অর্শ বা পাইলস রোগের লক্ষণ –পাইলস রোগটি বর্তমান সময়ে অতি পরিচিত একটি রোগ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এই রোগটি শিশু ও বৃদ্ধ বয়সে বেশি হয়। তবে যে কোন বয়সের যে কোন মানুষেরই রোগটি হতে পারে এক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এই রোগটি হলে অপারেশন করে এটির চিকিৎসা করা হয়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় দেখা দিলে ওষুধের মাধ্যমেও রোগটি ভালো হয়ে যায়।
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা এই রোগে যারা আক্রান্ত কিংবা এই রোগ সম্পর্কে যাদের জানার কৌতূহল আছে আজকের আর্টিকেলে তাদের জন্য আমি তুলে ধরার চেষ্টা করব এই রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা। আপনারা শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ে আমাদের সাথে থাকুন।
অর্শ বা পাইলস রোগ কি
অর্শ মলদ্বারের একটি জটিল রোগ এই রোগে মলদ্বারের বাইরে বা ভেতরে একপাশে বা চারপাশে একটি বা একাধিক গোলাকৃতি বা সুচাল গুটিকা দেখা দেয়। এই গুটিকাগুলোকে আমরা আঞ্চলিক ভাষায় বলি গেজ। পায়খানা করার সময় এই বলগুলো থেকে অভ্যন্তরীণ সমস্যার অনুপাতে কারো অধিক পরিমাণে কারো স্বল্প পরিমাণে রক্ত ঝরে। আবার অনেকের রক্ত যায় না।
জলাতঙ্কের লক্ষণ এবং টিকা
অনেকের ব্যথা থাকে অনেকের থাকে না।চিকিৎসা বিজ্ঞানে আদি থেকে এইরূপটি চিকিৎসকদের কাছে পরিচিত। এই রোগের রোগীর বায়ু পথ মলদ্বারের বাইরে বেরিয়ে আসে। বিশেষত পায়খানা করার সময় বাইরে ঝুলে পড়ে। এরপর রোগী হাত দিয়ে এটিকে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়।
পাইলস রোগের কারণ
এই রোগটি শিশু ও বৃদ্ধ বয়সে বেশি দেখা যায়। মহিলাদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বাচ্চাদের সাধারণত তীব্র ডায়রিয়ার পর এই রোগটি দেখা দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে পাইলস রোগ হতে পারে। চলুন দেখে নিন পাইলস রোগের কিছু সাধারণ কারণ-
১) দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।
২) শরীরের অতিরিক্ত ওজন।
৩) মহিলাদের গর্ভাবস্থায় জরায়ুর উপর চাপ পড়লে।
৪) লিভার সিরোসিস।
৫) মলত্যাগের বেশি চাপ দেওয়া।
৬) শাকসবজি ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম খাওয়া।
৭) পরিবারের কারো পাইলস থাকা মানে বংশগত।
৮) ভার উত্তোলন।
৯) দীর্ঘ সময় বসে থাকা।
১০)যাদের প্রায় চিকেন ফ্রাই, ড্রাই ফাস্টফুড, সব ধরনের কাবাব যেমন বাটি কাবাব, টিক্কা কাবাব, গ্রিল কাবাব বিবিধ খাবারের অভ্যাস আছে।
অর্শ বা পাইলসের লক্ষণ
রোগীরা সাধারণত অভিযোগ করেন যে তাদের মলদ্বার পায়খানা করার সময় অনেকখানি নিচে ঝুলে পড়ে। এবং চাপ না দিলে ভেতরে যায় না। ওজন তুললে অথবা কাশি দিলেও কখনো কখনো বেরিয়ে আসে। সাধারণত রক্ত যায় না। তবে মিউকাস বা আম যায় যখন বায়ু পথ বেশি ঝুলে পড়ে এবং ঢোকানো যায় না তখন রক্ত যেতে পারে। প্রায় অর্ধেক রোগী কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। পাইলস রোগের যে সমস্ত লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো দেখা দেয় সেগুলো হচ্ছে-
১) পায়খানা করার সময় অত্যধিক বা অল্প পরিমাণে রক্ত যেতে পারে।
২) গুহ্যদ্বারে জ্বালাপোড়া ও ফুলে যায়।
৩) টাটানি ও যন্ত্রণা।
৪) কাটাবিদ্ধ অনুভূতি।
৫) মাথা ধরা ও মাথা ভারবোধ।
৬) ওরুদেশ বক্ষ নাভির চারপাশে ব্যথা ও মলদ্বারে ভারবোধ।
৭) কোমর ধরা ও কুষ্ঠবোধ্যতা।
পাইলস রোগ প্রতিরোধে করণীয়
