তারাবি নামাজ কিভাবে এলো – তারাবির নামাজের ইতিহাস এবং তারাবি নামাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানুন

তারাবি নামাজ কিভাবে এলো -মাহে রমজানের রোজা তারাবির নামাজ কোরআন তেলাওয়াত ও অন্যান্য এবাদত আল্লাহ তায়ালার রোজাদার ব্যক্তি আগের সব গুনাহ মাফ করে দেন।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে পূর্ণ লাভের আশায় রোজা রাখে তারাবি নামাজ পড়ে এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর এবাদত করে তার জীবনের আগের সব গুনাহ মাফ করা হবে। (বুখারী ও মুসলিম)তারাবি নামাজ কিভাবে এলো

রমজান মাসে রসূল সাঃ নিজে তারাবির নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু প্রিয় পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ এর পক্ষ থেকে সবাইকে জানাচ্ছি আজকের আর্টিকেলে স্বাগতম। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তারাবি নামাজের ইতিহাস ও তারাবি নামাজ এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে লেখা হয়েছে।এ বিষয়ে যাদের ধারণা কম তারা আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিজেদের ধারণা বৃদ্ধি করতে পারেন।

চলুন বন্ধুরা আজকের মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

তারাবীহ নামাজ কি

ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মুসলমানদের জন্য পবিত্র রমজান মাস।রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবির নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলার রমজানের রোজাগুলো ফরজ করেছেন এবং এর রাতে তারাবি নামাজের জন্য দন্ডায়মান হওয়াকে বিশেষ পণ্যের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

মাহে রমজানের রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নত এর পর এবং বেতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে দশ সালামের যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয় একে তারাবির নামাজ বলা হয়।

আরবি তারাবি শব্দটির অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা ।তারাবি নামাজ পরাকালে প্রতি দুই রাকাত বা চার রাকাত পর পর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই তারাবি। দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘবের জন্য প্রতি দুই রাকাত বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তাসবিহ করা হয় বলে এই নামাজকে সালাতুত তারাবি বা তারাবি নামাজ বলা হয়।

তারাবি নামাজের জামাতে পবিত্র কুরআন খতম করা হয় তাই জামাতে তারাবি নামাজ পড়লে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়। রমজান মাসে তারাবি নামাজের কিয়াম হলো আল্লাহর রাস্তায় আরাম কে হারাম করে কঠোর পরিশ্রম করার সম্পদ অনুষ্ঠান।

তারাবি নামাজের ইতিহাস

রমজানের রোজার সঙ্গে সঙ্গে যে এবাদতের নাম সর্বাগ্রে আসে তা হল তারাবির নামাজ। তারাবি শব্দের আভিধানিক অর্থ বিশ্রাম। তারাবির নামাজ মূলত তাহাজ্জুদ নামাজেরই আরেকটি নাম। কিন্তু রমজান মাসে সর্বসাধারণ যেন এ থেকে কল্যাণকামী হতে পারে তাই রাতের প্রথম ভাগে অর্থাৎ এশার নামাজের পরপরই এই নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

তারাবীহ নামাজ কোন নিয়মে পড়বো? 

তারাবি নামাজ সম্পর্কে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, একদিন গভীর রাতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে গেলেন এবং নামাজ পড়লেন কিছু লোক ও নবীজির পেছনে তখন নামাজ পড়লেন। ভোর হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম পরস্পরের সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করায় দ্বিতীয় রাতে লোক সংখ্যা আরো বেড়ে গেল এবং তারা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে নামাজ পড়ল। সেদিন ভোর হওয়ার পর লোকদের মধ্যে আরো বেশি আলোচনা হল এবং তৃতীয় রাতে মসজিদে লোক সমাগম আরও বেশি হল।

