ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড এর মধ্যে পার্থক্য

বর্তমানে ব্যাংক একাউন্ট নেই এমন মানুষ খুব কমই আছে। আর যাদের কোন ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে তারা ডেবিট কার্ড কিংবা ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে অবশ্যই শুনেছেন। কিন্তু ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড কি এই সম্পর্কে কি আপনি ভালোভাবে জানেন?না বন্ধুরা অনেকেই রয়েছে যারা ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ডের নাম শুনলেও আসলে ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড কি এই সম্পর্কে জানেনা। ক্রেডিট কার্ড কিংবা ডেবিট কার্ডের মধ্যে মিল আছে নাকি পার্থক্য আছে সেটাও অনেকে জানে না।ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড এর মধ্যে পার্থক্য

এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার প্রসেসটা আপনি না জানলেও অবশ্যই শুনেছেন এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যায় এবং তা কিসের মাধ্যমে তোলা যায় সেটা কি আপনি জানেন। এই ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেই কিংবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা হয়। তবে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আপনাদেরকে আগে পরিচয় করিয়ে দেই ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে। আজকের আর্টিকেলটিতে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকুন জানতে পারবেন ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য।

ডেবিট কার্ড কি?

ডেবিট কার্ড বলতে বোঝানো হয় এমন একটি কার্ডকে যা আপনার ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে একজন ব্যবহারকারী তার সেভিংস একাউন্ট এর মধ্য যে টাকা রাখা থাকে সেখান থেকেইটাকা উত্তোলন করতে পারে এবং তার সেই সেভিংস একাউন্টে থাকা টাকা থেকেই তার ডেবিট কার্ডের চার্জ কেটে নেওয়া হয়। আর তাই যদি কোন ব্যবহারকারীর ডেবিট কার্ডের সাথে সম্পৃক্ত সেভিংস একাউন্টে টাকা জমা না থাকে তাহলে তার সেই কার্ড ব্যবহৃত হবে না।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়মাবলী

মূল কথা হচ্ছে যদি আপনি আপনার ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকতে হবে।

ডেবিট কার্ড কত প্রকার?

ডেভিড কার্ড হলো এমন একটিটাকা উত্তোলন করার জন্য ব্যবহৃত কার্ড যার সাথে ব্যাংকের লিঙ্ক করা থাকে। গ্রাহকের বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে না গিয়ে এটিএম বুথের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড দিয়ে সে টাকা উত্তোলন করতে পারে। ডেবিট কার্ড প্রধানত ৫ প্রকার। যথা-

১) visa debit card

২) MasterCard debit card

৩) platinum debit card

৪) Maestro debit card

৫) contactless debit card

ডেবিট কার্ডের সুবিধা

ডিবিট কার্ড ব্যবহারের অনেক রকম সুবিধা রয়েছে। ডেভিড কার্ড মানুষের সময় এবং খরচও কমিয়ে দেয়। সরাসরি ব্যাংকে না গিয়ে নিকটের কোন এটিএম বুথ থেকে সহজেই ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে ব্যবহার করি তার জরুরি কাজ সম্পাদন করতে পারে। এছাড়াও ডেবিট কার্ডের আরো বিভিন্ন রকমের সুবিধা রয়েছে। যেমন:

*ব্যাংকে গিয়ে অনেক সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা উত্তোলন করার ঝামেলা ছাড়াই আপনি খুব সহজে এটিএম বুথে গিয়ে এটিএম মেশিনের মাধ্যমে টাকা তুলতে কিংবা জমা করতে পারবেন আপনার ডেবিট কার্ড দিয়ে।

*নগদ টাকা সাথে করে চলাফেরা করাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।যার কারণে আপনি আপনার ডেবিট কার্ড সঙ্গে করে নিয়ে যেকোনো জায়গায় গিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে আপনার কাজ করতে পারেন।

*ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে টাকা পেমেন্ট করে আপনি কেনাকাটা করতে পারবেন বর্তমানে এই সুবিধা সবাই ভোগ করছে।

*ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা তুললে আপনার মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে আপনি কখন কত টাকা উত্তোলন করেছেন।

ডেবিট কার্ড ব্যবহার করার নিয়ম

আপনার ডেবিট কার্ড কি ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই আপনার ব্যাংক সেভিংস একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকতে হবে। ডেবিট কার্ডটি আপনি কিভাবে ব্যবহার করতে পারেন তা জেনে নিন:

*এটিএম কার্ড এর মতোই ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে আপনাকে একটি চার ডিজিটের সিক্রেট পিন কোড দেওয়া হবে।

*আপনি যদি কোথাও শপিং করতে চান এবং সেখানে ক্যাশ টাকা পেমেন্ট না করে আপনি ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চান তাহলে সেই দোকানের সুইফট মেশিনের মধ্য আপনার ডেবিট কার্ড ঘষিয়ে চার অঙ্কের সিক্রেট পিনকোড দিয়ে দিলেই আপনার ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট থেকে পেমেন্ট কেটে নেবে।

*দূরে কোথাও যদি আপনার কোন টাকার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে আপনি ক্যাশ টাকা সাথে করে না নিয়ে আপনার ডেবিট কার্ডটি সাথে করে নিয়ে গেলে সেখানকার এটিএম মেশিন থেকেও আপনি টাকা তুলতে পারবেন।

*এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ডেবিট কার্ড এবং সাথে থাকা চার অঙ্কের সিক্রেট কোড ব্যবহার করতে হবে।

ক্রেডিট কার্ড কি?

