ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার ও কি কি-বাংলাদেশের শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড

বর্তমান সময়ে মানুষের টাকা পয়সার লেনদেনের অনেক ধরনের মাধ্যম বের হয়েছে। এখন আর নগদ টাকা সাথে করে ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে কোথাও যাতায়াত করতে হয় না। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান সহজ হয়ে গেছে। আর অর্থের লেনদেনের পথকেও সহজ করে তুলেছে।একটি ক্রেডিট কার্ড কিংবা ডেবিট কার্ড দিয়ে মানুষ দেশ-বিদেশে ঘুরে কেনাকাটা করতে পারে

এছাড়াও আরো অন্যান্য আর্থিক কাজকর্ম সম্পাদন করতে পারে। ক্রেডিট কার্ড এমন একটি কার্ড যা দ্বারা একজন ব্যক্তি ব্যাংক থেকে তার যোগ্যতা অনুসারে টাকা ঋণ নিয়ে তা খরচ করে এবং পরবর্তীতে তা পরিশোধ করে দেয়।

ধরুন আপনি আপনার শখের একটা জিনিস কিনতে চাচ্ছেন যা কেনার জন্য আপনার কাছে বর্তমানে সমপরিমাণ টাকা নেই কিন্তু আপনার কাছে ক্রেডিট কার্ড রয়েছে যাতে ব্যাংক থেকে প্রদানকৃত ক্রেডিট লিমিট থেকে আপনি তার ক্রয় করতে পারেন। এবং সেই ব্যাংকের ক্রেডিট লিমিট আপনি যথাসময়ে আবার পরিশোধ করে দিবেন। এতে করে আপনি আপনার শখের জিনিসটা সময়মতো কিনতে পারছেন। অর্থাৎ দেখা গেল এই ক্রেডিট কার্ড আপনার প্রয়োজন পূরণ করতে আপনাকে সাহায্য করছে।

ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার ও কি কি

ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে এখনো বাংলাদেশের সকল মানুষ অবগত নয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সেবা সকলে ভোগ করলেও এই সম্পর্কে অজ্ঞতা রয়েছে অনেকেরই। ব্যাংকিং লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড একটি পরিচিত কার্ড যার সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের জন্য আমি আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা করব ক্রেডিট কার্ড কি কত প্রকার এবং কি কি এছাড়াও ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানাবো আপনাদেরকে আজকের আর্টিকেলে। কাজেই আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাকে মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত করতে হবে।

ক্রেডিট কার্ড কি?

ক্রেডিট কার্ড বলতে এমন একটি প্লাস্টিকের কার্ড কে বোঝায় যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে গ্রাহককে দেওয়া হয়। এই কার্ডটি গ্রাহক কেনাকাটা বা অন্যান্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারে। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে মূলত গ্রাহক ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে তা খরচ করে এবং পরবর্তীতে তা ব্যাংকে পরিশোধ করতে হয় যথা সময়ে।

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কি যোগ্যতা প্রয়োজন হয়

যদি কোন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী ব্যাংকের নির্ধারিত সময়ে ক্রেডিট বিল পরিশোধ করতে না পারে তাহলে তাকে সুদসহ বিল পরিশোধ করতে হয়। তবে ক্রেডিট কার্ড যে কেউ চাইলেই পাবে না। ক্রেডিট কার্ড পেতে গেলে ব্যাংকে তার যোগ্যতা দেখিয়ে ব্যাংক যদি তাকে এলিজাবেল মনে করে তাহলেই সে ক্রেডিট কার্ড পাবে।

ক্রেডিট কার্ড দিয়ে টাকা তুলতে হলে ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংকের যেকোনো ব্রাঞ্চের এটিএম বুথ থেকে। একজন ব্যক্তির ক্রেডিট কার্ডে তার নাম, ১৬ সংখ্যার ক্রেডিট নম্বর, মেয়াদ শেষের তারিখ, সিসিভি ব্যবহারকারীর নাম দেওয়া থাকে।

ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার কি কি

ক্রেডিট কার্ড অনেক প্রকারের রয়েছে যা আপনার ইনকামিং সোর্স বা আপনার প্রয়োজনের ওপর ডিপেন্ড করে। আপনি যখন ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড বানাতে বা ক্রেডিট করার জন্য আবেদন করতে যাবেন তখন আপনাকে ক্রেডিট কার্ডের প্রকারভেদ গুলো সম্পর্কে জানানো হবে।সেখান থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন। চলুন দেখে নেই ক্রেডিট কার্ড এর বিভিন্ন প্রকারভেদ:

Low Income Earner Credit Card

যেসব চাকরিজীবীদের মাসিক ইনকাম ২৫ হাজার টাকা বা তার নিচে তাহলে তাদের জন্য লো ইনকাম আর্নার ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এই ক্রেডিট কার্ড এর বার্ষিক চার্জ অনেক কম দিয়ে ব্যবহার করা যায় যার কারণে কম উপার্জন কারীদের জন্য এটি উত্তম।

আপনি যদি low income আর্নার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক প্রদত্ত কিছু শর্ত মেনে এটির জন্য আবেদন করতে হবে।

শপিং ক্রেডিট কার্ড

অনলাইনে যারা সচরাচর কেনাকাটা করেন কিংবা কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন তারা এই শপিং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। শপিং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি বিশ্বের  যে কোন দেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে শপিং করতে পারবেন।

শপিং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে যদি আপনি অনলাইনে কেনাকাটা করেন তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের রিওয়ার্ড পয়েন্ট পাবেন যে রিওয়ার্ডগুলোর মাধ্যমে আপনি পুনরায় অনলাইনে শপিং করতে পারবেন।

ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড

ভ্রমণ পিয়াসী মানুষদের জন্য ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড উপযুক্ত। যারা ঘন ঘন দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করেন তারা ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। এই ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনার এয়ার লাইন্সের ক্ষেত্রে যে প্রেমেন্ট করতে হয় তা আপনি পরিশোধ করতে পারবেন।

এছাড়াও দেশ-বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বৈদেশিক লেনদেন করার সময়ও আপনি ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড

যদি আপনি দেশের বাইরে নিয়মিত ভ্রমণ করেন তাহলে আপনি যেকোনো দেশের এয়ারলাইন্সের বুকিং দেওয়ার জন্য নিজের ঘরে বসে আপনার হাতে থাকা এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড টি ব্যবহার করতে পারবেন। এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ডটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনি বিশেষ সুবিধা ভোগ করতে পারেন। এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ফলে আপনি যে রিওয়ার্ডগুলো পাবেন তা আপনার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই সাহায্যকারী হবে।

ক্যাশ ব্যাক ক্রেডিট কার্ড

ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড ের মাধ্যমে আপনাকে বিশেষ অফার প্রদান করা হবে এই অফারগুলো আপনার ব্যয়ের উপর নির্ভর করবে। অর্থাৎ আপনি ক্রেডিট কার্ডটি ব্যবহার করে কি পরিমাণে টাকা খরচ করছেন তার ওপর নির্ভর করবে।

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ডের এই অফার গুলো অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের টাকা লেনদেন করেন তাহলে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যাশব্যাক দেওয়া হবে। আর এটাই হলো ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড।

রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড

আপনি যদি রিভার্স ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ব্যয়ের উপর ভিত্তি করে আপনাকে বিশেষ ধরনের রিওয়ার্ড প্রদান করা হবে। আর এই রিওয়ার্ডগুলো আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কাজের জন্য টাকায় কনভার্ট করে নিতে পারবেন এবং সেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড

যারা এন্টারটেইনমেন্ট পেতে বেশি পছন্দ করেন। যেমন মুভি দেখা যাদের নেশা অথবা বিভিন্ন কনসার্ট অনুষ্ঠানে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তাদের জন্য এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড উত্তম ব্যবহারযোগ্য।

এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিংবা মুভির টিকেট কাটার জন্য পেমেন্ট করতে পারেন। নিয়মিত এই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে আপনি রিওয়ার্ড পয়েন্ট পাবেন।

ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড

নিজের গাড়ি যারা নিয়মিত যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করেন তাদের অবশ্যই ফুয়েল এর প্রয়োজন হয়। আর আপনি যদি ফুয়েল ব্যবহার করার জন্য বিশেষ ধরনের সুবিধা ভোগ করতে চান তাহলে অবশ্যই ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার গাড়ির ফুয়েল কেনার জন্য এই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনি বিশেষ অফারে ক্যাশ ব্যাক পাবেন এবং সেই সাথে রিওয়ার্ড পয়েন্ট পাবেন।

সিক্যুরেড ক্রেডিট কার্ড

এই ক্রেডিট কার্ডটি ব্যবহার করার জন্য আপনার ব্যাংক একাউন্টের নগদ অর্থ ডিপোজিট করে রাখতে হবে।অনেক সময় দেখা যায় আপনার বিভিন্ন ত্রুটির কারণে আপনার ক্রেডিট স্কোর খারাপ হয়ে যাবে তখন আপনার এই ধরনের ক্রেডিট কার্ড আপনার স্কুল বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।

বাংলাদেশের শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড

বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা রয়েছে। আর তাদের ক্রেডিট কার্ডগুলোর সুদের পরিমাণের ও কিছুটা কম বেশি হয়। বাংলাদেশের কয়েকটি শীর্ষ ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

Citibank Amex credit card

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড গুলো সব সময় গ্রাহকদের নতুন নতুন সুবিধা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশে খুব কম ব্যাংক রয়েছে যারা গ্রাহকদেরকে এ‌মেএক্স সুবিধা প্রদান করে। এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে আপনি পাবেন APR rate 27.00%, ৪৫ দিনের একটি গ্রেস পিরিয়ড।এছাড়াও এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে থাকছে ফ্রি সাবলিমেন্টারি কার্ড সুবিধা এবং রিনিউয়াল ও একদম ফ্রি।

EBL ক্রেডিট কার্ড

যারা দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন এবং যারা নিয়মিত দেশের বাইরে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য ইয়েস্টার্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডটি উত্তম।EBL SKYLOUNGE ব্যবহার করে আপনি বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করতে পারেন। কিন্তু এই কার্ড ব্যবহারের জন্য আপনাকে একজন প্লাটিনাম কার্ড হোল্ডার হতে হবে।এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে আপনি পাবেন APR rate 27.00%, ৪৫ দিনের একটি গ্রেস পিরিয়ড।এছাড়াও এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে থাকছে ফ্রি সাবলিমেন্টারি কার্ড সুবিধা এবং রিনিউয়াল ও একদম ফ্রি।

DBBL credit card

ডাচ বাংলা ব্যাংক তার গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ব্যাংকিং সেবা প্রদান করার চেষ্টা করে থাকে। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংকিং এ পুরোপুরি অটোমেটেড সিস্টেম চালু করেছে এই ডাচ বাংলা ব্যাংকিং। এছাড়াও সারা দেশের দুর্গম এরিয়াগুলোতেও ডাচ বাংলার সেবা পাওয়া যায়। ডাচ বাংলা ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রেও অনেক অফার দিয়ে থাকে।

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড এর মধ্যে পার্থক্য

এখানে আপনি পাবেন এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে আপনি পাবেন APR rate 15.00%, ৫০ দিনের একটি গ্রেস পিরিয়ড।এছাড়াও এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে থাকছে ফ্রি সাবলিমেন্টারি কার্ড সুবিধা এবং রিনিউয়াল ও একদম ফ্রি।

MTB credit card

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক বর্তমানে বাংলাদেশে একটি সফল অবস্থানে রয়েছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদেরকে এই ব্যাংকের মাধ্যমেও বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো

কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো সেটা সম্পূর্ণই আপনার যাচাই করার ওপর নির্ভরশীল। সকলের ক্রেডিট কার্ড লিমিট অথবা ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন এক রকম নয় এই কারণেযার যার নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী সেই যাচাই করতে পারবে কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড তার জন্য ভালো।বাংলাদেশের কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো তা যাচাই করতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য করুন।

ব্যাংকের আস্থাশীলতা

বাংলাদেশ এমন অনেক ব্যাংক রয়েছে যারা এখনো পরিপূর্ণভাবে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করতে সম্ভব হয়নি।তাদের আস্থাশীলতা কম থাকায় তারা ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন অফার দিয়ে ক্রেডিট কার্ড প্রদান করার  প্রতিশ্রুতি দিতে পারে।কিন্তু এইসব ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করার আগে আপনাকে অবশ্যই চিন্তা ভাবনা করতে হবে।

যেহেতু এসব ব্যাংকের গ্রাহকের আস্থাশীলতা কম থাকে তাই এইসব ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড না নেওয়াই ভালো। এই সমস্ত ব্যাংকের হিডেন চার্জ বা অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

ব্যাংকিং সেবা এবং ব্যাংকের শাখা

আপনি যে ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড নিবেন সেই ব্যাংকের শাখা এবং সেই ব্যাংকের গ্রাহক সেবার মান কেমন তা জেনে নিয়ে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশে এমন অনেক ব্যাংক রয়েছে যাদের শাখা সারাদেশেই আছে এবং আপনি আপনার বাসস্থান অথবা আপনার পদচারণা যেখানে বেশি তার কাছেই সেই ব্যাংকের শাখা পেয়ে যাবেন তেমন ব্যাংক থেকেই আপনার ক্রেডিট কার্ড নেওয়া উচিত হবে।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 

কারণ টাকা জমা কিংবা বিল পেমেন্টের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন করতে পারে। আর যদি ব্যাংকের গ্রাহক সেবার মান ভালো হয় তাহলে আপনি সেই ব্যাংক থেকেই ক্রেডিট কার্ড নিতে পারেন এটি আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুবিধা প্রদান করবে।

সুদের পরিমাণ

ক্রেডিট কার্ডব্যবহারের সাথে যদি সুদের একটা অতপ্রতো সম্পর্ক রয়েছে তাই ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সুদের হার দেখে ক্রেডিট কার্ড নেওয়া উচিত।ক্রেডিট কার্ডে সুদের হার সব ব্যাংকে একরকম নয় ক্রেডিট লিমিট এর উপর নির্ভর করে সুদের হার নির্বাচন করা হয়। তাই যে ব্যাংকে ক্রেডিট লিমিটের উপর সব থেকে কম সুদ এবং চার্জ নেওয়া হয় সেরকম ব্যাংক থেকে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডটি আবেদন করতে পারেন।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা

বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বাড়ছে। যারা অনেক বেশি কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন তাদের ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডটি বেশি ব্যবহৃত হয়। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে। যেমন:

দ্রুত লেনদেন

আপনার ক্রেডিট কার্ডটি আপনাকে দ্রুত লেনদেনের সুবিধা প্রদান করে। আপনি কোন একটি ব্যয়বহুল জিনিস কিনতে চাইলে একসঙ্গে অনেক টাকা জোগাড় করতে পারছেন না তখন আপনার ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুতই আপনার পণ্যটি কিনতে পারছেন।

রিওয়ার্ড পয়েন্ট

মূল্য ফেরত আকাশপথে বিনামূল্যে ভ্রমন বা বাড়তি পুরস্কার পয়েন্ট গুলো ক্রেডিট কার্ডের অন্যতম কিছু আকর্ষণীয় বিষয় যা কেবলমাত্র আপনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলেই পেতে পারেন।

ক্রেডিট স্কোর বৃদ্ধি

নিয়মিত ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি আপনার ক্রেডিট স্কোর বাড়াতে পারেন। আপনি যদি নিয়মিত ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করেন তাহলে আপনার ক্রেডিট স্কোর দ্রুত বাড়বে।

