পেটের গ্যাস দূর করতে কোন ব্যায়াম ভালো? – Healthy Bangla Tips

পেটের গ্যাস দূর করতে কোন ব্যায়াম ভালো – গ্যাস্ট্রিক রোগের রোগীদের সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না। গ্যাস্ট্রিক এমন একটি কমন রোগ যে রোগে ভোগে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বর্তমানের বেশিরভাগ মানুষের বাইরের খাবার অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রতি বেশি আগ্রহ থাকে। মানুষ স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দিয়ে মুখের স্বাদকে গুরুত্ব দেয় যার কারণে এই খাবারগুলো মানুষ অতিরিক্ত পরিমাণে খায় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় খুব সহজেই আক্রান্ত হয়।পেটের গ্যাস দূর করতে কোন ব্যায়াম ভালো

আর এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার বাড়ার সাথে সাথে এর সমাধানেও বিশেষজ্ঞরা আবিষ্কার করছে। আমার মতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার জন্য ওষুধের চেয়ে বেশি উপকারী হল টোটকা বা প্রাকৃতিক উপায়গুলো। গ্যাস্ট্রিকের জন্য প্রাকৃতিক খাবার গুলোর পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়াম করাও কার্যকারী একটি সমাধান।

তবে অনেকেই জানেনা কিভাবে বা কোন ব্যায়াম পেটের গ্যাস কমাতে বেশি উপযোগী। তাই আজকে আর্টিকেলে আলোচনা করব গ্যাস্ট্রিক কমাতে কোন ব্যায়াম করলে বেশি ভালো হয়। যারা  গ্যাস্ট্রিকের উপযোগী ব্যায়াম সম্পর্কে জানতে চান অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

গ্যাস্ট্রিক কমাতে ব্যায়াম

বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে গ্যাস্টিকের সমস্যার কথা উপলব্ধি করে কিছু ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে শারীরিক ব্যায়াম খুবই উপকারী। পেটে গ্যাস হলে কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করলে এই সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও আরাম পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শারীরিক ব্যায়াম পেটের গ্যাস দূর করতে খুব সহজে কাজ করে। পেট ফাঁপা বা পেট ব্যাথা থাকলে শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে।

গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো কি কি

গ্যাস্ট্রিক ের সাধারণ কিছু লক্ষণ রয়েছে যা আমাদের অনেকের অজানা। গ্যাস্ট্রিকের এই লক্ষণগুলো দেখে কখনোই রোগটিকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়।আর আপনি যদি গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো না জানেন তাহলে তা আপনার জন্য আরও বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারণ গ্যাস্ট্রিক রোগ অনেক জটিল রোগের সৃষ্টিকারী। গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো তাই জানা সকলের জন্য জরুরী। দেখে নিন গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ গুলো কি কি:

বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া

যদি আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে অহেতুক আপনার বমি বমি লাগবে। অনেক সময় বমি বমি ভাব থাকলেও বমি হবে না। আবার কিছু কিছু সময় বমি হবে অম্বল বেড়ে যাবে।

পেট ফুলে যাওয়া

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে ভুঁড়ি বেড়ে যায়। পেট  ফুলে যায়, পেট ফাঁপা লাগে। আপনার যদি এরকমটি হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন কারণ আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। খাবার না খেলেও এমতাবস্থায় মনে হয় পেট ভরা।

পেটে ব্যথা

কারো কারো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে পেটে ব্যথা হয়। গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা সাধারণত পেটের উপরের দিকে থাকে।কারো কারো ক্ষেত্রে চিন চিন করে ব্যথা করে আবার কারো কারো অনেক বেশি পরিমাণে ব্যথা হতে পারে। এমনটা অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ।

অভ্যন্তরীণ ব্লিডিং

রক্ত বমি রক্ত আমাশা কর্তো পায়খানা হল অভ্যন্তরীণ ব্লিডিং। আপনার যদি এই সমস্ত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বুঝতে হবে গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ। অবশ্যই লক্ষণগুলো দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।

