রেফ্রিজারেটর কি? রেফ্রিজারেটর মানে কি? রেফ্রিজারেটর কত প্রকার ও কি কি?

সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। বন্ধুরা রেফ্রিজারেটর আমাদের সকলের ঘরেরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। কিন্তু এই রেফ্রিজারেটর আমরা ব্যবহার করলেও এই সম্পর্কে আমরা খুবই কম জানি। বিজ্ঞানের অন্যতম একটি আবিষ্কার হচ্ছে এই রেফ্রিজারেটর যা আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মকে সহজ করেছে।

বন্ধুরা আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবো রেফ্রিজারেটর আসলে কি এবং রেফ্রিজারেটর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরব। আপনারা এই সম্পর্কে জানতে আশা করছি শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকবেন।রেফ্রিজারেটর

রেফ্রিজারেটর কি?

রেফ্রিজারেটর বলতে বোঝানো হয় খাবার সংরক্ষণ করার অন্যতম একটি প্রযুক্তিকে। রেফ্রিজারেটর হলো আধুনিক বিজ্ঞানের এমন একটি আবিষ্কার যা আমাদের ঘরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। বর্তমানে সকলের ঘরেই একটি রেফ্রিজারেটর থাকে। এটি পানি থেকে শুরু করে সকল ধরনের খাবার ঠান্ডা করতে সাহায্য করে।

রেফ্রিজারেটর মানে কি?

রেফ্রিজারেটর হল এমন এক ধরনের ঠান্ডাকারী বিশেষ যন্ত্র যার সাহায্যে কৃত্রিম পদ্ধতিতে শীতলতা সৃষ্টি হয়। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় খাবার পানি সংরক্ষণ করতে পারি। যা অনেক সময় পর্যন্ত ভালো থাকে। দৈনন্দিন জীবনের খাবার দাবার সকল কিছু দীর্ঘ সময় ভালো রাখার জন্য ব্যবহার করা হয় রেফ্রিজারেটর। এই রেফ্রিজারেটরকে অনেকেই আবার ফ্রিজ বলে থাকে।

ফ্রিজের গ্যাসের দাম কত?

একটি রিফ্রিজারেটরের মধ্যেও একটা ডিপ বা‌ বরফ তৈরি করার অংশ থাকে। এছাড়াও রিফ্রিজারেটরের মত বিভিন্ন ধরনের সেলফ থাকে যেখানে আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো আমরা রেখে সংরক্ষণ করতে পারি।

রেফ্রিজারেটর কত প্রকার কি কি?

বন্ধুরা আমরা এর আগেও রিফ্রিজারেটর সম্পর্কে অনেকগুলো আর্টিকেল আপনাদের উদ্দেশ্যে লিখেছি। যেগুলো আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করলেই দেখতে পাবেন। তবে রিফ্রিজারেটর কত প্রকার ও কি কি এই সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো এই আলোচনায়। দেখে নিন রেফ্রিজারেটর এর প্রকারভেদ:

ইনবিল্ট রেফ্রিজারেটর

এই রেফ্রিজারেটরটি কিচেনে অথবা ক্যাবিনেটের সাথে ফিট করা থাকে। এই রেফ্রিজারেটর গুলোকে বলা হয় ইনবিল্ট রেফ্রিজারেটর।

বটম ফ্রিজার

এই বটম ফ্রিজার গুলোর মধ্য নিচের দিকে বরফের কম্পার্টমেন্ট থাকে এবং উপরের দিকে খাবার রাখার কম্পার্টমেন্ট থাকে।

টপ ফ্রিজার রেফ্রিজারেটর

টফিজা রেফ্রিজারেটর গুলো হরহামেশাই দেখা যায়। এই রেফ্রিজারেটর গুলোর মধ্যে পৃথক দুটো দরজা থাকে। একটিতে থাকে বরফের কম্পার্টমেন্ট এবং অন্যটিতে থাকে খাবার সংরক্ষণ করার কম্পার্টমেন্ট।

সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর

সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর বলা হয় সেই রেফ্রিজারেটর গুলোকে যেগুলো র মধ্য বড় বড় ড্রয়ার থাকে। যেখানে আমরা খাবারগুলো সংরক্ষণ করতে পারি। অর্থাৎ সবজি রাখার জন্য যে সকল ফ্রিজ ব্যবহার করা হয় তাকে সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর বলে।

এছাড়াও রেফ্রিজারেটরের মত আরো অনেক ধরণ রয়েছে। যেমন:

*ফ্রেঞ্চ ডোর ফ্রিজ।

*ওয়াইন‌ কুলার ক্লাসিক রেফ্রিজারেটর।

কত সালে রেফ্রিজারেটর আবিষ্কার করা হয়?