মহানবী সাঃ বাইরে বের হয়ে নামাজ পড়লেন আর তারাও নবীজির সঙ্গে নামাজ পড়লেন যখন। চতুর্থ রাত এলো তখন এত লোক সমাগম হলো যে মসজিদে স্থান সংকলন হলো না। কিন্তু তিনি এ রাতে তারাবির নামাজের জন্য বের হলেন না ভোর হলে ফজরের নামাজের জন্য বের হলেন এবং ফজরের নামাজ শেষে লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাশাহুদ পাঠের পর বললেন, তোমাদের বিষয়টি আমার কাছে গোপন ছিল না। কিন্তু আমি আশঙ্কা করেছিলাম এই নামাজ না আবার তোমাদের ওপর ফরজ করে দেওয়া হয়। আর তোমরা তা পালনে ব্যর্থ হও। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলেন এবং এই নামাজের বিষয়টি তেমনি রইলো। (বুখারী)

তারাবির নামাজ নিয়ে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশ

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে তারাবি নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ আছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গেও সওয়াবের আশায় রমজানে তারাবির নামাজ আদায় করে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।( বুখারী ও মুসলিম আবু দাউদ নাসাঈ) হযরত ওমর বিন মুররাহ আলজুহানি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন কুজা আহ গোত্রের এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল আমি যদি এই মর্মে সাক্ষ্য দেই যে আল্লাহ ছাড়া এবাদত এর উপযুক্ত কোনো উপাস্য নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি রমজান মাসের সিয়াম পালন করি তারাবি সালাত আদায় করি ও যাকাত প্রদান করি তাহলে আমার ব্যাপারে আপনার মতামত কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি এর উপর মৃত্যুবরণ করবে সে সত্যবাদী ও শহীদদের মতো গণ্য হবে। (ইবনে খুজাইমা ইবনে হিব্বান তারগিব)

আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসা পেতে হলে নফল ইবাদত একান্ত প্রয়োজন আমরা যেন পবিত্র এই রমজানে ফরজ এবাদতের পাশাপাশি অনেক বেশি নফল ইবাদত করতে পারি আল্লাহ তা’আলা আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

তারাবির নামাজে তাড়াহুড়া করার বিধান

তারাবির নামাজ আদায়ের অতিমাত্রায় তাড়াহুড়া করা এবং তারাবির নামাজ আদায়ের অবহেলা করা একটি শরীয়ত পরিপন্থী কাজ। যেমন মুরগির ঠোকর দেওয়ার মতো করে নামাজ আদায় করা এবং তারাবির নামাজে কুরআন খতম করার উদ্দেশ্যে তাড়াতাড়ি কেরাত পড়া। শেখ জামাল উদ্দিন আল কাসেমী রহঃ বলেন, মনে রাখতে হবে তারাবির নামাজ রমজান মাসে অবশ্যই সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।

অধিকাংশ মসজিদে ইমামদের দেখা যায় তারা তাদের মসজিদ সমূহে তারাবির নামাজ তাড়াহুড়া করে তারাবির নামাজ আদায় করতে অভ্যস্ত। ফলে তারা নামাজের আরকাম সুন্নাত ইত্যাদি আদায়ের অবহেলা করে। নামাজ তাড়াহুড়া করে শেষ করার প্রবণতায় তারা রুকু সিজদা আদায়ের ধীরস্থিরতা ছেড়ে দেয়। কেরাত পড়তে তাড়াহুড়া করে এবং কোরআনের আয়াতের শব্দগুলোকে পরিবর্তন করে। ফেলে অতএব এই ধরনের নামাজ এবং নেক আমল দ্বারা শয়তান ঈমানদারকে ধোঁকা দেওয়া ও তাদের বোকা বানানো চক্রান্ত শয়তান তাদের আমল করা সত্ত্বেও আমল টিকে নষ্ট করে দেয়। এবং যারা এই ধরনের তাড়াহুড়ার অনুকরণ করে তাদের নামাজ অনেক সময় ইবাদতের পরিবর্তে হাসি ঠাট্টায় পরিণত হয়।