অল্প খাবারে পেট ভরে যায়

গ্যাস্ট্রিক রোগীদের এমন হয় যে অনেক বেশি ক্ষুধা পেয়েছে খাবার খাওয়ার সময় সামান্য একটু খেলেই পেট ভরে গিয়েছে এমন মনে হয়। অল্প খাবার খেলেই মনে হয় আর খাওয়া যাবেনা। এটি গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ।

ডায়রিয়া

যদি কারো ঘন ঘন ডায়রিয়ার সমস্যা হয় তাহলে অনেকেই ভাবেন ফুড পয়েজিং জনিত কারণে এই সমস্যা হয়েছে।যদি সাতদিন অন্তর অন্তর ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে কোন ফুটফেজিং এর কারণে নয় গ্যাস্ট্রিকের জন্যই ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে। ডায়রিয়ার সঙ্গে পেট ব্যথা বমি থাকলে সেটা ফুড পয়োজন জনিত সমস্যা হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট কোনটা খাওয়া ভালো

এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে।যেমন:

১) ভিটামিন বি ১২ এর অভাব।

২) বদহজম।

৩) আলসার।

৪) পেট জ্বালাপোড়া করা।

৫) ক্ষুধামন্দা।

৬) রক্ত বমি বা অম্বল বেড়ে যাওয়া।

গ্যাস্ট্রিক দূর করতে কোন ব্যায়াম ভালো

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং পেটের গ্যাস কমাতে বিশেষজ্ঞরা কিছু ব্যায়ামের কথা বলে থাকেন যেগুলো করার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে ব্যায়াম একটি কার্যকরী উপায়। অনেকেই আছেন যারা পেট ফাঁপা গ্যাসের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এদের গ্যাস্ট্রিক নির্মল যুক্ত খাবার গ্রহণের পাশাপাশি ব্যায়াম করা ও জরুরী। গ্যাস্ট্রিক নির্মূলের ব্যায়াম গুলো হলো:

পেট ম্যাসাজ করুন

যদি আপনি পেট ফাঁপা ফাঁপা ভাব অনুভব করেন তাহলে পেট ম্যাসাজ করা উচিত। ধীরে ধীরে পে ট ম্যাসাজ করতে থাকুন। পেটের অপর উপরিভাগ ম্যাসাজ করুন।ডান হাতটিকে ডানদিকে বুকের খাঁচার হাড়ের নিচের দিকে ধরুন। এরপর গোল ভাবে মাসাজ করুন।এভাবে পেট ম্যাসাজ করতে পারলে গ্যাস আপনার অন্তরের নিচের দিকে চলে আসবে এবং পায়ুদ্বারের মাধ্যমে বেরিয়ে যাবে।

যোগ করুন

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে পেট ফাঁপা গ্যাসের সমস্যা অনায়াসে কমিয়ে দিতে পারে যুগের মতো এক্সারসাইজ। হালকা এক্সারসাইজ করার ফলে পেটের পেশির ব্যায়াম হয়। এছাড়াও অন্তর ঠিকমত কাজ করতে পারে যার ফলে পেট থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে গ্যাস। কিছুক্ষণ ধরে ব্যায়াম করার পরপরই আপনি ফলাফলটি বুঝতে পারবেন।

নিয়মিত হাটুন

গ্যাসের সমস্যা দূর করতে হাঁটা একটি উপকারী ব্যায়াম। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস থাকলে আপনার গ্যাসের সমস্যা কম থাকবে। নিয়মিত হাঁটা শুধু গ্যাসের সমস্যা নয় আরো অনেক সমস্যা দূর করতে কার্যকারী ব্যায়াম।

পেটের গ্যাস দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি

ওষুধের চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে যেকোনো অসুখ নির্মূল করা উত্তম। কারণ এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না।পেটের গ্যাস দূর করার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। যেমন:

হালকা গরম পানিতে গোসল

শীত গ্রীষ্ম যেকোনো সময় আপনি যদি হালকা গরম পানিতে গোসল করেন তাহলে আপনি খুব সহজেই গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে হালকা গরম পানিতে পিঠে ব্যথা কম হয় এমনকি গ্যাসের সমস্যাও দূর হয়। গরম পানিতে গোসল করলে পেটে গ্যাস জমে না। অন্ত্রের উপর চাপ কমে এমনকি অন্ত্র ভালো থাকে।

