জিলহজ্জ মাসের রোজা। জিলহজ্জ মাসের রোজার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত

জিলহজ্জ মাসের রোজা ও আমল সমূহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আজ আপনাদের জিলহজ্জ মাসের রোজা, জিলহজ্জ মাসের রোজার ফজিলত, জিলহজ্জ মাসের রোজা ও আমল  সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।

আশুরার রোজার নিয়ত

জিলহজ্জ ইসলামি বর্ষপঞ্জির ১২ তম মাস। এটি মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই মাসে মুসলিমগণ হজ্ব পালন করেন। এ মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত হজ্ব পালনের নির্ধারিত তারিখ। জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে মুসলমানদের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বাৎসরিক ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা বা কোরবাণীর ঈদ উদ্‌যাপন করা হয়।

জিলহজ্জ মাসের রোজা

জিলহজ্জ মাসের রোজা

আরবি ১২ মাসের সর্বশেষ মাস জিলহজ মাস। এ মাসটি বছরের চারটি সম্মানিত মাসের একটি। অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এ মাস।

এ পবিত্র মাসের ১০ তারিখে কোরবানির ঈদ পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হজরত ইবরাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইলের (আ.) অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করেন। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর হজব্রত পালন ও পশু কোরবানি করে থাকে।

হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুরো পরিবারের নজিরবিহীন কোরবানির ইতিহাস মানুষকে যে ত্যাগের শিক্ষা দেয়, তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে একজন মুমিন তার সবকিছুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতে সদা প্রস্তুত থাকে।

আরাফার রোজার নিয়ত ।আরাফার রোজা কয়টি।আরাফার রোজার ফজিলত

হজরত ইবরাহিম (আ.) এবং তার প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) এবং মা হাজেরার আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশগুলোকে আল্লাহতায়ালা হজের অংশ হিসেবে গণ্য করেছেন। আর এই হজ ও কোরবানি সম্পন্ন হয় পবিত্র জিলহজ মাসে। যার ফলে ইসলামে জিলহজ মাসের গুরুত্ব অতি ব্যাপক।

মাস হিসেবে রমজান আর দিন হিসেবে এই দশক শ্রেষ্ঠ ও সর্বাপেক্ষা মর্যাদাপূর্ণ। সুরা হজের ২৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা আল্লাহর নামের স্মরণ করে নির্দিষ্ট দিনগুলোতে।’

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, নির্দিষ্ট দিন বলতে এখানে জিলহজ মাসের প্রথম দশককে বোঝানো হয়েছে (ইবনে কাসির)।জিলহজ্জ মাসের রোজা

এ মাসের নবম দিন ও রাত আল্লাহর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই দিনটি আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার দিন। আর রাতটি হলো মুজদালিফায় অবস্থানের রাত।

বিশেষ করে ৯ জিলহজ রোজা আদায়ের ব্যাপারে প্রিয় নবী সবচেয়ে বেশি আশাবাদী ছিলেন যে, এদিনের রোজা পালনকারীকে গত এক বছর এবং আগাম (সামনের) এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেবেন।

যেভাবে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে আরাফার দিনে রোজা রাখল অবশ্যই আল্লাহতায়ালা তার এক বছর পূর্বের এবং এক বছর পরের তথা দুই বছরের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন’ (মুসলিম)। তবে যারা হজ আদায়ে ওইদিন আরাফায় থাকবেন, তাদের জন্য এই বিধান নয়।

স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা  ভেঙে যায়? যেনে নিন বিস্থারিত

কেননা নবী করিম (সা.) আরাফায় থেকে এই রোজা রাখেননি। আরাফায় যারা অবস্থান করবেন, তারা যদি রোজা রাখেন, তাহলে হয়তো অন্যান্য যে ইবাদত-বন্দেগি রয়েছে, তা সঠিকভাবে পালন করতে তাদের কষ্ট হতে পারে। তাই আরাফায় যারা অবস্থান করবেন, তাদের জন্য রোজা না রাখাটাই শ্রেয়।

