সারোগেসি পদ্ধতিতে কিভাবে মা হওয়া যায়?খরচ কত সহ বিস্তারিত

সারোগেসি পদ্ধতিতে কিভাবে মা হওয়া যায়?খরচ কত সহ বিস্তারিত-আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির অন্যতম একটি উদাহরণ হলো সারোগেসি পদ্ধতিতে মা হওয়া। যখন কোন দম্পতি শারীরিক কোন জটিলতার কারণে বাবা-মা হতে অক্ষম হয় কিংবা সম লিঙ্গের অভিভাবক হয় অথবা কেউ সিঙ্গেল প্যারেন্টস হতে চায় সেক্ষেত্রে সারোগেসি পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়। সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তানের বাবা-মা অন্য নারীর গর্ভ ভাড়া করে সন্তান জন্ম দেয়। সেই নারীর গর্ভে থাকাকালীন তার সমস্ত যত্ন এবং খরচের দায়িত্বভার সন্তানের পিতা-মাতা গ্রহণ করে এবং সারোগেট মাদার অর্থের বিনিময়ে তার গর্ভে অন্যের সন্তান রাখে‌।সারোগেসি পদ্ধতিতে কিভাবে মা হওয়া যায়

বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এবং তার স্বামী নিক জোনাস সম্প্রতি সারোগেসি পদ্ধতিতে পিতা-মাতা হয়েছেন কারাণ জোহার সারোগেসি পদ্ধতিতে সিঙ্গেল প্যারেন্ট হয়েছেন এছাড়াও বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহরুখ খান ও গৌরী তার ছোট ছেলের জন্ম দেন সারোগেসি পদ্ধতির আশ্রয়ে। বলিউডে তুষার কাপুর একটা কাপুর এই দুজনও সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান নিয়েছে। এছাড়াও বিশ্বের আরো অনেকেই সারোগেসি পদ্ধতিতে পিতা-মাতা হচ্ছেন।

মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সহজ উপায় 

সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা প্রযুক্তির সেবায আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অনেক বেশি পরিবর্তিত করেছে। সারোগেসি পদ্ধতি চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি অন্যতম পদ্ধতি যেখানে পিতা-মাতা হতে যারা অক্ষম তারা এই পদ্ধতির সাহায্যে পিতা-মাতা হতে পারছে। এই আধুনিক পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানাবো আজকের আর্টিকেলে। তাই জানতে হলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত সাথে থাকতে হবে।

সারোগেসি পদ্ধতি কি

সন্তান ধারণের জন্য প্রথমে একজন সারোগেট মা প্রয়োজন যার গর্ভে সন্তান বড় হবে। যেসব পিতামাতা সারোগেসি পদ্ধতিতে বাবা-মা হতে চায় সেই পিতার শুক্রাণু নিয়ে আইভিএফ কৌশল এর মাধ্যমে যে নারীর গর্ভে সন্তান থাকবে অর্থাৎ সারোগেট নারীর গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়। আইভিএফ প্রযুক্তি (আইভিএফ হলো ইনভিট্রোফার্টিলাইজেশন) সারোগেসির অন্যতম একটি মাধ্যম। সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তানের জন্মদানের জন্য পুরুষের শুক্রাণু ও নারীর ডিম্বাণুর মিলন করা হয়। এখান থেকে ব্রণ তৈরি করা হয় কাঁচের ভেতরে (ইনভিট্রো মানে কাঁচের ভেতর)। এটাকে টেস্ট টিউব পদ্ধতি ও বলা যায়। অনেকেই এই পদ্ধতি বা কৌশলটিকে টেস্ট টিউব বেবি নামে অভিহিত করেন।

এই পদ্ধতি অবলম্বন করে নারীর শরীরের ভেতরে যে প্রক্রিয়াটি ঘটানো হয় সেটি টেস্ট টিউবের মাধ্যমে ল্যাবে করানো হয়।পুরুষের শুক্রানুটি গ্রহণের পর নারী শরীর থেকে ডিম্বাণু বের করে একটি সুচের মাধ্যমে শুক্রাণুতে প্রবেশ করানো হয়। তারপর  কাচের ভেতর ব্রণ তৈরি হয়। এরপর একটি মেডিকেল টিউবের মাধ্যমে সারোগেট নারীর জরায়ুতে সেটি প্রবেশ করানো হয়। এই পুলক কৌশলটিকেই সারোগেসিভ পদ্ধতি বলা হয়।

সারোগেসি পদ্ধতি কত প্রকার

বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসায় সারোগেসি পদ্ধতি দুই প্রকার। যথা-১) ট্রেডিশনাল সারোগেসি, ২) হোস্ট সারোগেসি বা আধুনিক সারোগেসি।