ফ্রেড ডব্লিউ ওল্ফ ১৯১৩ সালে মানুষের ব্যবহারের জন্য বৈদ্যুতিক ব্যবহারে রেফ্রিজারেটর আবিষ্কার করেন।তবে রেফ্রিজারেটর আবিষ্কার হওয়ার অনেক আগে থেকেই মানুষ কৃত্রিম পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণ করার কথা চিন্তা করেছিলেন। আপনি যদি ইতিহাস পর্যালোচনা করে থাকেন তাহলে দেখতে পাবেন রোমানরা এবং গ্রিকরা খাবার সংরক্ষণ করার এই ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। প্রাচীন একজন বিজ্ঞানী উইলিয়াম কুলিন সর্বপ্রথম রেফ্রিজারেটর এর সূচনা ঘটিয়েছিলেন।

তিনি এমন এক কৃত্রিম রেফ্রিজারেটরের ধারণা দিয়েছিলেন যা সত্যিই অবাক করে দেওয়ার মত এবং আমরা বর্তমানে যে সকল ফ্রিজগুলো ব্যবহার করি তার সম্পূর্ণ অবদানই হচ্ছে এই বিজ্ঞানীর। তিনি এক ধরনের বিশেষ তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন। যেই তত্ত্বতে বলা হয়েছিল খাদ্যদ্রব্য প্রচন্ড পরিমাণে ঠান্ডা হবে এমন কোন গ্যাস ব্যবহার করলে খাবারকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 

কিন্তু এটা সত্য যে তিনি এটা অনুধাবন করার পরেও রেফ্রিজারেটর নিয়ে কোন ধরনের কাজ করেননি কেননা এই ধরনের রেফ্রিজারেটর তৈরি করতে গ্যাসের প্রয়োজন হবে। আর এই গ্যাসের কাঁচামাল গুলো তিনি সংরক্ষণ করতে পারবেন না। পরবর্তী সময়ে ১৮০২ সালের মধ্য টমাস মুর নামক একজন ব্যক্তি আইস বক্স তৈরি করেছিলেন এবং এই বিশেষ বক্সকে রেফ্রিজারেশন নামে পরিচিত করেছিলেন।

তারপর থেকে মানুষের মধ্যে রেফ্রিজারেশন সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি হলো।এবং ১৯১৩ সালে গোটা বিশ্বের মধ্যে সর্বপ্রথম ইলেকট্রিক রিফ্রিজারেটর আবিষ্কার করতে সক্ষম হলেন বিজ্ঞানী ডব্লিউ ওল্ফ।

রেফ্রিজারেটরের ভেতর কিভাবে ঠান্ডা হয়?

রেফ্রিজারেটর মূলত তাপ গতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী কাজ করে থাকে।একটি ফ্রিজের মধ্য যে তরল রয়েছে সেটা একসময় গিয়ে বাষ্পে পরিণত হয়।কিন্তু বাষ্পে পরিণত হবার পরে সেগুলো উপরে উড়ে যেতে পারে না বরং ফ্রিজের মধ্যেই আটকে থাকে। আর যখন এভাবে বাষ্পের পরিমাণ আরো ঘনীভূত হয়। ঠিক সে সময় সেগুলো আবার তরলে পরিণত হয়। আর এই পদ্ধতি ক্রমাগত ভাবে চলতে থাকে।

যার কারণে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ফ্রিজের মধ্যে অনেক কম তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে। এছাড়াও রেফ্রিজারেটরের মধ্য একটি বিশেষ ধরনের গ্যাস ব্যবহার করা হয় যা একটি ফ্রিজের মধ্যে খাবারকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত টাটকা রাখে। আর সেই গেছেন নাম হলো ফেরন গ্যাস।

এই গ্যাসের মাধ্যমে তাপ চক্র কে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা হয় এর ফলে একটি ফ্রিজের মধ্যে থাকা তরল ক্রমাগত বাস্পে বাষ্পীভূত হয়। সেই বাষ্প গুলো পুনরায় তরলে পরিণত হয় এবং এভাবেই ফ্রিজকে ঠান্ডা রাখে।

কম্প্রেসার এর কাজ কি?