ক্রেডিট কার্ড মূলত একটি কার্ড যা এটি ব্যবহারকারীর নাম, তার ক্রেডিট কার্ড নাম্বার এবং ক্রেডিট কার্ডের মেয়াদ, কবে শেষ হবে তার তারিখ সিভিভি এবং ক্রেডিট কার্ড ধারের স্বাক্ষর, কাস্টমার কেয়ার সেন্টার এর বিবরণ ইত্যাদি তথ্য সংবলিত থাকে। ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে এমন একটি মেথড যেটির সাহায্যে ব্যবহারকারী ব্যাংক থেকে টাকা ধার করে খরচ করেন। আর এই ধার করা টাকার যে পরিমাণ তাকে বলা হয় ক্রেডিট লিমিট। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি তার এক মাসের ইনকামের ওপর নির্ভর করে ব্যাংক থেকে তাকে এই লিমিটটি দেওয়া হয়।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 

ধরুন একজন ব্যক্তির মাসিক ইনকাম যদি 50000 টাকা হয় তাহলে সে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট লিমিট পেতে পারে।ক্রেডিট লিমিট সবার ক্ষেত্রে এক নয় কারো ক্ষেত্রে বেশি আবার কারো ক্ষেত্রে কম হয়। যদি আপনি ক্রেডিট কার্ডের জন্য এলিজিবল হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভালো এমাউন্ট ইনকাম করতে হবে। আপনি যদি ভাল কোন ইনকামের চাকরি না করেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে ক্রেডিট কার্ডের জন্য এলিজিবল মনে করা হবে না। এর মূল কারণ হলো ক্রেডিট কার্ড আপনার প্রতি মাসে স্যালারির ওপর ভিত্তি করেই লিমিট প্রদান করবে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ডের জন্য এলিজিবল হয়ে থাকেন এবং ক্রেডিট কার্ডটি যদি আপনি পেয়ে যান তাহলে সেটা আপনি যেকোনো জায়গায় পেমেন্ট করার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন অবশ্যই যেখানে যেখানে পেমেন্ট মেথড হিসেবে ক্রেডিট কার্ড এক্সেপ্ট করা হয়। আপনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সারা মাসে যত amount প্রেমেন্ট করবেন মাস শেষে আপনার সেই সব অ্যামাউন্ট ব্যাংক থেকে বিল আকারে ইস্যু করা হবে এবং অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেও আপনাকে সেই বিলটি পরিশোধ করতে হবে।

সাধারণত ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্য এই বিল পরিশোধ করার সময় দেওয়া হয়। তবে ব্যাংকের পলিসি অনুযায়ী তা ভিন্ন তরু হতে পারে। আপনি যদি এই বিলটি পরিশোধ না করতে পারেন তাহলে আপনাকে পরবর্তী ক্রেডিট লিমিট দেওয়া হবে না।

ক্রেডিট কার্ড সাধারণত অনলাইন অফলাইন দুটি প্লাটফর্মে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।আবার যদি আপনি চান আপনার ক্রেডিট লিমিটটি বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে আপনি ব্যবহার করবেন অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন করবেন তাহলে অবশ্যই একটি ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট আপনার থাকতে হবে। পাসপোর্ট না থাকলে আপনার যত লক্ষ টাকায় ক্রেডিট লিমিট থাকুক না কেন সেটা আপনি বাংলাদেশের বাইরে ব্যবহার করতে পারবেন না।

পাসপোর্ট দ্বারা আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডটি ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন এর জন্য এনএবল করবেন এবং আপনার ক্রেডিট লিমিটেড নির্দিষ্ট একটি অংশ বৈদেশিক মুদ্রায় কনভার্ট করে তা দেশের বাইরে বৈদেশিক কারেন্সিতে পেমেন্ট করতে পারবেন।

এছাড়াও অনলাইনেও আপনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন গুলো করতে পারবেন। যেমন গুগল প্লে স্টোর থেকে কোন অ্যাপ গেমস কিনতে চাইলে কিংবা ফরেন ই কমার্স সাইটগুলো থেকে কোন প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে অথবা ফেসবুক বুস্ট বা গুগল এডস এ পেমেন্ট করতে চাইলে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তা করতে পারবেন।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা

বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বাড়ছে। যারা অনেক বেশি কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন তাদের ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ডটি বেশি ব্যবহৃত হয়। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে। যেমন:

দ্রুত লেনদেন

আপনার ক্রেডিট কার্ডটি আপনাকে দ্রুত লেনদেনের সুবিধা প্রদান করে। আপনি কোন একটি ব্যয়বহুল জিনিস কিনতে চাইলে একসঙ্গে অনেক টাকা জোগাড় করতে পারছেন না তখন আপনার ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুতই আপনার পণ্যটি কিনতে পারছেন।

রিওয়ার্ড পয়েন্ট

মূল্য ফেরত আকাশপথে বিনামূল্যে ভ্রমন বা বাড়তি পুরস্কার পয়েন্ট গুলো ক্রেডিট কার্ডের অন্যতম কিছু আকর্ষণীয় বিষয় যা কেবলমাত্র আপনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলেই পেতে পারেন।

ক্রেডিট স্কোর বৃদ্ধি

নিয়মিত ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি আপনার ক্রেডিট স্কোর বাড়াতে পারেন। আপনি যদি নিয়মিত ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করেন তাহলে আপনার ক্রেডিট স্কোর দ্রুত বাড়বে।

নিরাপত্তার সুবিধা

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করলে প্রতারণা চুরি কিংবা একই খরচ একাধিকবার করার প্রবণতা থাকে না।যদি আপনার ক্রেডিট কার্ডটি চুরি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ওই কার্ড দিয়ে কোন কেনাকাটা করলে সেটা আপনার দায় নয়। ধরুন যদি আপনার ক্রেডিট কার্ড চুরি হয়ে যায় এবং সেখান থেকে কেউ টাকা তুলে নেয়। আর এটি যদি আপনি অভিযোগ করেন তাহলে কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক পুরো অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। তবে অবশ্যই আপনাকে যথাযথ প্রমাণ দিয়ে দ্রুত অর্থ ফেরত নিতে হবে। আর এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আপনার পিন নাম্বারটি মনে রাখতে হবে।

ঋণের সুবিধা

অনেক ধরনের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে যারা শূন্য শতাংশ সুদের ঋণ দেয়। এসব ক্ষেত্রে মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বিল পরিশোধ করতে হয় যা সুবিধা জনক। আবার কোন কোন কার্ডে ঋণের সুদের হার অনেক থাকে।

ক্রেডিট কার্ড অফার

ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়। যেমন ক্যাশব্যাক, স্পেশাল ডিসকাউন্ট আবার দেশের বাইরে গেলে হোটেলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার অনেক সময় মূল্য ছাড় দেওয়া হয়। প্লেনের টিকিট কাটতে অনেক সময় বিশেষ মূল্য ছাড় পাওয়া যায়।

এডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা অনেক থাকলেও এর কিছু অসুবিধা রয়েছে।আর এই অসুবিধা গুলো জেনেই আপনাকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে হবে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অসুবিধা গুলো হলো:

খরচ বেশি

আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করেন সেক্ষেত্রে আপনাকে খরচ বেশি বুঝেই করতে হবে।দেখা গেল আপনি কেনাকাটা করার সময় অনেক বেশি কেনাকাটা করে ফেলেছেন কিন্তু আপনার এটা মাথায় রাখতে হবে যে এই বেশি কেনাকাটার জন্য আপনি যেই এমাউন্টটি খরচ করেছেন সেটি অনুযায়ী আপনাকে মাসিক বিল পরিশোধ করতে হবে।

বার্ষিক ফি এবং অন্যান্য খরচ

বেশিরভাগ ক্রেডিট কার্ড এর ক্ষেত্রেই বছরে একটা ফ্রি দিতে হয় এছাড়াও কিছু চাঁদা বিভিন্নভাবে প্রযোজ্য হয় যেমন দেরিতে পরিশোধের ফি, ব্যালেন্স ট্রান্সফার ফি, ওভার ড্রাফট ফি ইত্যাদি।

ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড এর মধ্যে পার্থক্য

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড দুটো কার্ডের মাধ্যমে আপনি এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করে খরচ করতে পারবেন। তবে ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড দুটো কার্ডের টাকা উত্তোলনের ধরন এক নয় এদের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। দেখে নিন ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড এর মধ্যেও কি কি পার্থক্য রয়েছে:

*ডেবিট কার্ড হল এমন একটি কার্ড যা আপনার ব্যাংকের সেভিংস একাউন্ট এর সাথে লিঙ্ক করা থাকে। অপরদিকে ক্রেডিট কার্ড হলো এমন একটি কার্ড যা কার্ড জারি করা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একটি বিশেষ একাউন্টের সাথে লিংক করা থাকে।