বেশি বেশি ফাইবার খাবার খান

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় যারা ভুগেন বেশির ভাগই তাদের পেট ফাঁপা হয়ে থাকে।তাই এই সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন অবশ্যই নিজস্ব খাবার তালিকায় বেশি বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার খাবেন। এই ফাইবার যুক্ত খাবার গুলো পেটের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে ২৫ গ্রাম এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৮ গ্রাম ফাইবার যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার

গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার একটি অন্যতম খাবার। এটি খেলে গ্যাসের সমস্যা সমাধান হয়। তাই খাওয়ার আগে পানি বা চায়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ এপেল সিডার ভিনেগার মিক্স করে নিয়মিত তিনবার পান করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

খাওয়ার পর পর ঘুমাবেন না

অনেকেই আছে খাবার গ্রহণ করার পরপরই শুয়ে পড়েন কিংবা ঘুমিয়ে পড়েন যা হজম শক্তি রাশ করে এবং পেটে গ্যাস তৈরি করে। তাই অবশ্যই খাবারের পরপরই শুয়ে পড়বেন না একটু হাটাহাটি করে ও তারপর ঘুমাবেন।

কোন খাবারে গ্যাস বাড়ে

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগে থাকলে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন কিছু কিছু খাবার এড়িয়ে চলার জন্য। পুষ্টিবিদদের পরামর্শের আলোকে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গ্যাসের সমস্যায় খেলে সমস্যা আরো বাড়তে পারে। এই খাবারগুলো হচ্ছে:

স্ন্যাক জাতীয় খাবার

পুষ্টিবিদদের মতে snake জাতীয় খাবারগুলো পেটের ফোলা ভাব ও পেটে গ্যাস বাড়িয়ে দেয়। তাই চিকিৎসকরা এসব খাবার গ্যাসের সমস্যা হলে এড়িয়ে চলতে বলেন।

সুগার ফ্রি খাবার

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ কেলি ম্যাক মুর্ডি বলেন সুগার ফ্রী চকলেট ক্যান্ডি চুইংগাম ইত্যাদি চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় চর্বি টল ম্যানিটোল আইসোমোল্ট  জাইলিটল ইত্যাদি। সুগার অ্যালকোহল ধরনের রাসায়নিক উপাদান এটি। তাই সুগার ফ্রী এইসব খাবারগুলো কখনোই গ্যাস্ট্রিক রোগীদের খাওয়া উচিত নয়।

ক্রুসি ফেরাস জাতের সবজি

ক্রুসিফেরাস জাতের সবজির মধ্য রয়েছে ব্রকলি, ব্রাসেল স্প্রাউট, কপি ইত্যাদি গ্যাস্ট্রিকের রোগীদের জন্য সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। এগুলো পেটে গ্যাস তৈরি করে পেট ফোলা ভাব তৈরি করে। এই সবজিগুলোর মধ্য রয়েছে ভোজ্য আঁশ তাই হজম হতে সময় লাগে বেশি। ফলে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসে বেশি।আর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ভোজ্য আশকে গাজানো শুরু করলে পেটে ড্যাশ জমে অস্বস্তি এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হয়।

গ্যাস্ট্রিক হলে কোন খাবার খাওয়া যাবেনা?

দগ্ধজাত খাবার

বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষ ল্যাকটোজ ভাঙার ক্ষমতা হারাতে থাকে। আর এর ফলে ডায়রিয়া পেটে গ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দেখা যায়। তাই দগ্ধজাত খাবারগুলো এই বয়সের জন্য একটু ঝুঁকিপূর্ণ। যদিও আপনি গ্যাসের সমস্যায় দই পনির খেলে কোন ক্ষতি হয় না।

কাঁচা ছোলা

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে অনেকেই বলেন কাঁচা ছোলা খাওয়ার জন্য। ছোলায় প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী হলেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে এটি বাড়িয়ে দিতে পারে। যাদের হজমের সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা খুব বেশি ছোলা খাবেন না।