জিলহজ মাসের প্রথম দশকের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, এমন কোনো দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের ইবাদত থেকে অধিক প্রিয়।

জিলহজের প্রথম দশকের প্রত্যেক দিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য (তিরমিজি)।

 জিলহজ মাসে কয়টি রোজা করা সুন্নাত

জিলহজ মাসের শুরু থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রাসুল (সা.) সিয়াম পালন করতেন এবং যারা হজে যাবে না, তারা জিলহজ মাসের ৯ তারিখ, যেটা আরাফার দিবস রয়েছে, আরাফার দিবসে সিয়াম পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ মনে করেন, এই ৯ দিনই সিয়াম পালন করবেন, তাহলে তিনি করতে পারেন। আর এর মধ্যে কেউ যদি মনে করেন, এর বেশির ভাগ সিয়াম পালন করবেন, সেটাও করতে পারেন।

মহরমের রোজা কয়টি?মহরমের রোজার নিয়ত?রোজার ফজিলত

যেহেতু নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল, এমনকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের চেয়েও বেশি প্রিয় আমল।’ সুতরাং, এই কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ এই দিনগুলোতে সিয়াম পালন করা যেতে পারে, জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন। শুধু ঈদের দিন সিয়াম পালন করতে পারবেন না।

জিলহজ্জ মাসের রোজার ফজিলত

জিলহজ মাস মানে হজের মাস। হজের তিনটি মাস শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ। এর মধ্যে প্রধান মাস হলো জিলহজ মাস। এই মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ—এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হজ সম্পাদন সুবিদিত মাসসমূহে।

অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ করা স্থির করে, তার জন্য হজের সময়ে স্ত্রীসম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহবিবাদ বিধেয় নহে। তোমরা উত্তম কাজে যা কিছু করো, আল্লাহ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়র ব্যবস্থা করবে, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ, তোমরা আমাকে ভয় করো’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৯৭)।

বছরের বারো মাসের চারটি মাস বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন। এই চার মাসের অন্যতম হলো জিলহজ মাস। আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি, যা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান’ (সুরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ৩৬)। এই চার মাস হলো জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। এসব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, কলহবিবাদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

শবে বরাতের রোজা নিয়ত বাংলায় এবং শবে বরাতের নামায

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার প্রতি আজহার দিন (১০ জিলহজ) ঈদ পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা আল্লাহ এই উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আপনি বলুন, (যদি আমার কোরবানির পশু কেনার সামর্থ্য না থাকে) কিন্তু আমার কাছে এমন উট বা বকরি থাকে, যার দুধ পান করা বা মাল বহন করার জন্য তা প্রতিপালন করি।

আমি কি তা কোরবানি করতে পারি? তিনি বললেন, না। বরং তুমি তোমার মাথার চুল, নখ, গোঁফ কেটে ফেলো এবং নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করো। এ-ই আল্লাহর নিকট তোমার কোরবানি’ (আবু দাউদ, নাসাই, ত্বহাবি, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা: ৩০৫)।

জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত দিনে রোজা পালন করা, রাতে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত। যথা: নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, তওবা-ইস্তিগফার ইত্যাদি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়, প্রতিটি দিনের রোজা এক বছরের রোজার মতো আর প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের মতো’ (তিরমিজি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা: ১৫৮)।

আরাফার দিন, অর্থাৎ ৯ জিলহজ নফল রোজা রাখা বিশেষ সুন্নত আমল। তবে আরাফায় উপস্থিত হাজি সাহেবদের জন্য এই রোজা প্রযোজ্য নয়। হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে আল্লাহ তাআলা তার (রোজাদারের) বিগত এক বত্সরের ও সামনের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন’ (তিরমিজি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা: ১৫৭)।

জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর একবার তাকবির বলা ওয়াজিব (ইলাউস সুনান, খণ্ড-৮,পৃষ্ঠা: ১৪৮)।