*ডেবিট কার্ডকে এক কথায় বলা যায় ক্যাশ কার্ড। আই ক্রেডিট কার্ড কে এক কথায় লোন কার্ড বলা যায়।

*ডেবিট কার্ডের সাথে লিংক করা একাউন্টে যে পরিমাণ টাকা থাকে ব্যবহারকারী শুধু সেই টাকাই ব্যবহার করতে পারেন।কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যে পরিমাণ টাকা গ্রাহকের জন্য ঋণ মঞ্জুর করা হয়ে থাকে গ্রাহক শুধু সেই পরিমাণ টাকা খরচ করতে পারেন ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে।

*ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহক একাউন্টে তার নিজের জমা করার টাকা খরচ করতে পারে। অপরদিকে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে ক্রেডিট লিমিট দিয়ে থাকে সেটা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে গ্রাহক খরচ করতে পারেন।

*ডেবিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর একাউন্টে টাকা জমা থাকলে ব্যাংক বাড়তি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহককে সুদ বা মুনাফা প্রদান করা হয়। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডেhow to standing balance থাকলে তার বিপরীতে গ্রাহক কর্তৃক ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সুদ প্রদান করতে হয়।

*ডেবিট কার্ডে কোন ইএমআই সুবিধা পাওয়া যায় না। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডে ইএমআই সুবিধা পাওয়া যায়।

*ডেবিট কার্ডে কেনাকাটার পর পুনরায় পেমেন্ট করার প্রয়োজন হয় না।অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা করার পর পুনরায় পেমেন্ট করতে হয় সেটা গ্রাহক পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারে অথবা সর্বনিম্ন বিল পরিশোধ করতে পারে।

*যারা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করেন তাদের কোন প্রসেসিং ফি প্রদান করতে হয় না। কিন্তু ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জয়নিং প্রসেসিং ফি,লেট পেমেন্ট ফি, বার্ষিক ফি প্রদান করতে হয়।

*ডেবিট কার্ডের গ্রাহকের কাছে বিল পেপার হিসেবে কোন স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয় না কিন্তু মেসেজের মাধ্যমে জানানো হয় তিনি কত টাকা উত্তোলন করেছেন।অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের কাজে স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয় যেখানে লেনদেনের বিস্তারিত বর্ণনা থাকে। তার বর্তমান ব্যালেন্স কত আছে, মিনিমাম কত টাকা প্রদান করতে হবে এবং বিল প্রদান করার শেষ তারিখ কবে।

*সেভিংস /কারেন্ট /এসটিডি অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ ডেবিট কার্ড নিতে পারে।অপরদিকে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করার জন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে হয়।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার এর হয়?

ক্রেডিট কার্ডের অনেক ধরন বা প্রকার রয়েছে। যেমন:

*লো ইনকাম আর্নারের ক্রেডিট কার্ড।

*ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড।

*এয়ারলাইন ক্রেডিট কার্ড।

*শপিং ক্রেডিট কার্ড।

*রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড।

*ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড।

*ফুয়েল ক্রেডিট কার্ড।

*এন্টারটেইনমেন্ট ক্রেডিট কার্ড।

ডেবিট কার্ড এর অর্থ কি?

ডেবিট কার্ড এমন একটি প্লাস্টিক কার্ড বা নোট কার্ড যা ব্যবহার করে গ্রাহক নগদ টাকা প্রদান করার পরিবর্তে কার্ড কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারে। এটি ক্রেডিট কার্ডেরবিপরীত কারণ এই কার্ড ব্যবহার করতে হলে গ্রাহককে অবশ্যই তার ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে টাকা জমা রাখতে হবে।

এটিএম কার্ড নাম্বার জানার উপায়?

ডেবিট কার্ড নাম্বার হল একটি ১৬ সংখ্যার নাম্বার যা আপনার ডেবিট কার্ডের সামনে বা পেছনে মুদ্রিত থাকে।

আমাদের শেষ কথা-

আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে ডেবিট কার্ড কি এবং ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড এর মধ্যেও পার্থক্য সম্পর্কে। ইতোমধ্যেই আপনারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এ বিষয়ে কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

আপনাদের যদি আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলো ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন আমাদের ওয়েবসাইটের কথা।আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করবেন। আজকের মতো এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

পোস্ট ট্যাগ-

ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড কি,ডেবিট ও ক্রেডিট এর মধ্যে পার্থক্য কি,ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা,ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার,ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো,ডেবিট কার্ড ভিসা ক্রেডিট কার্ড,ডেবিট কার্ড খোলার নিয়ম,ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা ও অসুবিধা

আপনার জন্য আরো 

আপনার জন্য-

ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম ২০২৪

বাংলাদেশে কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে ভালো?

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers

 

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।