পাইলস যেহেতু একটি জটিল রোগ এবং এই রোগে রোগীদের অনেক বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় তাই সময় মত এই রোগ প্রতিরোধ করতে কিছু নির্দিষ্ট করণীয় রয়েছে। যেগুলো পালনের মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা যেতে পারে। জেনে নিন পার্লস রোগ প্রতিরোধে করণীয় গুলো কি কি;
১) কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং নিয়মিত মল ত্যাগ করা।
২) বেশি পরিমাণে শাক-সবজি ও অন্যান্য আশ্চয্যক্ত খাবার এবং পানি (প্রতিদিন ১২ থেকে ১৮ গ্লাস) পান করা।
৩) সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা।
৪) প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো।
৫) শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা।
৬) টয়লেটে অধিক সময় ব্যয় না করা।
৭) সহজে হজম হয় এমন খাবার গ্রহণ করা।
৮) ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন চিকিৎসা গ্রহণ না করা।
৯) মল থেকে বেশি চাপ না দেওয়া।
১০) দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তার চিকিৎসা নেওয়া।
১১) চিকিৎসকের পরামর্শ মত বিশ্রাম করা।
১২) পেটে হজম হতে চায় না এমন খাদ্য বর্জন করা।
১৩) হাতুড়ে ডাক্তার বা কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা না করা।
১৪) অধিক মসলা জাতীয় খাদ্য পরিহার করা।
পাইলস রোগীর জন্য গ্রহণীয় খাদ্য
পাইলস রোগীর সব ধরনের খাবার খাওয়া উচিত নয়। তাই কিছু নির্দিষ্ট খাবার রয়েছে যেগুলো এই রোগী খেতে পারবে। সেই খাবারগুলো হলো-
শাকসবজি, ফলমূল, সব ধরনের ডাল, সালাদ, দধী, পনির, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লেবু ও এ জাতীয় টক ফল, পাকা পেঁপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগির মাংস, ভুষিযুক্ত (ঢেঁকি ছাটা) চাল, আটা ইত্যাদি।
বাত ব্যাথির কারণ এবং ঝুঁকি সমূহ
এই ধরনের খাবারে কিছুটা অভ্যাস গড়ে তুললে এই রোগ থেকে কিছুটা প্রতিকার সম্ভব। আর যাদের অর্শ হয়ে গেছে তারা এই খাবারগুলি অবশ্যই খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
পাইলস আক্রান্ত রোগীর বর্জনীয় খাবার
গরু, খাসি ও অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার, বিশেষ করে শুটকির ভুনা, চা, কফি, চিজ, মাখন, চকলেট, আইসক্রিম, কোমল পানীয় ইত্যাদি খাবারগুলো পাইলস রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর।
এছাড়াও পরোটা, লুচি, পুরি, পিয়াজি, সিঙ্গারা, চিপস, ইত্যাদি খাবারগুলি বর্জন করতে হবে। চিকেন ফ্রাই ড্রাই ফাস্ট ফুড সব ধরনের কাবাব যেমন বাটি কাবাব, টিক্কা কাবাব, গ্রিল কাবাব, অতিরিক্ত ঝাল, ভোনা খাবার, কাঁচা লবণ, দেশি-বিদেশি হরেক রকমের বাহারি নামের অস্বাস্থ্যকর খাবারগুলি বর্জন করতে হবে।
অর্শ বা পাইলস রোগের চিকিৎসা
যে ধরনের পাইলসি হোক না কেন এর চিকিৎসা অপারেশন। তবে কোন রোগী রোগীদের চিকিৎসার জন্য অনুপযুক্ত বিবেচিত হন বা অপারেশন করতে রাজি না হয় তাহলে কিছু রক্ষণশীল পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। যেমন মলত্যাগের সময় মলদ্বার হাত দিয়ে চেপে উপরের দিকে রাখতে হয়, নিস্তব্ধ দুটিকে টেপ দিয়ে আটকে রাখা, মলদ্বারের মাংসপেশির ব্যায়াম, রিং লাইগেশন পদ্ধতি ইত্যাদি।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে পাইলস বা হোমোরায়েড বলে সেটিকে অপারেশনের পর আবার হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা দুইভাগ বেশির ভাগ। রোগী যারা পাইলস আবার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা এটি বলতে সাধারণত বুঝান মলদ্বারে বাড়তি ত্বক বা মাং পিণ্ড অথবা চুলকানি হয়েছে। এটি কেউ কেউ আবার পাইলস হয়েছে বলে ধরে নেন। এই সমস্যাগুলো পাইলস আবার হয়েছে বোঝায় না মলদ্বারের চুলকানি বিভিন্ন রোগের একটি লক্ষণ মাত্র।