মুখি কচু

গ্যাস্টিকের সমস্যায় মুখি কচুর তরকারি খুবই খারাপ। যারা গ্যাস্ট্রিকের রোগে ভুগে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এই সবজিটি না খাওয়াই ভালো।

এঁচোড়

এঁচোড় খেতে সুস্বাদু হলেও গ্যাস্টিকের রোগীদের জন্য এটি খাওয়া উচিত নয়। এটি গ্যাস্ট্রিকের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

মুলা

মূলার সবজিটি নিয়ে অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা মুলা খেলে গ্যাস্ট্রিক কমে।কিন্তু গবেষণায় প্রমাণিত যে এটি গ্যাসের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়, পেট ব্যথা, পেট ফোলা সহ একাধিক সমস্যা সৃষ্টি করে।

কোমল পানীয়

কোমল পানি ও পান করলে সরাসরি প্রভাব ফেলে অন্তরে। ভূত ভাট করে শব্দ হয়। এতে থাকা এসিড ও ফ্রুকটুজ গ্যাস্ট্রিক বাড়িয়ে দেয়।

বাদাম

বাদামে রয়েছে প্রোটিন চর্বি এবং আঁশ। শরীর জন্য এগুলো উপকারী হলেও পেটে গ্যাস সৃষ্টির জন্য এগুলো দায়ী। এগুলো হজমে সময় লাগে। বিশেষ করে কাজুবাদাম।

কোন খাবারগুলো গ্যাস কমায়

আমাদের ঘরোয়া ও এমন অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে পেটের গ্যাস দ্রুত কমবে। গ্যাসের সমস্যার সমাধানে এই খাবারগুলো খুবই কার্যকারী।গ্যাস্ট্রিক হলে যে খাবারগুলো খেলে এই সমস্যা প্রশমন করা যায় সেগুলো হচ্ছে:

জিরা

এক লিটার পানিতে এক চা চামচ জিরা ও এক চা চামচ কাঁচা জোয়ান ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এই পানিটি ছেকে পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নির্মূল করার জন্য জিরা খুবই উপকারী একটি ঘরোয়া উপাদান।

পুদিনা পাতা

পুদিনা পাতা এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে অনেক বেশি কার্যকরী। আপনি পুদিনা পাতার পানি খেয়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এক কাপ পানিতে পাঁচটি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এই ফুটন্ত পানি ঠান্ডা হলে পান করুন। এতে করে আপনার পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব দূর হবে।

লবঙ্গ

লবঙ্গ এমন একটি কার্যকারী উপাদান যা শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই গ্যাসের প্রকোপ কমতে শুরু করে। লবঙ্গর কার্যকারিতা একাধিক গবেষণায় ও প্রমাণিত হয়েছে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নির্মূল করতে দু-একটি লবঙ্গ আপনি কাঁচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন।

এলোভেরা

অ্যালোভেরা কে একাধিক রোগের ঔষধ বলা হয়। অ্যালোভেরার থাকে নানা বিনো খুনির যা একদিকে যেমন আপনার ত্বকের বাহ্যিক সৌন্দর্যকে বাড়াবে তেমনি আপনার হজম শক্তিকে উন্নত করবে।এলোভেরা উপাদান পেটে তৈরি হওয়া এসিডের কার্যকারিতাকে কমিয়ে দেয় যার ফলে এসিডিটি সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

দারুচিনি

আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে দারুচিনি বিশেষভাবে কার্যকারী একটি ঘরোয়া উপাদান। দারুচিনি এসিডিটি পেট ব্যথা এবং পেটের গ্যাসের সমস্যা নির্মূল করতে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করে। আপনি চাইলে কফি ওটমিল কিংবা গরম দুধে দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে খুব দ্রুত ফলাফল পাবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে গরম পানিতে দারুচিনি ফুটিয়ে ছেঁকে মধু দিয়ে চায়ের মত পান করতে পারেন।

আদা

আদা খুবই উপকারী একটি উপাদান। আদায় গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নির্মূল করে। আদায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান প্রদাহ যা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