তাই আমরা বলি একজন মুসল্লির উপর কর্তব্য হলো সে তার নামাজের বাহ্যিক যেমন, কিরাত দাঁড়ানো, রুকু, সেজদা, ইত্যাদি এবং আধ্যাত্মিক যেমন একাগ্রতা অন্তরের উপস্থিতি পরিপূর্ণ ইখলাস কিরাত এবং নামাজের তাসবিহ ইত্যাদি অর্থের মধ্যে চিন্তা ফিকির করা‌। নামাজের বাহ্যিক সৌন্দর্য হলো মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে সম্পৃক্ত। আর নামাজের বাতিনি সৌন্দর্য, সৌন্দর্য নামাজের অন্তর বা আত্মার সাথে সম্পৃক্ত।

ইমাম গাজ্জালী রহঃ বলেন, যে ব্যক্তি নামাজের বাহ্যিক দিকটি লক্ষ্য রাখেন কিন্তু আধ্যাত্মিকতার প্রতি তেমন কোন গুরুত্ব দেন না তার একটি দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির মত যে কোন একজন বাদশা কে একটি মৃত ছাগলের বাচ্চা উপহার দিল। আর যে ব্যক্তি নামাজের জাহিরি কাজগুলোতে শৈথিল্য প্রদর্শন করে তার দৃষ্টান্ত ওই ব্যক্তির নেয় যে কোন বাচ্চাকে একটি কানকাটা উভয়চক্র নষ্ট এমন একটি জন্তু হাদিয়া দিলেন।

মনে রাখতে হবে, এখানে এই দুইজন লোকই একজন বাদশা মান হানি করেছে এবং বাদশার মর্যাদা কে খাটো করেছে।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ যেভাবে তারাবির নামাজ আদায় করেন তার সম্পূর্ণ শরীয়তের পরিপন্থী।তারা তারাবির নামাজে এত দ্রুত আদায় করে নামাজের ওয়াজিব নামাজের ধীরু স্থিরতা এবং শান্তি সৃষ্ট তা বজায় ইত্যাদির প্রতি কোন গুরুত্ব প্রদান করা হয় না ।তারা তাদের পেছনের নামাজি অসুস্থ রোগী দুর্বল এবং বৃদ্ধদের শুধু শুধু কষ্ট দেয় এবং তারা নিজেদের উপর অত্যাচার করে এবং অন্যদের উপর অত্যাচার করে।

বিজ্ঞ আলেমগণ বলেন, একজন ইমামের জন্য এত তাড়াহুড়া করা যাতে তার পেছনে নামাজীরা সুন্নত আদায় করতে পারেনা। তাহলে তার নামাজ অবশ্যই মাকরূহ হবে। আর যদি ইমাম এমন তাড়াহুড়া করে যার ফলে নামাজীরা তার পেছনে ফরজ আদায় করতেও সক্ষম হয় না। তার পরিণতি কি হতে পারে? আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।

তারাবির নামাজের জন্য ইমাম টাকা চাইতে পারে কিনা

ইমাম সাহেব তারাবির সালাতের জন্য বা কিয়ামু রমাদানের জন্য যদি টাকা চান এবং সেটা তিনি নিজেই যদি দাবি করে থাকেন অথবা শর্ত করে থাকেন তাহলে একদল উলামায়ে কেরাম বলেছেন তার এই কাজটি শুদ্ধ নয় বা এভাবে টাকা নেওয়াটা বৈধ নয় জায়েজ নয়। তবে তারাবির সালাত হোক বা নফল সালাত হোক একজন ব্যক্তি যদি পরিশ্রম করেন সে ক্ষেত্রে উচিত হবে তাকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করা।

যারা ব্যবস্থাপনায় আছেন তারাই এই ব্যবস্থা করবেন এখন সাহায্য না করে যদি আপনি মনে করেন ইমাম গোল্লায় যাক তাতে আমার প্রয়োজন কি? তাহলে সালাতটা আদায় করবে কে? ইমামের তো পরিবার আছে প্রয়োজন আছে। ইমাম সাহেব কি আপনার বাসায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া করবেন নাকি নিজের বাসায় খাওয়া দাওয়া করবেন? তাকে তো ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবে। মসজিদে সালাত আদায় করার পর ইমাম সাহেব কি ভিক্ষাবৃত্তি করবেন?

