বদহজম কি?বদহজম একটি বিরক্তিকর সমস্যা, যা মাঝেমধ্যে খুবই প্রকট হয়ে উঠতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় পরিপাকতন্ত্রে তেমন কোনো বড় সমস্যা না থাকা সত্যেও অনেকের খাদ্য হজমযহতে চায়না। সামান্য কিছু খেলেই পেট কামড়ায় তবে পায়খানা করলে অস্বস্তি বোধটা কমে যায়। এছাড়া অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য সহ পাতলা পায়খানা বেশি হতে পারে এ ধরনের সমস্যাকে বদহজম বলা হয়।
অতিরিক্ত বদহজম থেকে বুকের ব্যথাও হতে পারে।
পাতলা চুল ঘন ও সুন্দর করার সবচেয়ে সহজ উপায়
বদহজম এর লক্ষণ কি কি?
বদহজম এর প্রধান লক্ষণ গুলি হলো
– বুক জ্বালা
– তলপেটে অস্বস্তি
- – শরীর ফোলা লাগা
- -গা গোলানো বা বমি ভাব
- – মুখের স্বাদ পরিবর্তন হয় যাওয়া
- -একনাগাড়ে ঢেকুর বা হেঁচকি ওঠা
- -ব্যথা, ঘন ঘন বমি, বমির সাথে রক্ত পড়া, ওজন বা খাবার ইচ্ছা কমে যাওয়া
- – কালো আলকাতরার মতন স্টুল
- -গিলতে সমস্যা বা কষ্ট হওয়া, ননএপিগ্যাসট্রিক অঞ্চলে ব্যথা, ঘাম
- -কম নিঃশ্বাস পড়া অথবা চোয়াল, গলা-ঘাড় বা হাত থেকে ব্যথার অনুভূতি।
বদহজম এর প্রধান কারণগুলি কি কি?
ক্রনিক গ্যাস্ট্রোইসোফেগাল রিফ্লাক্স রোগ বা পেটে আলসার বা ঘা থেকেই সাধারণত বদহজমের উপসর্গগুলি তৈরী হয়।
- -অনুপযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস।
- -দীর্ঘ সময়ের পর খাবার খাওয়া।
- -প্রচুর মাত্রায় ফ্লেভার যুক্ত খাবার খাওয়া।
- – অ্যালকোহল বা মদ পান করার কারণে বদহজম হয়।
- – মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা, খাদ্যাভ্যাসে ভুল, ভরপেট খাওয়ার পর ব্যায়াম করা।
- -অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ খাওয়া।
- -ধূমপান করা, মদ্যপান, অতিরিক্ত কফি পান করা।
- -অনিদ্রা বা ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার কারণে বদহজমের সমস্যা বেড়ে যায়।
বদহজমের সমস্যা কিভাবে নির্ণয় করা হয়?
বদহজম সমস্যা নির্ণয় করবার জন্য, ডাক্তার একজন মানুষের চলতি উপসর্গ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন।
পেপটিক আলসারের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া থেকে বদহজম হচ্ছে বলে সন্দেহ হলে ডাক্তার রক্ত, স্টুল অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের পরীক্ষা করাতে পারে।
বদহজমের তীব্র এবং দীর্ঘকালস্থায়ীত্বের ক্ষেত্রে, আলসার বা গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স চেক করার জন্য ডাক্তার আপনার এন্ডোস্কোপি করাতে পারে।
লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা- জেনে নিন
বদহজমের রোগীদের খাবার:
– ময়দার রুটি বা পাউরুটি, সরু বা আতপ চালের ভাত, পোলাও, সাদা আটার রুটি ইত্যাদি খাবার নিয়মিত বদহজম হয় এমন রোগীর না খাওয়াই ভালো।
– চিপস, কুকিজ বা বেকারির বিস্কুট, কফি ও কার্বনযুক্ত পানীয়ও তাদের জন্য খারাপ।
– মাংসের তৈরি খাবারও তাদের সমস্যা বাড়াতে পারে।
– রোগীদের জন্য পূর্ণ দানাদার শস্যের তৈরি খাবার উপকারী। যেমন : লাল চালের ভাত, লাল আটার তৈরি রুটি, ওটমিল, বরবটি, মটরশুঁটি, তাজা ফলমূল ও শাকসবজি তাদের জন্য ভালো।
-শুষ্ক ফল যেমন কিশমিশ খেতে পারেন। প্রচুর পানি পান করতে হবে। আঁশযুক্ত খাবারও খেতে হবে।
বদহজমের প্রতিরোধ:
- -বদহজম প্রতিরোধ করবার জন্য কিছু কার্যকারী পরামর্শ দেওয়া হল-
- -মুখ খুলে খাবার চিবোবেন না এবং চিবানোর সময়ে কথা বলবেন না অথবা খুব তাড়াতাড়ি খাবেন না, কারণ না হলে অনেকটা হাওয়া গিলে নেবার জন্য বদহজম বেড়ে যায়।