বেকিং সোডা

বেকিং সোডায়থাকা এসিডিটিক উপাদান মানবদেহের পাকস্থলির অতিরিক্ত এসিডের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে, গ্যাস দূর করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করে।১/৪ চামচ বেকিং সোডা একগ্লাস পানিতে ভালো করে গুলিয়ে নিবেন। আপনি যখন গ্যাস্ট্রিক ের লক্ষণ অনুভব করবেন তখন এটি পান করে নিবেন। এতে দ্রুত ফলাফল পাবেন।

শসা

শসা পেটকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। শসা রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা আপনার পেটের গ্যাসের উদ্বেগ কমাবে।

পেঁপে

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পেঁপে একটি কার্যকারী ফল যা আপনার হজম শক্তিকে বাড়াতে সাহায্য করে। পেঁপে তে থাকা পাপিয়া নামের এনজাইম পেট ের হজম শক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাবার অভ্যাস করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম থাকে।

কলা কমলা

কলা ও কমলা এমন দুটি ফল যা পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সাহায্য করে। কলা ও কমলা খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কলার দ্রবীভূত উপাদান থেকে সক্ষম ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। সারাদিনের অন্তত দুটি কলা খাবেন। পেট পরিষ্কার রাখতে কলা খাওয়া জরুরি।

দই

দুই খাবার হজম করতে সাহায্য করে। নিয়মিত দই খেলে আপনার হজম শক্তি বাড়বে। তাই প্রতিদিন দুপুরের খাবারের পর অল্প টক দই খেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে চিনির বদলে আপনি বিট লবণ দিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

ডাবের পানি

ডাবের পানি খেলে পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর হয় এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে দূরে রাখে এবং হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গ্যাস্ট্রিক হলে সকালে কি খাবেন

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ে যারা ভুগছেন তাদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকে সকালে কি খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়বে না। চলুন দেখি নেই সকালে কি খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কম থাকবে-

রসুন

খালি পেটে রসুন খেলে গ্যাস্টিক সমস্যা কম থাকে। আপনি এক কোয়া রসুন নিয়ে দাগ দিয়ে চিবিয়ে গিলে ফেলুন এতে আপনার সারাদিন আপনি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। নিয়মিত খেলে চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর হবে।

পানি

পানির অপর নাম জীবন। যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে পানির কোনো বিকল্প নেই।সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি খাওয়ার অভ্যাস করা ভালো। নিয়মিত ঘুম থেকে উঠে পানি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম থাকে।

কলা

ভর পিঠে কলা খাওয়ার চেয়ে খালি পেটে কলা খাওয়া উত্তম। তাই প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কলা রাখবেন কেননা কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম যা প্রাকৃতিক এন্টাসিড হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়মিত কলা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও কম থাকে।

মৌরী

সারারাত মৌরি পানিতে ভিজিয়ে সকালে সেই পানি পান করুন দেখবেন আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যাবে এবং আপনার হজম শক্তি বেড়ে যাবে।

মেথি

আপনি কি জানেন মেথি অনেক রোগের মহা ওষুধ।সকালে ঘুম থেকে উঠে আজ তো মেথি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে ১০ মিনিট পর পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম থাকবে।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমানোর অনেক উপায় রয়েছে। তাই ওষুধ খাওয়ার চেয়ে উত্তম এইসব উপায়গুলো অনুসরণ করা। যাতে করে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে আপনি খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাবেন। গ্যাস্ট্রিক দূর করতে ব্যয়াম প্রাকৃতিক খাবার আপনার সুষ্ঠুজীবন পদ্ধতি এইগুলো খুবই কাজে দিবে।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

গ্যাস্ট্রিক হলে কোন ব্যায়াম ভালো?

আমাদের হজ ম শক্তি বাড়াতে এবং বিপাক উন্নত করতে আমাদের পছন্দকে শক্তিশালী করতে যোগব্য ায়াম জৈবভাবে নিরাময় করার সুযোগ দেয়। বিশেষ করে জোকসন অ্যাসিটি এবং গ্যাসের চিকিৎসায় সাহায্য করে।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ গুলো কি কি?