আমাদের একটু বিবেক থাকা দরকার সেটা হচ্ছে এই ইমাম হোক বা মুয়াজ্জিন হোক যেই হোক না কেন তাদের বেতন এত কম যে এই বেতনে এই পৃথিবীতে থাকা প্রায় অসম্ভব। আমি এমন এক ব্যক্তিকে পেয়েছে যিনি ৩০০ টাকা বেতনে চাকরি করেছেন এবং করেছেন যে আমি 36 বছর এখানে কাজ করি এখনো তার বেতন 300 টাকা।

আমরা কত জায়গায় কত টাকা অপচয় করি কিন্তু ইমাম-মুয়াজ্জিনকে টাকা দিতে কুণ্ঠিত হই। সেখানে আবার তারাবির সালাতে ইমাম সাহেব যদি টাকা চান চাওয়াটা ইমাম সাহেবের ভুল কোন সন্দেহ নেই। হয়তো ইমাম সাহেব বুঝতে পারেননি। কিন্তু ইমাম সাহেবকে টাকা চাইতে হল কেন তাকে চাইতেও হওয়ার পরিবেশটা তৈরীর পেছনে যারা আছেন কোথায় তাদের ব্যবস্থাপনা? কোথায় উপলব্ধি? কোথায় ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা?

২০২৩ সালের রোজার খাবার তালিকা

ইমাম সাহেবের টাকা চাওয়ার কারণটা এটাই, যারা ব্যবস্থাপনায় আছেন তারা মানবিক নন। ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের দিকে তাদের দৃষ্টিতে তেমন স্পষ্ট নয়। একজন লোক ৩০ দিনে যদি কোরআনে কারিম খতম করেন তাকে দিনের অনেকটা সময়ের পিছনে খাটতে হয়। এটা যথেষ্ট পরিশ্রমের কাজ।

এখন সেখানে যদি তাকে কিছু সহায়তা না করা হয় তাহলে তিনি কাজটি কিভাবে করবেন। এজন্য সেখানে বিবেকের বিষয় আছে। সেখানে যুক্তির বিষয় আছে। এগুলো সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান নিতে হবে। ইমাম সাহেব কেন চেয়েছেন? তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো ইমাম সাহেবকে চাইতে হল কেন?

নাবালেক হাফেজের পেছনে তারাবির নামাজ পড়া জায়েজ কি

অনেক মসজিদে দেখা যায় ছোট ছোট হাফেজরা তারাবির নামাজ পড়ায়।

তারাবির নামাজ না বালেগের পেছনে বালেগীর ইকতিদা সহিহ নয়। আর তারাবির যেহেতু কাজা নেই তাই বিগত দিনের তারাবি কাজা করতে হবে না।

তারাবির নামাজ না পড়লে রোজা হবে কিনা

তারাবির নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করার জন্য বিশেষ উৎসাহ প্রদান করতেন।

তারাবি নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সোয়াব প্রাপ্তির আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে তার অতিতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়। (বুখারী শরীফ মুসলিম শরীফ)

পবিত্র রমজানে রোজা তারাবির নামাজ কোরআন তেলাওয়াত ও অন্যান্য এবাদতের দরুন আল্লাহতালা রোজাদার ব্যক্তির পূর্বে সব গুনাহ মাফ করে দেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন যে ব্যক্তি ঈমান ও আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে পূর্ণ লাভের আশায় রোজা রাখেন তারাবি নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর এবাদত করেন তার জীবনের পূর্বের সব গুনাহ মাফ করা হয়।( বুখারী শরীফ মুসলিম শরীফ)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সর্বদা তারাবির নামাজ আদায় করতেন তবে তিনি মাত্র চার রাত তারাবির নামাজ জামাতে পড়েছিলেন। কারণ যদি তিনি সর্বদা জামাতে তারাবি নামাজ আদায় করতেন তাহলে তার উম্মতেরা ভাবতো, হয়তো এই তারাবির নামাজ ফরজ।

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুইরাতে ২০ রাকাত করে তারাবির নামাজ পড়িয়েছেন।

তৃতীয় রাতের লোকজন জমা হলেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম উপস্থিত হননি পরদিন সকালে তিনি এরশাদ করলেন আমি তোমাদের উপর তারাবি নামাজ ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছি। তখন তা তোমাদের জন্য কষ্টকর হবে।

তবে কেউ যদি তারাবির নামাজ ছেড়ে দেয় সে ক্ষেত্রে রোজার ওপর এর কোন প্রভাব পড়বে না। কেননা রোজা ও তারাবি দুটি ভিন্ন ভিন্ন স্বতন্ত্র ইবাদত।

ইসলামী শরীয়তের প্রত্যেক ইবাদতের জন্য স্বতন্ত্র নেকি ও শাস্তি নির্ধারিত তবে হ্যাঁ এই মহামান্বিত মাসে তারাবির মতো ফজিলতপূর্ণ এবাদত এ অলসতা করে ছেড়ে দেওয়া কোন ভাবেই উচিত নয়। মহান আল্লাহ এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী করার তৌফিক দিন। আমিন।

তারাবির নামাজে ইমাম হোক আর মুসল্লী হোক প্রতিযোগিতা করে তারাবি পড়ার প্রবণতা পরিহার করা উচিত কারণ যত তাড়াতাড়ি নামাজ পড়ার চেষ্টা করা হোক না কেন তাতে সময়ের ব্যবধানে বেশি হেরফের হয় না।

সুতরাং সামান্য সময়ের জন্য তারাবির নামাজের সৌন্দর্য বিনষ্ট করতে তাড়াতাড়ি তারাবি পড়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে অধিক সওয়াব অর্জনের প্রত্যাশায় ধীর ও স্থির ভাবে তারাবিহ পড়াই উত্তম।

সচারচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ কয় রাকাত?

উত্তর:মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবির নামাজ কখনো পড়তেন ১৬ রাকাত কখনো ৮ রাকাত আবার কখনো ২০ রাকাত তারাবি আদায় করতেন।

প্রশ্নঃতারাবির নামাজের ফজিলত কি?

উত্তরঃতারাবির নামাজের ফজিলত বর্ণনা করতে যেয়ে হুজুর সাঃ বলেছেন, তারাবির নামাজের ফজিলত অনেক। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সোয়াব প্রাপ্তির আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে তার অতীতের পাপগুলো ক্ষমা করা হয়। (বুখারী ও মুসলিম)

প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ জামাতে পড়া ও কোরআন খতম করা কি?

উত্তরঃতারাবির নামাজ জামাতে পড়া এবং সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

শেষ কথা-

সুপ্রিয় SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ এর সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনারা শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমাদের আজকের আরটিক্যালিটি তারাবির নামাজের ইতিহাস ও এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে লিখা হয়েছে।

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে যাদের সামান্যতম উপকারে এসেছে তারা অবশ্যই বন্ধুদের সাথে আমাদের ওয়েবসাইটটির কথা শেয়ার করতে ভুলবেন না।আপনাদের যেকোনো বিষয়ে জানার থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আমরা আপনাদের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ সবাইকে।

পোস্ট ট্যাগ-

তারাবি নামাজ কিভাবে এলো,নামাজ কি ও কেন,জুমার নামাজ কত রাকাত,বেতের নামাজ,তাহাজ্জুদ নামাজ কী,নামাজের নিয়ম,নামাজ রচনা,চাশতের নামাজ,সালাত শব্দের অর্থ কি।

আপনার জন্য আরো –

আরও পড়ুন –

ইসলামে মেয়েদের রোজা সংক্রান্ত মাসয়ালা সম্পর্কে জানুন

শবে মেরাজের ঘটনা ও শবে মেরাজের আমল-ইসলামিক টিপস

মাহে রমজানের রোজা সম্পর্কে হাদিসের কথা

রোজা থাকা অবস্থায় ঘুমের মতো স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভঙ্গ হবে কিনা?

শাওয়ালের ছয় রোজা কোন নিয়মে রাখতে হয়

রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া ২০২৩

মাহে রমজানের রোজা ভাঙ্গার কারণ গুলো কি কি

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন.

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 506 other subscribers

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।