ট্রেডিশনাল সারোগেসি

ট্রেডিশনাল সারোগেসি পদ্ধতিতে যদি কারো ডিম্বাণু একেবারেই উৎপাদিত না হয় তাহলে সেই স্যার গেট মায়ের ডিম্বাণু ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা যায়। এই অবস্থায় যারা সারোগেসি পদ্ধতিতে পিতা-মাতা হতে চান সেই পিতার শুক্রাণু ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে যেই নারীর গর্ভে সন্তান থাকে তিনি জিনগতভাবে ওই শিশু সাথে সম্পৃক্ত থাকেন।

হোস্ট সারোগেসি বা আধুনিক সারোগেসি

সারোগেসি পদ্ধতিতে যিনি সন্তানের মা হবেন তিনি সারোগেসি মায়ের ডিম্বানু থেকে একাধিক ডিম্বাণু সংগ্রহ করে বিশেষ প্রক্রিয়ায়। এসব প্রক্রিয়াগুলো হলো:

ফার্টিলাইজেশন: ল্যাবরেটরীতে ডিম্বাণু শুক্রানুর সাথে মিলন ঘটিয়ে ভ্রুণ তৈরি করা হয়।

প্রতিস্থাপন: প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় ল্যাবরেটরীতে তৈরি ওই ব্রণ সারোগেট মায়ের গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়।

সারোগেসি পদ্ধতিতে খরচ কত

সাধারণত সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান নিতে চাইলে ৬০০০০ থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভারতের হিসাব অনুযায়ী খরচ পড়বে। তবে স্যার গেট মায়ের সুস্থতা এবং তার যত্নে উপর ভিত্তি করে খরচ বাড়তে পারে।

সারোগেসিভ মাধ্যমে সন্তান পেতে গেলে সারোগেট মায়ের গর্ভকালীন সময়ে সমস্ত খরচ বহন করতে হয় সেই সন্তানের পিতা-মাতার। আর এই খরচ নিয়ে সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান নিতে চাইলে আনুষঙ্গিক খরচের পরিমাণ হবে ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা।

সারোগেসি পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি

বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে সারোগেসি পদ্ধতির নাম উল্লেখযোগ্য। তবে এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই সন্তানের পিতা-মাতা হওয়া যায় না। এই পদ্ধতিতে গর্ভ ভাড়া করে সন্তানের পিতামাতা হওয়ার ক্ষেত্রে সার্কেট মায়ের অনেক ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা ও ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। যেমন: ব্রণের জীবনের প্রেইমপ্ল্যিন্টেশন, প্রসব পূর্ব ও নবজাতক সময়কালে ব্যর্থতার সম্ভাবনা থাকে।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

ডিম্বাশয় উদ্দীপনা, পরবর্তী আইভিএফ চক্র ও আইভিএফ ও জেনেটিক ল্যাবরেটরির মধ্য ভ্রূণ, প্যারিনেটাল ও নবজাতক সময়ের মধ্যনিযুক্ত কৌশল গুলোর মধ্যে একাধিক জটিল চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে।

এছাড়াও বাস্তবতা হলো সারোগেট মায়েরা অর্থের বিনিময়ে সন্তানের জন্ম দিয়ে সেই সন্তানকে অন্যের কাছে দিয়ে দেয়।কিন্তু সত্য এটাই যে সে সেই সন্তানকে পেটে ধরেছে এবং তিনি সেই সন্তানের জন্মদাত্রী।

সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদান কি জায়েজ

গর্ভ ভাড়া করে সন্তানের পিতা-মাতা হতে সারোগেসি কৌশল অবলম্বন করা হয়। এই পদ্ধতিতে অর্থের বিনিময়ে একজন নারী তার গর্ভে অন্যের সন্তানকে যত্নে রাখে এবং জন্ম দেয়। তবে ইসলাম এটি জায়েজ বলে গণ্য করে না।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ ও সন্তান গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি হাদিস কুরআনে বলে দিয়েছেন। তিনি পুরুষ মহিলা এই দুই জাতি সৃষ্টি করেছেন বৈধ সম্পর্ক করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয় যে “তিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্ট করেছেন ও তার থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন যাতে সে তার কাছে শান্তি পায় তারপর যখন সে তার সঙ্গে সঙ্গত হয় তখন সে এক হালকা গর্ভধারণ করে এবং এটা নিয়ে সে অনায়াসে চলাফেরা করে অতপর গর্ভ যখন ভারি হয়ে আসে তখন তারা উভয়ে তাদের রব আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন যদি আপনি আমাদের এক পূর্ণাঙ্গ সন্তান দান করেন তাহলে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।” (সূরা আরাফ ১৮৯)

আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে: “আর যারা নিজের যৌনাঙ্গ কে রাখে সংরক্ষিত নিজেদের স্ত্রী বা অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া এতে তারা হবে না নিন্দিত অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারাই হবে সীমালংঘনকারী।” (সূরা মুমিনূন‌ ৫-৭)