নিরাপত্তার সুবিধা

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলে প্রতারণা চুরি কিংবা একই খরচ একাধিকবার করার প্রবণতা থাকে না।যদি আপনার ক্রেডিট কার্ডটি চুরি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ওই কার্ড দিয়ে কোন কেনাকাটা করলে সেটা আপনার দায় নয়। ধরুন যদি আপনার ক্রেডিট কার্ড চুরি হয়ে যায় এবং সেখান থেকে কেউ টাকা তুলে নেয়।

আর এটি যদি আপনি অভিযোগ করেন তাহলে কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক পুরো অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। তবে অবশ্যই আপনাকে যথাযথ প্রমাণ দিয়ে দ্রুত অর্থ ফেরত নিতে হবে। আর এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আপনার পিন নাম্বারটি মনে রাখতে হবে।

ঋণের সুবিধা

অনেক ধরনের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে যারা শূন্য শতাংশ সুদের ঋণ দেয়। এসব ক্ষেত্রে মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বিল পরিশোধ করতে হয় যা সুবিধা জনক। আবার কোন কোন কার্ডে ঋণের সুদের হার অনেক থাকে।

ক্রেডিট কার্ড অফার

ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়। যেমন ক্যাশব্যাক, স্পেশাল ডিসকাউন্ট আবার দেশের বাইরে গেলে হোটেলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার অনেক সময় মূল্য ছাড় দেওয়া হয়। প্লেনের টিকিট কাটতে অনেক সময় বিশেষ মূল্য ছাড় পাওয়া যায়।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা অনেক থাকলেও এর কিছু অসুবিধা রয়েছে।আর এই অসুবিধা গুলো জেনেই আপনাকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে হবে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা গুলো হলো:

খরচ বেশি

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করেন সেক্ষেত্রে আপনাকে খরচ বেশি বুঝেই করতে হবে।দেখা গেল আপনি কেনাকাটা করার সময় অনেক বেশি কেনাকাটা করে ফেলেছেন কিন্তু আপনার এটা মাথায় রাখতে হবে যে এই বেশি কেনাকাটার জন্য আপনি যেই এমাউন্টটি খরচ করেছেন সেটি অনুযায়ী আপনাকে মাসিক বিল পরিশোধ করতে হবে।

বার্ষিক ফি এবং অন্যান্য খরচ

বেশিরভাগ ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রেই বছরে একটা ফ্রি দিতে হয় এছাড়াও কিছু চাঁদা বিভিন্নভাবে প্রযোজ্য হয় যেমন দেরিতে পরিশোধের ফি, ব্যালেন্স ট্রান্সফার ফি, ওভার ড্রাফট ফি ইত্যাদি।

ক্রেডিট স্কোর সংক্রান্ত জটিলতা

ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করে মাসিক কিস্তি পরিশোধের ব্যর্থ হলে আপনার ক্রেডিট স্কোরের উপর সেটা নীতি বাচক প্রভাব ফেলবে।

উচ্চমূল্যের লেনদেন ফি

ডেবিট কার্ডের যেমন কেনাকাটায় তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ফি প্রদান করতে হয় না কিন্তু ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রে ভিন্ন। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে বেশ উচ্চমূল্যের ফি প্রদান করতে হয়।

ঋণের ফাঁদ তৈরি

যারা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তারা জানেন ক্রেডিট কার্ড এর ব্যবহার সবসময় একটু ঋণ নেওয়ার মাধ্যম। হয়তো আপনি এখন যে টাকাটা খরচ করছেন সেটা আপনাকে পরেই ফেরত দিতে হবে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ডের জন্য এলিজিবল হয়ে থাকেন এবং ক্রেডিট কার্ডটি যদি আপনি পেয়ে যান তাহলে সেটা আপনি যেকোনো জায়গায় পেমেন্ট করার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন অবশ্যই যেখানে যেখানে পেমেন্ট মেথড হিসেবে ক্রেডিট কার্ড এক্সেপ্ট করা হয়। আপনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সারা মাসে যত amount প্রেমেন্ট করবেন মাস শেষে আপনার সেই সব অ্যামাউন্ট ব্যাংক থেকে বিল আকারে ইস্যু করা হবে এবং অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও আপনাকে সেই বিলটি পরিশোধ করতে হবে।