বাজারে এখন বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ পাওয়া যায়।বাজারের এইসব কোম্পানির ঔষধ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কোম্পানির ঔষধের নাম হলো:

*রেনিটেডিন।

*সার্জেল।

*রোলাক।

*সেকলো।

*রাবি প্লাজল

*ইসুমি প্লাজল

*প্যানটোনিক্স।

*নিউ ট্রাক।

*ওর ট্রাক।

*লোসেক্টিল।

*ম্যাক্সপ্রো।

*এক্সিজিয়াম।

*ওসেপ্লাজল।

*ইসুলুক।

*এন্টাসিড ইত্যাদি।

দ্রুত গ্যাসের সমস্যা কমানোর উপায় কি?

অল্প পরিমাণে বারে বারে খান

অল্প পরিমানে ঘন ঘন খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম থাকে। আপনি যদি অল্প পরিমাণে খেয়ে অনুভব করেন পেটে ক্ষুধা রয়েছে তাহলে আপনি বারেবারে অল্প অল্প করে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম থাকবে।

মাথা উঁচু রাখুন

যদি আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় বা এসিড রিফ্লাক্সে ভোগে থাকেন তাহলে ঘুমানোর সময় আপনার খাদ্যনালীতে এসিডকে প্রবাহিত হতে যাতে বাধা প্রদান করতে উঁচু বালিশে মাথা দিয়ে মাথা উঁচু রাখুন।

স্ট্রেস কমান

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কে বাড়িয়ে তোলে এই স্ট্রেস বা চিন্তা। আপনার স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত শরীর চর্চা করুন গভীর শ্বাসের ব্যায়ামের মত শিথিল করন কৌশল গুলির মাধ্যমে স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন।

পেট ম্যাসাজ করুন

যদি আপনি পেট ফাঁপা ফাঁপা ভাব অনুভব করেন তাহলে পেট ম্যাসাজ করা উচিত। ধীরে ধীরে পে ট ম্যাসাজ করতে থাকুন। পেটের অপর উপরিভাগ ম্যাসাজ করুন।ডান হাতটিকে ডানদিকে বুকের খাঁচার হাড়ের নিচের দিকে ধরুন। এরপর গোল ভাবে মাসাজ করুন।এভাবে পেট ম্যাসাজ করতে পারলে গ্যাস আপনার অন্তরের নিচের দিকে চলে আসবে এবং পায়ুদ্বারের মাধ্যমে বেরিয়ে যাবে।

যোগ করুন

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে পেট ফাঁপা গ্যাসের সমস্যা অনায়াসে কমিয়ে দিতে পারে যুগের মতো এক্সারসাইজ। হালকা এক্সারসাইজ করার ফলে পেটের পেশির ব্যায়াম হয়। এছাড়াও অন্তর ঠিকমত কাজ করতে পারে যার ফলে পেট থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে গ্যাস। কিছুক্ষণ ধরে ব্যায়াম করার পরপরই আপনি ফলাফলটি বুঝতে পারবেন।

নিয়মিত হাটুন

গ্যাসের সমস্যা দূর করতে হাঁটা একটি উপকারী ব্যায়াম। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস থাকলে আপনার গ্যাসের সমস্যা কম থাকবে। নিয়মিত হাঁটা শুধু গ্যাসের সমস্যা নয় আরো অনেক সমস্যা দূর করতে কার্যকারী ব্যায়াম।

আমাদের শেষ কথা

আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে গ্যাস্ট্রিক হলে কোন ব্যায়াম করা ভালো এই সম্পর্কে। ইতোমধ্যেই আপনারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এ বিষয়ে কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের যদি আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলো ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন আমাদের ওয়েবসাইটের কথা। আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করবেন। আজকের মতো এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

পোস্ট ট্যাগ-

গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার,গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম,গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার উপায়,গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ,গ্যাস্ট্রিক দূর করার ভেষজ উপায়,গ্যাস্ট্রিক দূর করার সিরাপ,গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না,গ্যাসের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়।

আপনার জন্য আরো 

আপনার জন্য-

গ্যাস্ট্রিক দূর করতে মেথি খাওয়ার নিয়ম

অ্যাজমা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা 

থাইরয়েড রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকারী চিকিৎসা

যক্ষা বা টিবি রোগের লক্ষণ

ক্যান্সার রোগের যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না

শ্বেতী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers

 

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।