নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়

নবজাতক শিশুজন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী শিশুকে নবজাতক বলা হয়। এই সময় মা ও শিশু দুজনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতকের নিরাপত্তার জন্য তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যাতে করে সে কোন জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত না হতে পারে। জন্মের এক ঘন্টা শিশুর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বাচ্চার পুষ্টি নিয়ে ভাবছেন?অধিক পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ বাচ্চার খাবার তালিকা

তাই সময়টা শিশুর জন্য “গোল্ডেন ওয়ান আওয়ার”। শিশুর জন্মের পরে প্রথম ও একমাত্র কাজ হল  তাকে মায়ের দুধ( শাল দুধ) খাওয়ানো। শাল দুধ শিশুর প্রথম টিকা মত কাজ করে। শিশুকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।   নবজাতক শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি আরো কিছু যত্ন ও পরিচর্যা নিতে হবে।      নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়

 নবজাতক শিশুর সঠিক যত্নের মধ্যে পড়ে          

* জন্মের সঙ্গে সঙ্গে একজন নবজাতককে ভালোভাবে  মুছিয়ে দেওয়া ও পরিষ্কার করা।

*মা ও শিশুর ‘স্কিন টু স্ক্রিন ‘সম্পর্ক  অর্থাৎ মায়ের সংস্পর্শ শিশুকে রাখতে হবে।

* জন্মের পরে এক মিনিটের মধ্যে নারী কাটতে হবে।

* শিশুকে শাল দুধ পান করাতে হবে। শাল দুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

* শিশু জন্মের পর শিশুকে ভিটামিন -কে ক্যাপসুল খাওয়াতে হবেে।

নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়ার কৌশল 

নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়া বাবা-মার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। যারা প্রথম বাবা-মা তাদের কাছে আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায় বিষয়গুলো। তাই   আজ সহজ করে কিছু উপায় জানাবো । যা আপনাদের নবজাতক শিশুর যত্নের জন্য  সহায়তা করবে।

১।খাওয়ানো-শিশুকে সঠিক সময়ে খাওয়ানো খুব গুরুত্বপূর্ণ । নবজাতক শিশুকে প্রতি ২থেকে ৩ঘণ্টা পরপর ৮ থেকে ১২ বার মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে । শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধে আছে  শিশুর বৃদ্ধির জন্য সকল প্রকার পুষ্টিগুণ ও অ্যান্টিবডি । জন্মের পর থেকে 6 মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ  খাওয়াতে হবে ।

২।ঢেঁকুর তোলা -বাচ্চাকে খাওয়ানো হয়ে গেলে ঢেঁকুর তুলতে হবে । বাচ্চা খাওয়ানোর সময়   বায়ু  গিলে ফেলে যা পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হয়। যার ফলে বাচ্চার পেট ব্যথা করে এবং কান্নাকাটি করতে পারে । ঢেঁকুর তোলার মধ্যে অতিরিক্ত বায়ু পেট থেকে বের হয়ে যায় । ঢেকুর তোলার নিয়ম হলো বাচ্চাকে এক হাত দিয়ে ধরে  আপনার কাঁধে নিন এবং ওপর হাত দিয়ে তার পিঠে  চাপড়াতে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত না ঢেকুর তোলে ।

৩। কিভাবে আপনার নবজাতককে ধরতে হবে – নবজাতক শিশুকে ধরে রাখার সময়  আপনি তার মাথা এবং ঘাড় কে  আপনার হাত দিয়ে অবলম্বন দিবেন । এর কারণ হলো তার ঘাড়ের পেশী  শক্তিশালী নয় যে  তার মাথা কোন  অবলম্বন ছাড়াই ধরে রাখতে পারবে।  তিন মাস হলে সে নিজে নিজে মাথা  তুলতে পারবে ।

৪।ডায়পার পরানো -নবজাত শিশুর যত্নে ডায়পার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এই সময় শিশুর ঘন ঘন প্রস্রাব করে  তার ডায়পার ও ঘন  ঘন পরিবর্তন করতে হবে। অতিরিক্ত ভেজা ডায়পার বাচ্চা কে পড়ানো যাবে না  তাই  একটু পর পর চেক করতে হবে । তবে শিশুকে দিনের কিছু সময়  ডায়পার  ছাড়া রাখতে হবে ।    নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়