অপারেশনের পর অল্প কিছু ক্ষেত্রে যখন আবারও পাইলস দেখা দেয় তখন এগুলোর উপসর্গ ততটা তীব্র হয় না। এটিকে তখন বিনা অপারেশনের রিং লাইগেশন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা সম্ভব। সাধারণত আবার অপারেশনের প্রয়োজন এগুলোতে হয় না।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
কোন বয়সে পাইলস রোগের সম্ভাবনা বেশি?
উত্তর: সাধারণত রোগটি শিশু এবং বৃদ্ধ বয়সে বেশি হয়ে থাকে।
হার্টের রোগীদের পাইলস হলে করণীয় কি?
উত্তর:অনেকে আছেন পাইলসকে অবহেলা করেন। যদি পাইলস থাকা অবস্থায় কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তাহলে হৃদরোগের চিকিৎসার পূর্বে পাইলস অপারেশন করে আসা প্রয়োজন।
অপারেশনের পর আবার কি পালস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
উত্তর: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপারেশনের পর পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।তবে যদি হয় তাহলে শতকরা 2% রোগীর অপারেশনের পর পারস হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কিন্তু তা অতীতের মতো তীব্র হবে না। এতে অপারেশনের প্রয়োজন হবে না।
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি পাইলস রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে। আপনারা এতক্ষণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিশ্চয়ই এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের ওয়েবসাইটে আরও বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পেতে অবশ্যই নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আর অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের সাথে থাকবেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
[বিশেষ দ্রষ্টব্য: উল্লেখিত সকল তথ্যগুলো সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর। কোথাও ভুল ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।]
পোস্ট ট্যাগ-
অর্শ রোগ থেকে মুক্তির উপায়,অর্শ রোগ হলে কি কি খাওয়া নিষেধ,পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয়,পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়,কি খেলে পাইলস ভালো হয়,অর্শ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা,পাইলস এর লক্ষণ,পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ।
আপনার জন্য আরো –
- ইংলিশে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ইউটিউবে – ব্লগিং,ইউটিউবিং,ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত ভিডিও পেতে–এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে- ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত সকল ভিডিও পেতে –এখানে ভিজিট করুন।
আপনার জন্য-
অ্যাজমা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা
থাইরয়েড রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়
চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকারী চিকিৎসা
যক্ষা বা টিবি রোগের লক্ষণ
ক্যান্সার রোগের যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না
শ্বেতী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”
প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন
SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।

SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ টিম