কম্প্রেসার এমন একটি যন্ত্র যার ইলেকট্রিক্যাল শক্তিকে kinetic শক্তিতে রূপান্তরিত করে।কম্প্রেসার হলো ফ্রিজ এসির কুলিং মেশিন যার সাহায্যে ফ্রিজ এসির কুলিং সিস্টেম কাজ করে।কম্প্রেসার এর প্রধান অংশের কাজ হল ফ্রিজ এসির ভেতরে থাকা গ্যাসকে সংকোচন করা।আর এই সংকোচনের ফলে ইভা পরেটর হতে নিম্নচাপের বাষ্পীয় হিমায়ক সংগ্রহ করে উচ্চচাপে পরিণত করে কন্ডেন্সারে পৌঁছে ফ্রিজের ভেতরে ঠান্ডা বাতাস উৎপন্ন হয়।

কম্প্রেসার কিভাবে কাজ করে?

প্রতিটি কম্প্রেসার এর ভেতরে একটা মোটর থাকে যার সাথে বাল ফ্যানের মত পাখা কয়েল রাউটার ইত্যাদি কিছু ছোট যন্ত্রের উপস্থিতি থাকে।কম্প্রেসার হলো অনেকটা সাধারন একটা ফ্যানের মটরের মতো দেখতে যা ভেতরে থাকা অবস্থায় বাতাস তৈরি করে মোটা পাই হতে চিকন পাইপে পাঠায় ফলে বাতাসের সংকোচন তৈরি হয়। কিন্তু কম্প্রেসার এর ভেতরে যতক্ষণ গ্যাস না থাকবে ততক্ষণ ঠান্ডা বাতাস উৎপন্ন হবে না।

ফ্রিজ রেফ্রিজারেটরের মধ্যে পার্থক্য কি?

অনেকেই অনেক জায়গায় ফ্রিজকে রেফ্রিজারেটর বললে কনফিউজড হয়ে যান আসলে ফ্রিজ এবং রেফ্রিজারেটর দুটো কি ভিন্ন বিষয় কিনা। কিন্তু আসলে ফ্রিজ এবং রেফ্রিজারেটর এর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই।যখন সর্বপ্রথম বিশেষ প্রযুক্তির আবিষ্কার করা হয়েছিল তখন এর নাম দেওয়া হয়েছিল রেফ্রিজারেটর কিন্তু পরবর্তী সময়ে মানুষ এই উন্নত আবিষ্কারকে ফ্রিজ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

বর্তমান সময়েও আপনি দেখতে পাবেন যে অনেকেই রেফ্রিজারেটর বলে আবার অনেকেই এটিকে ফ্রিজ বলে থাকে।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

আধুনিক রেফ্রিজারেটরি কি গ্যাস ব্যবহার করা হয়?

আধুনিক রেফ্রিজারেটরে ‌R600a এবং R134a এই গ্যাসগুলো ব্যবহার করা হয়।R600a এই গ্যাসটি আই সো বিটন একটি দাহ্য গ্যাস হলেও এটি পরিবেশবান্ধব এবং R134a এর বেশি আফিসিয়েন্ট।

ফ্রিজ রেফ্রিজেরেটর এর মধ্যে পার্থক্য কী?

আসলে ফ্রিজ এবং রেফ্রিজারেটর এর মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই।যখন সর্বপ্রথম বিশেষ প্রযুক্তির আবিষ্কার করা হয়েছিল তখন এর নাম দেওয়া হয়েছিল রেফ্রিজারেটর কিন্তু পরবর্তী সময়ে মানুষ এই উন্নত আবিষ্কারকে ফ্রিজ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

রেফ্রিজারেটরে কোনটি ব্যবহার করা হয়?

রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত তরলের নাম হলো ফ্রেয়ন।এটি বাষ্পীভবনের জন্য প্রয়োজনীয় সুপ্ততাপ রেফ্রিজারেটরের ভেতরে রাখা খাদ্যদ্রব্য থেকে আসে। যার ফলে নিম্ন তাপমাত্রার সৃষ্টি হয় এবং এতে খাদ্যদ্রব্য বা অন্যান্য সামগ্রী অনেকদিন পর্যন্ত তরতাজা থাকে।

আমাদের শেষ কথা-

আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে রেফ্রিজারেটর কি? রেফ্রিজারেটর মানে কি? রেফ্রিজারেটর কত প্রকার ও কি কি? এই সম্পর্কে। ইতোমধ্যেই আপনারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এ বিষয়ে কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

আপনাদের যদি আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল গুলো ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন আমাদের ওয়েবসাইটের কথা। আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করবেন। আজকের মতো এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

আপনার জন্য আরো 

আপনার জন্য-

ওয়ালটন ফ্রিজ প্রাইজ ইন বাংলাদেশ ২০২৩.

ওয়ালটন ডিপ ফ্রিজের দাম ২০২৩

ফ্রিজের পাওয়ার কত রাখবেন? 

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers

 

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।