সাধারণত ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্য এই বিল পরিশোধ করার সময় দেওয়া হয়। তবে ব্যাংকের পলিসি অনুযায়ী তা ভিন্ন তরু হতে পারে। আপনি যদি এই বিলটি পরিশোধ না করতে পারেন তাহলে আপনাকে পরবর্তী ক্রেডিট লিমিট দেওয়া হবে না।

ক্রেডিট কার্ড সাধারণত অনলাইন অফলাইন দুটি প্লাটফর্মে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।আবার যদি আপনি চান আপনার ক্রেডিট লিমিটটি বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে আপনি ব্যবহার করবেন অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন করবেন তাহলে অবশ্যই একটি ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট আপনার থাকতে হবে। পাসপোর্ট না থাকলে আপনার যত লক্ষ টাকায় ক্রেডিট লিমিট থাকুক না কেন সেটা আপনি বাংলাদেশের বাইরে ব্যবহার করতে পারবেন না।

পাসপোর্ট দ্বারা আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন এর জন্য এনএবল করবেন এবং আপনার ক্রেডিট লিমিটেড নির্দিষ্ট একটি অংশ বৈদেশিক মুদ্রায় কনভার্ট করে তা দেশের বাইরে বৈদেশিক কারেন্সিতে পেমেন্ট করতে পারবেন।

এছাড়াও অনলাইনেও আপনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন গুলো করতে পারবেন। যেমন গুগল প্লে স্টোর থেকে কোন অ্যাপ গেমস কিনতে চাইলে কিংবা ফরেন ই কমার্স সাইটগুলো থেকে কোন প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে অথবা ফেসবুক বুস্ট বা গুগল এডস এ পেমেন্ট করতে চাইলে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তা করতে পারবেন।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রকারের ক্রেডিট কার্ড কি কি?

ক্রেডিট কার্ড কত প্রকারের তার নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না। যার যার কাজের ধরন এবং ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ড আবেদন করে থাকে।তবে চার প্রকারের ক্রেডিট কার্ডের মধ্য রয়েছে

*ভ্রমণ ক্রেডিট কার্ড

* ব্যবসায়িক ক্রিডেট কার্ড *পুরস্কার ক্রেডিট কার্ড এবং *শপিং ক্রেডিট কার্ড রয়েছে।

ক্রেডিট কার্ড এর কাজ কি?

ক্রেডিট কার্ড হল মানুষের ব্যবহৃত এমন একটি প্লাস্টিক কার্ড যাতে ব্যাংক প্রদত্ত ক্রেডিট লিমিট থাকে সেখান থেকে ব্যবহারকারী তার বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা খরচ করতে পারে। এই কার্ডের বাহ ক পণ্য ও সেবা কেরার ক্ষেত্রে এই কার্ড ব্যবহার করে তার মূল্য পরিশোধ করতে পারে।

ক্রেডিট কার্ড কে আবিষ্কার করেন?

ক্রেডিট কার্ড আবিষ্কার করেন ডিনারস ক্লাব ১৯৫০ সালে। যদিও ক্রেডিট কার্ড এর ধারণাটি এসেছে ফ্রাঙ্ক ম্যাকনামারার থেকে।

আমাদের শেষ কথা-

আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার ও কি কি এবং বাংলাদেশের শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে। ইতোমধ্যেই আপনারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এ বিষয়ে কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

আপনাদের যদি আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলো ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন আমাদের ওয়েবসাইটের কথা। আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করবেন। আজকের মতো এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

পোস্ট ট্যাগ-

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা,ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম,ক্রেডিট কার্ড খরচ,ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার,কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো,ক্রেডিট কার্ড কি,ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড কি,ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাবো।

আপনার জন্য আরো 

আপনার জন্য-

ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম ২০২৪

বাংলাদেশে কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে ভালো?

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়মাবলী

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers

 

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।