৫। গোসল – নবজাতক শিশুকে গোসল করানো অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ । জন্ম থেকে ২৮ দিন পর   নবজাতক শিশুকে গোসল করাতে হবে ।  তবে তার গোসলের জন্য উষ্ণ গরম পানি ব্যবহার  করতে হবে । প্রথমদিকে তাকে দুই তিন দিন পর পর গোসল করাতে হবে । গোসলের সময় নরম তোয়ালে, সাবান, শ্যাম্পু  ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে শিশুকে সঠিকভাবে ধরে এবং সাবধানে গোসল করাতে হবে ।

৬। মালিশ -নবজাতক শিশুর জন্য মালিশ অপরিহার্য ।  মালিশ শিশুর ঘুমাতে সাহায্য করে । শরীরের রক্ত সঞ্চালন ও হজম  উন্নতির জন্য এর গুরুত্ব কম না ।  সরিষার তেল , অলিভ অয়েল  দিয়ে  নবজাতক শিশুকে সুন্দর করে মালিশ  করতে হবে ।

৭। নবজাতক শিশুকে সামলানো  -নবজাতক শিশুর সঙ্গে খেলার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে   শিশুকে কখনো  ঝাঁকাবেন না এটি শিশুর জন্য ক্ষতিকর । আর শিশুকে কখনো উপরে ছুড়ে ফেলবেন না এটা অনেক বিপদজনক ।

৮। ঘুমানো -নবজাতক শিশু প্রথম দুই মাস  প্রায় 16 ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকে । সাধারণত দুই থেকে চার ঘণ্টা ধরে  ছোট ছোট ঘুম দেই । শুধু ক্ষুধার্ত হলেই তারা জেগে ওঠে ।  তবে দুই মাস পরে এই ঘুমের  প্রক্রিয়াটি পরিবর্তন হয়ে যায় । তবে শিশু ঘুমানোর সময়ে তাকে চিত করে শোয়াবেন।

৯। নখ ছাঁটাই – নবজাতক শিশুর নখ দ্রুত বৃদ্ধি পায় । হাত নড়াচড়া করে এবং এই নখ  দিয়ে  তার মুখে  আঁচর   ফেলে । তাই ঘুমের মধ্যে আস্তে আস্তে তার  নখ  কেটে দিন।

নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর উপকারিতা  

নবজাতক শিশুকে সুন্দর ও সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য  মায়ের দুধের কোন তুলনা নেই ।

১। ছয় মাস বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত একটি শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য  যা যা পুষ্টির প্রয়োজন তা সবকিছু মায়ের দুধে আছে ।

২।শিশু খুব তাড়াতাড়ি ও সহজে মায়ের দুধ হজম করতে পারে।

৩। মায়ের দুধে আছে  আন্টি বডি, যা শিশুর ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কান পাকা , মেনিনজাইটিস,  পেশাবের ইনফেকশন  ইত্যাদি  থেকে রক্ষা করে।

৪। মায়ের দুধ খাওয়ালে শিশুর মায়ের মধ্যে একটা ভালোবাসার বন্ধন গড়ে ওঠে। যা শিশুকে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে । ফলে শিশু বড় হয়ে অন্যদের সাথে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে শিখে ।

৫। শিশুর বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি পায় ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।

৬।মায়ের স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে ।

আরও পড়ুন-

৬ মাস থেকে ৫ বছরের বাচ্চার খাবার নিয়ে   দুশ্চিন্তা দিন শেষ

চুল পড়া বন্ধের উপায় যেনে নিন

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ঘরোয়া উপায় 

খুব দ্রুত ওজন কমানো 

মুখে মধু মাখার উপকারিতা

রসুন খেলে কি হয়?

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 506 other subscribers

 

এছারাও আমাদের প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন।

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এএখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
SS IT BARI-সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে

 

বাংলাদেশের সবচাইতে বড় উদীয়মান প্রশ্ন এবং উত্তরের বাংলা ওয়েবসাইট এবং ইনকাম করার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম US IT BARI। আপনি এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বাংলা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রশ্ন এবং উত্তর করে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি প্রতিমাসে ঘরে বসে ভালো মানের ইনকাম করতে পারবেন। তাই এখুনি আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলুন এবং জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি ইনকাম করুন।

এ্যাকাউন্ট করতে এবং আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- www.usitbari.com 

SANAUL BARI

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment