বেরিবেরি রোগ –বেরি বেরি এমন একটি রোগ যা ভিটামিন বি১ বা থায়ামিনের অভাবে হয়ে থাকে। একটি মরণ ব্যাধি রোগগুলোর মধ্য একটি। বেরিবেরি সাধারণত দেহের ঘাটতি রোগ হিসেবে পরিচিত।বেরিবেরি রোগটি দুইভাবে আক্রমণ করে। একটা হলো ওয়েট বেরিবেরি এবং অপরটি হলো ড্রাই বেরিবেরি।
বুয়েট বেরি বেরি তে হার্ট এবং রক্ত সংবহন তন্ত্র আক্রান্ত হয় এবং চূড়ান্ত হার্ট ফেইলর হয়।আবার ড্রাই বেরিবেরি স্নায়ু ধ্বংস করে দেয় মাংসপেশীর শক্তি ও হ্রাস করে তার ফলশ্রুতিতে মাংসপেশির প্যারালাইসিস হয়। যথা সময়ে বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা না করানো হলে এটি মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।
বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করতে ভিটামিন বি১ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরী। বেরিবেরি রোগের লক্ষণ এবং কারণসমূহ সম্পর্কে আমরা আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। বেরিবেরি রোগটি সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে করবেন এবং আমাদের সাথে থাকবেন।
বেরি বেরি রোগ কি?
ভেরি ভেরি শব্দটি এসেছে সিংহলি ভাষা থেকে যার অর্থ আমি পারিনা। আমি পারিনা বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে যে ভেরি ভেরি রোগে আক্রান্ত রোগীরা অনেক বেশি দুর্বল এবং কোন কাজ করতে অক্ষম থাকে।বেরিবেরি রোগটি হল ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিনের অভাবে সংঘটিত একটি রোগ। যার জটিলতা অনেক বেশি।
শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিন এর পরিমাণ ঠিক না থাকে তাহলে এই রোগটি দেখা দেয়। বেরিবেরি কার্ডিওভাস কুলার সিস্টেম বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কে প্রভাবিত করতে পারে বেরি বেরি একটি জেনেটিক রোগ যার ফলে খাদ্য থেকে থিয়ামিন শোষণের অক্ষমতা হয়। যথা সময় বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা করা অতীব দরকার। আর যদি তা না করা হয় তাহলে এই রোগটি মরণঘাতি হয়ে দাঁড়ায়।
বেরি বেরি রোগের লক্ষণ
ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিনের ঘাটতি থাকলে বেরি বেরি রোগের লক্ষণ গুলি পরিলক্ষিত হয়। ভেরি বিড়ির সঙ্গে থায়ামিনীর অভাবে ভারনিকে এন্ড সেফালোপ্যাথি নামক আরো একটি রোগ হতে পারে। বেরিবেরি রোগের লক্ষণগুলো হলো:
ওজন কমে যাওয়া
বেরিবেরি নামক রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির দ্রুত ওজন কমে যায়। ওই ব্যক্তি শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় ফলে তার বেরি বেরি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ক্ষুধা কমে যাওয়া
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার প্রতি কোনো রুচি থাকে না। ধীরে ধীরে তার রুচি কমতে থাকে এমন কি সে নিজের পছন্দনীয় খাবারগুলো খেতে চায় না।
বমি
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বমি হওয়া এবং শারীরিক দুর্বলতা। বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির অধিক পরিমাণে বমি হয়।
মানসিক অবসাদ
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সব সময় মানসিক অবসাদে ভুগে। যেকোনো কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলে।
শরীর ফুলে যাওয়া
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ করে শরীর ফুলে যায়। শরীরে রক্তস্বল্পতা থাকে এবং অনেক সময় পানি আসে।
ব্যথা
বেরিবেরি রোগে আক্রান্তদের হাত-পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়। শরীরের দুর্বলতা দেখা দেওয়ার সাথে সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যথাও এই রোগের অন্যতম লক্ষণ।
অনিয়মিত হৃদস্পন্দন
যদি অনিয়মিত ভাবে হৃদস্পন্দন হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। কারণ এটি বেরি বেরি রোগের অন্যতম লক্ষণ।
বেরি বেরি রোগ কেন হয়
শরীরে ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিন এর ঘাটতি এই রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিন না থাকলে সাধারণত কোন ব্যক্তির দেহে এই রোগের সৃষ্টি হয়। শরীরে যদি থাইয়ামিনের অভাব হয় তাহলে খাবার হজম করা এবং বিপাকক্রিয়া চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয় এরই ফলে মানব দেহের বেশি এবং স্নায়ুতন্ত্র তাদের কাজগুলি ঠিকমতো করতে পারেনা।
সারোগেসি পদ্ধতিতে কিভাবে মা হওয়া যায়?
এই কাজে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজন থায়ামিন। এছাড়াও যারা অ্যালকোহল অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন তাদের এই অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে বেরিবেরি রোগটি হয়ে থাকে। পুষ্টির অভাব থাকলে ভেরি ভেরি রোগ হয়। কোন মায়ের যদি গর্ভকালীন সময়ে এই রোগ থাকে তাহলে তার গর্ভের সন্তানেরও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বেরিবেরি রোগ হলে যেসব খাবার খাবেন
বেরি বেরি রোগটি পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবেও সংঘটিত হয় যার কারনে এই রোগীর পুষ্টিকর খাদ্যে খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিদিন খাবার মেনুতে সুষম খাদ্য থাকা জরুরি। এই রোগীর প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হতে হবে তা না হলে এই রোগ মারাত্মক বিপদ ডেকে আনবে। বেরি বেরি রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা যেসব খাবার খেতে বলেন সেগুলো হচ্ছে-
১) মিষ্টি আলো।
২) কাজুবাদাম।
৩) ওটস।
৪) গরুর কলিজা।
৫) মুরগির মাংস।
৬) ছোলা।
৭) স্কোয়াশ।
৮) কলা।
৯) শস্যজাতীয় খাদ্য।
১০) মাছ।
১১) ডিম।
১২) দুধ।
১৩) বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি।
১৪) মসুর ডাল।
১৫) সয়াবিন।
১৬) কমলা।
১৭) টমেটো।
বেরিবেরি রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডাক্তাররা এই খাবারগুলো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।তাই এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে এবং রোগটি প্রতিরোধ করতে অবশ্যই উপরুক্ত খাবার গুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন।
বঙ্গবন্ধুর বেরিবেরি রোগ
১৯৩৭ সালে বঙ্গবন্ধু বেরি বেরি রোগে আক্রান্ত হন। এ সময় তার চোখের অসুখ দেখা দিলে অনেক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেও তিনি এই রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করতে পারছিল না। এরপর তার বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়রা খাতুন সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে চোখের অপারেশন করানো হয়।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
সে সময় বঙ্গবন্ধুর লেখাপড়ার অনেক বড় ক্ষতি সাধন হয়েছিল।তিনি চোখের অপারেশন করানোর পর আরোগ্য লাভ করে অতপর নতুন করে আবার পড়াশোনা শুরু করেন।এরই মাঝে তিনি 1938 সালে বেগম ফজিলাতুন্নেছার সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। মুজিবের বয়স ছিল তখন 18 বছর।
মরণব্যাধি রোগগুলো যেন বর্তমানে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এই বেরিবেরি রোগটি তাদের মধ্যে অন্যতম। এটি ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিনের অভাবজনিত রোগ তাই ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিনের অভাব পূরণ করতে পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের মধ্য এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে তাই এই সময় নারীদের সতর্ক থাকা উচিত।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
বেরি বেরি রোগ কেন হয়?
পুষ্টিকর খাবার, অতিমাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ এবং ভিটামিন বি১ ও থায়ামিন এর অভাবে বেরিবেরি রোগ হয়।
বেরি বেরি রোগ কিসের অভাবে হয়?
ভিটামিন বি১ এবং থায়ামিনের অভাবে বেরি বেরি রোগ হয়।
বঙ্গবন্ধুর বেরিবেরি রোগ হয় কত সালে?
১৯৩৭ সালে বঙ্গবন্ধুর চোখে বেরি বেরি রোগটি দেখা দেয়।
আমাদের শেষ কথা-
বেরিবেরি রোগ কি?বেরিবেরি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যেই আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পেরেছেন। আপনাদের কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। নিয়মিত আরো বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল গুলো পেতে হলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ
পোস্ট ট্যাগ-
বেরিবেরি রোগ কেন হয়,বেরিবেরি রোগ কোন ভিটামিনের অভাবে হয়,বঙ্গবন্ধুর বেরিবেরি রোগ,বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করে কোন খাবার,বেরিবেরি রোগ কি ছবি,স্কার্ভি রোগ কি,স্কার্ভি রোগের লক্ষণ কি,রিকেটস রোগ কি।
আপনার জন্য আরো –
- ইংলিশে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ইউটিউবে – ব্লগিং,ইউটিউবিং,ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত ভিডিও পেতে–এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে- ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত সকল ভিডিও পেতে –এখানে ভিজিট করুন।
আপনার জন্য-
অ্যাজমা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা
থাইরয়েড রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়
চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকারী চিকিৎসা
যক্ষা বা টিবি রোগের লক্ষণ
ক্যান্সার রোগের যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না
শ্বেতী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।