- -খাবার সময়ে পানি না খেয়ে খাবার খাওয়ার শেষে পানি খান।
- -বেশী রাত করে খাবেন না।
- -খাবার খাওয়ার পরে বিশ্রাম নিন।
- -ধূমপান বন্ধ করুন।
- -মদ্যপান করবেন না।
বদহজমের ঘরোয়া সমাধান
বদহজম এর ফলে কখনো কখনো পেটে ব্যথাও থাকতে পারে। এই পেট ভোলা ভাব ও বদহজম থেকে শুরু হয় কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাতলা পায়খানা। এই সমস্যার নিরাময়ে ওষুধ না খেয়ে শুরুতেই ঘরোয়া কিছু সমাধান গ্রহণ করলেই সমাধান মিলবে। জেনে নিন উপায়-
১। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি দ্রুত খাবারকে হজম করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন; তাদের উচিত পচুর পানি পান করা।
২।পেটে ফোলাভাব ও অস্বস্তি হলে কখনো শুয়ে থাকবেন না। বরং কয়েক ঘণ্টা বসে, দাঁড়িয়ে বা হাঁটাহাঁটির মধ্যে থাকুন। শুয়ে থাকলে পেটের অস্বস্তি আরও বাড়বে।
৩।হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। দেখবেন ভালো লাগবে। এ ছাড়াও হিটিং ব্যাগের সাহায্যে পেটে তাপ প্রয়োগ করুন অন্তত ২০ মিনিটের জন্য।
?? গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন ??
৪।কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এক চিমটি বেকিং সোডা ও লেবুর রস এ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে বদহজমের সমস্যা থেকে দ্রুত মেলে। এই মিশ্রণ কার্বনিক অ্যাসিড উত্পাদন করে, যা গ্যাস এবং বদহজম হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। সেইসঙ্গে এটি লিভারের ক্ষরণ এবং অন্ত্রের গতিশীলতাও উন্নত করতে পারে।
৫। হজমের সমস্যার দ্রুত সমাধানে আছে আদায়। আর বদহজম দূর হয়ে গেলে আপনাআপনিই পেটে ফাঁপার সমস্যা কমে যায়। প্রতিদিন খাবার পর এক টুকরা আদা চিবিয়ে খেলে পেটে আর গ্যাসের সম্যসা করবে না।
৬।পেট ফাঁপলে আদা কুচি করে সামান্য লবণ মাখিয়ে খেয়ে নিতে পারেন অথবা আদা ছেঁচে লবণ দিয়ে আদার রস পান করে নিতে পারেন। এছাড়াও আদা চা তৈরি করে পান করুন সকাল বিকাল। এতে করে পেট ফাঁপা অনেকটা উপশম হয়ে যাবে।
৭।শসা খেলে পেট ঠাণ্ডা থাকে। এতে থাকে ফ্লেভোনয়েড ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায়।
৮।টকদই অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। এর ফলে ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক উন্নত হয় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে পেট ফাঁপা ও বদহজমের সমস্যা কমে।
৯। পেঁপেও বদহজম থেকে রক্ষা করে। এতে থাকে পাপায়া নামক এনজাইম, যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
১০।কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে দ্রুত পেট ফাঁপার সমস্যার সমাধান হবে। যদি কাঁচা খেতে না পারেন; তাহলে আদার মতো হলুদ ছেঁচে নিয়ে পানিতে জ্বাল দিয়ে চা তৈরি করে পান করে নিন।
১১। হজমের জন্য খুবই ভালো এই মসলাটি। এক গ্লাস পানিতে আধা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো বা আস্ত দারুচিনি ফুটিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে গ্যাস দূরে থাকবে।
আরও পড়ুন-
৬ মাস থেকে ৫ বছরের বাচ্চার খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা দিন শেষ
চুল পড়া বন্ধের উপায় যেনে নিন
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ঘরোয়া উপায়
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।