প্রথমত,সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে বংশ পরিক্রমা বাধাগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয়তঃ সারোগেসি পদ্ধতিতে পর পুরুষের বীর্য বা শুক্রাণু পরনারীর জরায়ুতে প্রবেশের মাধ্যমে ব্যভিচারের মতো জঘন্য পাপ কাজ করা হয়।”সার্কেট মা সন্তান জন্মদানের পর তার সন্তানকে তার দায়িত্ব গ্রহণকারী মালিকের কাছে হস্তান্তর করে দেয় এবং নিজের মাতৃ পরিচয় কে বিলুপ্ত করে দেয়। এটি ইসলামের সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও শরীয়ত বিরোধী কাজ।

সারোগেসি পদ্ধতির সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

অনেকেই মনে করে থাকেন যে স্যারোগেসি পদ্ধতিতে নারী পুরুষের মাঝে কোন ধরনের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। তাহলে একে বিবাহ বহির্ভূত ব্যভিচার বলে আখ্যা দেওয়া সঠিক নয়। একে পাপ কাজ বলা উচিত নয়।

এ সম্পর্কে ইসলামে বলা আছে স্পষ্টভাবে। নারীদের ফসল ক্ষেত্র বলা হয়েছে পবিত্র কুরআন শরীফে।সেখানে বলা আছে “তোমাদের স্ত্রী তোমাদের ফসল ক্ষেত্র সুতরাং তোমরা তোমাদের ফসলক্ষেত্র গমন কর যেভাবে চাও।”( সূরা বাকারা আয়াত: ২২৩)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,” যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে তার জন্য বৈধ নয় অন্যের ফসলে নিজের পানি সেচন করা।”

ইসলাম মানুষের বংশ ধারার পবিত্রতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সারোগেসি পদ্ধতিতে এক নারীর জরায়ুতে অন্য পুরুষের শুক্রানু আছে। কিন্তু ইসলামে বলা হয়েছে যে নারীর জরায়ুতে অন্বয় না শুক্রানো থাকে বা থাকার সম্ভাবনা আছে সে অবস্থায় তাকে বিয়ে করা বংশধারার পবিত্রতা অস্বচ্ছ করে দেয় এবং হুমকির মুখে ফেলে দেয়।

ইসলামে এমন নারী শরীরে শুক্রাণু প্রবেশ করানো মোটেও জায়েজ নয় যে তার জন্য ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল নয় তা হোক শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে হোক ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে।

সারোগেসি পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়ে সেই শিশুর মা আসলে কে হবেন তাই নিয়ে ইসলামী আইনে জটিলতা রয়েছে।

তাই বলা যায় প্রতিটি মুসলমানের উচিত এই সারোগেসি পদ্ধতির থেকে সতর্ক থাকা। কারণ এটি ইসলাম জায়েজ বলে না।

আমাদের সচারচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

সারোগেসি পদ্ধতি সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

উত্তর:ইসলামে সারোগেসি পদ্ধতিতে মা হওয়ার বিষয়টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এটি অন্যায়। সকল মুসলমানের উচিত এই পদ্ধতি থেকে বিরত থাকা।

সারোগেসি পদ্ধতিতে সারগেট মায়ের সাথে সন্তানের কোন সম্পর্ক আছে কি?

উত্তর: সারোগেসি পদ্ধতিতে যেই নারী তার গর্ভে সন্তান রেখে তার জন্ম দেয় সেই নারীর সাথে সেই সন্তানের জিনগত সম্পর্ক রয়েছে।

সারোগেসি পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি রয়েছে?

উত্তর:সারোগেসি পদ্ধতিতে মা হওয়ার ক্ষেত্রে একজন স্যারোগেট মায়ের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে।

আমাদের শেষ কথা

আজকের আর্টিকেলে সারোগেসি পদ্ধতি কি এবং এই পদ্ধতিতে খরচ কত সেই সম্পর্কে তুলে ধরলাম।ইতোমধ্যে যারা আর্টিকেলটি পড়ে ফেলেছেন তারা জানতে পেরেছেন চোখ ওঠার লক্ষণ এবং ঘরোয়া প্রতিকার কি। এমন আরো নতুন নতুন কনটেন্ট পেতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন। আমরা চেষ্টা করব সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদেরকে উপকৃত করার।

বি:দ্র: এটি সম্পূর্ণ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত। কোন ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

পোস্ট ট্যাগ-

সারোগেসি পদ্ধতি ইসলাম কি বলে,সারোগেসি পদ্ধতি খরচ,সারোগেসি কিভাবে করা হয়,সারোগেসি বাংলাদেশ,সারোগেসি কি হালাল,সারোগেসি ভিডিও,গর্ভ ভাড়া কি জায়েজ,সারোগেসি বাঙ্গালী মিনিং।

আপনার জন্য আরো 

আপনার জন্য-

অ্যাজমা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা 

থাইরয়েড রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়

চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকারী চিকিৎসা

যক্ষা বা টিবি রোগের লক্ষণ

ক্যান্সার রোগের যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না

শ্বেতী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers