নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার হতে কি কি লাগে?

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার হতে কি লাগে-বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মধ্যে নগদ অন্যতম একটি মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা। বর্তমানে নগদের সুযোগ-সুবিধা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় ভালো থাকায় এর গ্রাহক সংখ্যা এবং ডিলার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। যেকোনো ব্যবসার পাশাপাশি নগদের অথবা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার ডিলার ব্যবসা করলে লাভবান হওয়া যায়।

তবে নগদের ডিলার ব্যবসা করতে কিছু বিষয়ে মাথায় রাখতে হবে যেমন যে এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে সেখানে প্রসার ও সেল কেমন হবে সেই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত টাকা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে থাকতে হবে তাহলেই একজন ডিলার হওয়া যাবে।

প্রিয় SS IT BARI-ভালোবাসার টিপ ব্লগ এর পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।বরাবরের মতো আমি আজকেও একটি নতুন শিক্ষনীয় আর্টিকেল নিয়ে চলে এসেছি। আমাদের আজকের আর্টিকেলটির নগদ ডিলার সম্পর্কে। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার প্রসার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে।

তো চলুন সরাসরি করি আজকের আর্টিকেলের মূল কথা।

মোবাইল ব্যাংকিং কি

মোবাইল ব্যাংকিং হলো মোবাইল বা স্মার্টফোন দ্বারা বা ট্যাবলেটের মাধ্যমে গ্রাহক যে সকল আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করে তাকে বোঝায়। ধরন আপনি ঘরে বসে ব্যালেন্স চেক করতে চান বিল পেমেন্ট করতে চান কিংবা টাকা ট্রান্সফার করতে চান এই কাজগুলো আপনি ব্যাংকে না গিয়ে ঘরে বসে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন।ঘরে বসে নিজের মোবাইল থেকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টাকা লেনদেন করার মাধ্যম হলো মোবাইল ব্যাংকিং।

অর্থাৎ কোন মোবাইল অথবা ট্যাবলেট থেকে যখন কোন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারকারী গ্রাহক ইন্টারনেটের সাহায্যে অর্থের লেনদেন করবে তখন সেই মাধ্যমকেই বলা হয় মোবাইল ব্যাংকিং।মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা হচ্ছে এমন একটি পরিষেবা যা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত গ্রাহকদের স্মার্টফোন অথবা ফিচার ফোন বা ট্যাবলেট এর মত মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করে দুর নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার সুবিধা প্রদান করে।

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং(বিকাশ, নগদ, রকেট, ডাচ বাংলা, শিওর ক্যাশ)

অর্থাৎ একজন গ্রাহক মোবাইল এর মাধ্যমে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। মোবাইল ব্যাংকিং আর্থিক লেনদেনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে ব্যাংকিং এর বিভিন্ন রকম কাজ করার জন্য এক গ্রাহককে ব্যাংকে যেতে হয় না তিনি ঘরে বসে তার স্মার্টফোনের মাধ্যমে তা করতে পারেন।

মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা বেশি থাকায় দিন দিন এর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মোবাইল ব্যাংকিং এ নতুন নতুন কার্যক্রম যোগ হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা ২৪ ঘন্টা যাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার কি

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার বলতে নগদ এজেন্টকে বোঝানো হয়। নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার হতে হলে নগদের কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার হতে সমস্ত বিষয় সম্পর্কে নগদের প্রতিনিধিরা বুঝিয়ে দেবে। নগদ্বীপ প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ ব্যতীত নগদ ডিলার হওয়া যাবে না। প্রতিনিধিদের নির্দেশনা অনুযায়ী আপনাকে নগদের ডিলার অথবা এজেন্ট একাউন্ট তৈরি করতে হবে।

নগদের ডিলার হতে কি কি লাগে

নগদের ডিলার বা এজেন্ট হতে হলে নির্দিষ্ট কিছু জিনিস থাকতে হবে যেগুলো ছাড়া কোন ব্যক্তি নগদ এজেন্ট বা ডিলার হতে পারবে না। এই বিষয়গুলো নগদের প্রতিনিধিরা এজেন্ট বা ডিলারকে অবগত করে নেবে।

১) নগদের ডিলার বা এজেন্ট হতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নতুন নবায়ন ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।

২)ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সটি যে নামে করা হবে সেই ব্যক্তির ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি থাকতে হবে।

৩) নগদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির সিল থাকতে হবে।

৪) বর্তমানে তিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন পড়ে।

৫) এমন একটি মোবাইল নাম্বার থাকবে যেখানে কোন নগদ একাউন্ট খোলা নেই।

নগদ একাউন্ট ডিলার বা এজেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আইডি কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক। নিজ নামে নগদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে অবশ্যই যার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার আইডি কার্ড থাকবে। তবে যদি তার আইডি কার্ড না থাকে তাহলে সে অন্যের নামে বা কোন নিকট আত্মীয়র আইডি কার্ড ব্যবহার করে তাদের নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র করতে পারবে।

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার এর কাজ

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলারের কাজ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার বা এজেন্ট এর কাজের মতোই। নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলারের মাধ্যমে নগদের গ্রাহকরা টাকা সেন্ড‌ করা, টাকা উত্তোলন করা, টাকা জমা দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো করে থাকে।

গ্রাহকের প্রয়োজন অনুসারে নগদ গ্রাহককে সঠিক নিয়মে সেবা দিয়ে থাকে।

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলারের কমিশন

অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মত নগদের এজেন্ট বা ডিলারেরও কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন হয়। নগদ মোবাইল ব্যাঙ্কিং ডিলারের কমিশন হচ্ছে হাজারে চার টাকা ১০ পয়সা প্রতি এক হাজার ক্যাশ ইন বা ক্যাশ আউটে।

কোন গ্রাহক যদি ১০০০০ টাকা ক্যাশ আউট করে সে ক্ষেত্রে একজন নগদ মোবাইল ব্যাংকিং ডিলার ৪১ টাকা কমিশন পাবেন। একজন নগদ একাউন্ট ডিলার যদি প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা ব্যবসা করে তাহলে তার কমিশন হবে ৪১০ টাকা।

নগদ ডিলার বা এজেন্টকে উদ্যোক্তা ও বলা হয়। নগদ একাউন্ট ডিলার বা উদ্যোক্তার একাউন্ট থেকে একজন গ্রাহককে ক্যাশ আউট করে দিবে এবং টাকা প্রদান করবে। নগদের ডিলার বা এজেন্টের কমিশন গ্রাহকের টাকা থেকে কেটে নিতে হবে না। অটোমেটিক্যালি নগদ এজেন্ট বা ডিলারের একাউন্টে তার কমিশনের টাকা পৌঁছে যাবে গ্রাহকের ক্যাশ আউট করার সাথে সাথে।

শুধুমাত্র ক্যাশ আউট এ নয় ক্যাশ ইন করলেও নগদ ডিলার বা এজেন্টের একাউন্টে অটোমেটিকলি কমিশন পৌঁছে যাবে।

কোন নগদ এজেন্ট বা ডিলার যদি কোন গ্রাহকে টাকা ক্যাশ ইন করে তাহলে হাজার সে চার টাকা দশ পয়সা কমিশন পাবে। ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট এর কমিশন সমপরিমাণ।

তবে অনেক সময় দেখা যায় নগদ ডিলার বা এজেন্টথ্রির একাউন্টে কিছু বাড়তি কমিশন যোগ হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যাসিন অথবা ক্যাশ আউট করার ক্ষেত্রে।

নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এজেন্ট বা ডিলার সুবিধা

নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর থেকে একটু বাড়তি সুবিধা রয়েছে। নগদ মোবাইল ব্যাঙ্কিং এজেন্টরা যদি অন্য একজন এজেন্টের কাছে টাকা পাঠাতে চায় তাহলে নগদ এজেন্ট থেকে এজেন্টের টাকা পাঠানো সম্ভব যে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা গুলোর মধ্যে নেই।

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা

টাকার পরিমাণ বেশি হলে একজন নগদ একাউন্ট ডিলার আরেকজন নগদ একাউন্ট ডিলারের নাম্বারে টাকা পাঠাতে পারে। তবে অনেক বড় অংকের টাকা হলে একজন ডিলার আরেকজন ডিলারের নাম্বারে টাকা সেন্ড করতে পারে। এই পদ্ধতিটি থাকার কারণে নগদের এজেন্টদের অনেক সুবিধা হয়েছে।যে কোন স্থান থেকে সহজে একজন এজেন্ট আরেকজন এজেন্ট এর থেকে সাহায্য নিতে পারে।এটি নগদ এজেন্টদের জন্য একটি বাড়তি সুবিধা যা অনেকেরই অজানা।

নগদ বাংলাদেশের ডাক বিভাগের একটি মোবাইল একাউন্ট পরিষেবা। বর্তমানে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় নগদের খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় এর গ্রাহক সংখ্যা ও বেশি। নগদের গ্রাহক সংখ্যার সাথে সাথে এর ডিলারের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র নগদের গ্রাহকদেরই বেশি সুবিধা দেওয়া হয় তা নয় নগদের ডিলাররাও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর মত অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে।

সচারচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন: নগদ ডিলারের কমিশন কত?

উত্তর: একজন নগদ ব্যবসায়ী বা ডিলারের কমিশন হাজারে চার টাকা দশ পয়সা।

প্রশ্ন:নগদ এজেন্ট হতে হলে কি থাকতে হবে?

উত্তর: একজন নগদ এজেন্ট বাটিলার হতে হলে অবশ্যই তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে। নগদ টাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা জরুরি।

প্রশ্ন: নগদে ক্যাশ ইন কমিশন কত?

উত্তর: নগদের ক্যাশ আউট কমিশন এবং ক্যাশ ইন কমিশন একই। নগদের ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট কমিশন হাজারে ৪ টাকা ১০ পয়সা। তবে মাঝে মাঝে এই কমিশন  বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

শেষ কথা

যারা নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এর নতুন উদ্যোক্তা হওয়ার কথা ভাবছেন তারা অবশ্যই আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে জানতে পেরেছেন নগদের ডিলারের সুযোগ-সুবিধা গুলো সম্পর্কে।

ব্যক্তিগত পরামর্শ থেকে বলবো নগদের ডিলার হতে হলে উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে নগদের ডিলার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

আজকের মত এই পর্যন্তই। শেষ করছি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি। আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে আমাদের ওয়েবসাইটটি শেয়ার করবেন।

আপনার জন্য আরো –

আপনার জন্য-

মোবাইল ব্যাংকিং বলতে কি বুঝ ও মোবাইল ব্যাংকিং এর অসুবিধা

মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি

মোবাইল ব্যাংকিং বলতে কি বুঝ ও মোবাইল ব্যাংকিং এর অসুবিধা

উপায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কি সুবিধা পাবেন?

উপায় মোবাইল ব্যাংকিং কোড কত

উপায় অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ পদ্ধতি

নগদ একাউন্ট দেখার নিয়ম ২০২৩

উপায় ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি খরচ কত