শিশুর মানসিক বিকাশে বাবা-মার করণীয়:-সুস্থ শিশু বলতে শুধু শারীরিকভাবে সুস্থ শিশুকেই বোঝায় না, শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবে শিশুকে সুস্থ রাখতে হবে। সাধারণভাবে আমরা শিশুর শারীরিক বিকাশে যতটা মনোযোগ দিই, মানসিক বিকাশে ততটা মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করি না। কিন্তু মানসিকভাবে সুস্থ না হলে শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। শিশুর প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তার কথার গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি শিশুর ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে।
শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য বাবা–মা রা যা যা করতে পারেন–
* মা–বাবার জীবনে সন্তান অমূল্য সম্পদ এবং সন্তান পেয়ে যে তাদের জীবন ধন্য হয়েছে, এটা তাকে বোঝাতে হবে।
*সন্তান শিশু হলেও সে যে একজন পরিপূর্ণ মানুষ, এই সন্মান তাকে করলে তার ভেতর আত্মসম্মান বোধ জাগ্রত হবে।
* সন্তানের কাজের প্রশংসা করতে হবে, তার কাজের সমালোচনা না করে কীভাবে করলে কাজটা সুন্দর হবে তা নিয়ে সন্তানের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
?? গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন ??
* সন্তানের প্রতিটি মতামত গুরুত্বসহকারে শুনতে হবে। সন্তানের সঙ্গে তার ভালো লাগা, খারাপ লাগা বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললে তার ভেতরে চিন্তা করার দক্ষতা তৈরি হবে।
* সন্তান যে জিনিসগুলো ব্যবহার করে, সেটা তার পছন্দ অনুযায়ীই যদি কেনা সম্ভব হয়, তবে সন্তানের মতামত প্রদানের অভ্যাস গঠন হবে। তার বিছানায় চাদর, পড়ার টেবিল, কোন পোশাক পরবে, সেসবের ব্যাপারে তার পছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে।
* আমরা অনেকেই শিশুকে মেঝেতে নামতে দিই না। খেলনা দিয়ে খেলতে দেই না। আমাদের ভয় থাকে সন্তান পড়ে যেতে পারে বা আঘাত পেতে পারে। কিন্তু শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য তারা হাঁটবে, খেলবে—এ জন্য সন্তানকে নিয়ে মা–বাবার ভয় পেলে চলবে না। তাকে তার মতো থাকতে দিতে হবে।
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
* অনেক সময় মা–বাবা সন্তানের সব কাজ করে দেন। এটা করা ঠিক নয়। এতে করে সন্তান দায়িত্ব নিতে শেখে না। দায়িত্ব নিতে ভয় পায়। বাচ্চাকে আমাদের ছোট ছোট দায়িত্ব দিতে হবে। যেমন হতে পরে সন্তান খাওয়ার পরে তার প্লেটটা সে নিজেই পরিষ্কার করবে।
* শিশুরা যদি ইচ্ছে করে কিছু করতে চায়, সেটা আমরা তাদের জন্য ক্ষতিকর না হলে নিষেধ করব না। আমরা তাদেরকে সাহস দেব। তার কাজে সহযোগিতা করব এবং তাকে উৎসাহ দেব।
* অনেক সময় শিশুরা নিজের দামি একটা খেলনা ভেঙে ফেললে আমরা তাকে বকা দিই। বাচ্চারা কোনো কিছু ভেঙে বা নষ্ট করে ফেললে তারই কিন্তু সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়।
* সন্তানের সঙ্গে কোনো প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা পালন করা উচিত। একই সঙ্গে সন্তানকে ভালো কিছু করার জন্য পুরস্কার দিতে হবে।
শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য জরুরী করণীয় কিছু কাজ
১।সুস্থ পারিপার্শ্বিক পরিবেশ
একটি শিশু যখন বড় হয়, তখন চারদিকের পরিবেশ তাকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে এবং এর প্রতিফলন ঘটে তার ব্যক্তিত্বে। শিশুর সামগ্রিক বিকাশের সঙ্গে পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতা নিবিড়ভাবে জড়িত। আজকের শিশু ভবিষ্যতের নাগরিক। তাই তার সুন্দর ও নির্ভয় শৈশব নিশ্চিত করার দায়িত্ব মা–বাবাসহ পরিবারের সব সদস্যের।
২।সৃজনশীল খেলনা
শিশুর খেলনা হতে হবে আবিষ্কারধর্মী, নাটকীয় ও সৃজনশীল। বয়সভেদে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ উপযোগী খেলনা নির্বাচন করতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে। ঘরে ও বাইরে দুই জায়গায়ই খেলা যায়—এমন খেলনা শিশুর মানসিক বিকাশে বেশি সহায়ক। শিশুকে এমন ধরনের খেলনা দিতে হবে, যা তার বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।
৩।ছবি আঁকা
দীর্ঘদিনের গবেষণায় দেখা গেছে, শৈশবে শিশুরা যদি ছবি আঁকার সুযোগ পায়, তাহলে তারা মেধাবী ও বুদ্ধিমান হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, শিল্পচর্চার মাধ্যমে শিশুদের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অভিনব চিন্তার মাধ্যমে শিশু যখন বিভিন্নভাবে শিল্পচর্চার সুযোগ পায়, তখন তার সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পায়। সে অসাধারণভাবে ভাবতে ও চিন্তা করতে শেখে, যা তাকে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে শেখায় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সে তখন সহজেই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
৪।সংগীতচর্চা
সুখে-দুঃখে সংগীত যেমন আমাদের মনোরঞ্জন করে, তেমনি শৈশব থেকেই শারীরিক ও মানসিক অনেক কাজের ওপরেও রয়েছে সংগীতের নিবিড় প্রভাব। তাই শিশুকে একেবারে ছোটবেলা থেকেই সংগীতের সঙ্গে পরিচয় করানো জরুরি। সংগীত মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
৫।বই পড়া
বই শিশু মনের সুপ্ত ভাবনার বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করে। একসময় মা-খালা-দাদির মুখ থেকে ঠাকুমার ঝুলির গল্প শুনে সময় কাটত শিশুদের। এখন এর ব্যতিক্রম ঘটছে। আগেকার সেসব গল্প এখন শিশুরা শুনতে পারে না। শিশু বয়স থেকেই তাই শিক্ষামূলক বইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। গল্পের বই পড়ার মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ প্রসারিত হয় এবং মনের ভাব প্রকাশের ক্ষমতা বাড়ে।
শিশুর সামগ্রিক বিকাশে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখার পাশাপাশি শিশুর মানসিক বিকাশের দিকেও নজর রাখুন। অভিভাবক হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে আপনাকেই।
আরও পড়ুন-
৬ মাস থেকে ৫ বছরের বাচ্চার খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা দিন শেষ
বাচ্চার পুষ্টি নিয়ে ভাবছেন?অধিক পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ বাচ্চার খাবার তালিকা
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”এছারাও আমাদের প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন।
SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এএখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
SS IT BARI-সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।