশয় রোগ সম্পর্কে এবং অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাতে পারেন আমরা যথাসাধ্য উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আমাদের ওয়েবসাইটের নতুন নতুন আর্টিকেলগুলো পেতে অবশ্যই ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন এবং আপনাদের বন্ধুদের সাথে আমাদের ওয়েবসাইটটির কথা শেয়ার করবেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

পোস্ট ট্যাগ-

আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা,পুরাতন আমাশয় এর লক্ষণ,আমাশয় রোগের কারণ,আমাশয় রোগের ঔষধ কোনটি,আমাশয় রোগীর খাবার তালিকা,ট্যাবলেট আমাশয় রোগের ঔষধের নাম বাংলাদেশ,আমাশয় রোগের প্রতিকার,রক্ত আমাশয় রোগের লক্ষণ।

আপনার জন্য-

ক্যান্সার রোগের যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না

শ্বেতী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন

আয়রন যুক্ত খাবার

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে কি কি খাবার খাওয়া উচিত

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

বমি হলে কি খাওয়া উচিত

থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য উপযোগী খাবার

সিজারিয়ান মায়ের খাদ্য তালিকা

সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাবার গ্রহণ

কিডনি পরিষ্কার রাখার ৯টি খাবার সম্পর্কে জেনে নেই

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers

 

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

Lakhi Hasan

SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ টিম