জিলহজ্জ মাসের রোজা

জিলহজের ১০, ১১ ও ১২ যেকোনো দিন, কোনো ব্যক্তির মালিকানায় নিত্যপ্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। পুরুষ ও নারী সবার জন্য এ বিধান প্রযোজ্য (ইবনে মাজাহ: ২২৬)।

শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম সহকারে বিস্থারিত

হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর কাছে সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! এ কোরবানি কী?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.)–এর সুন্নত।’ তাঁরা পুনরায় বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! তাতে আমাদের জন্য কী সওয়াব রয়েছে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘কোরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে।’ তাঁরা আবারও প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! ভেড়ার লোমের কী হুকুম? (এটা তো গণনা করা সম্ভব নয়)’, তিনি বললেন, ‘ভেড়ার প্রতিটি পশমের বিনিময়েও একটি সওয়াব রয়েছে’ (ইবনে মাজাহ: ২২৬)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত।

জিলহজ মাসের রোজা ১৩ দিনের বিশেষ আমল

আরবি ১২ মাসের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এ মাসের প্রথম ১৩ দিনের বিশেষ আমল কোরআন-হাদিসে বর্ণিত আছে।

যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এখানে উল্লেখ করা হলো

১।হজ করা

জিলহজ মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হজ। হজ ইসলামের মৌলিক পাঁচ স্তম্ভের একটি।

এর মূল কাজগুলো ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। হজ সামর্থ্যবানদের ওপর জীবনে একবার ফরজ হয়।

জিলহজ্জ মাসের রোজা

ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই গৃহের হজ করা তার জন্য অবশ্যকর্তব্য। আর যে (এই নির্দেশ পালন করতে) অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত যে আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি সামান্যও মুখাপেক্ষী নন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)

যেহেতু হজে যেতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধনের পর সিরিয়াল পেতে পেতে দুই-তিন বছর সময় লেগে যায়। তাই যে বছর হজে যাওয়ার দৃঢ়সংকল্প আছে—তার দুই-তিন বছর আগেই নিবন্ধন করতে হবে। সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

২।কোরবানি করা

এ মাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল কোরবানি, যা ১০, ১১ বা ১২ তারিখে সম্পন্ন করতে হয়। এবং তা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের ওপর ওয়াজিব—যিনি সাবালক ও সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী। মহানবী (সা.) সরাসরি কোরবানির ব্যাপারে নির্দেশিত হয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো। ’ (সুরা কাউসার, আয়াত : ২)

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সহ রোজা সম্পর্কিত সকল বিষয়

রাসুলে করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। ’ (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস : ৭৫৬৬)

আর যাদের ওপর ওয়াজিব হয়নি, তারাও চাইলে সুন্নত হিসেবে কোরবানি করতে পারবে।

৩।বেশি বেশি নেক আমল করা

এ মাসের প্রথম ১০ দিনের যেকোনো নেক আমল আল্লাহর অনেক প্রিয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর কাছে জিলহজের ১০ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। ’ (বুখারি, হাদিস : ৯৬৯)

তাই প্রতিটি মুহূর্তে কোনো না কোনো নেক আমল করতে থাকা উচিত। যে কাজই করি তা যেন হয় ইহকালীন বা পরকালীন কোনো কল্যাণে। পাশাপাশি গুনাহ থেকে বিরত থাকাও বিশেষভাবে জরুরি।

৪।প্রথম দিন রোজা রাখা

জিলহজের প্রথম ৯ দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। এর প্রতিটি রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। এবং প্রথম ১০ রাতে ইবাদত করা উত্তম। এর প্রতিটি রাত লাইলাতুল কদর সমতুল্য। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়। প্রতিটি দিনের রোজা এক বছরের রোজার মতো। আর প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের মতো। ’ (তিরমিজি : ১/১৫৮)

?? গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন ??

পুরো ৯ দিন রোজা রাখা সম্ভব না হলে যত দিন রোজা রাখা সম্ভব তত দিন রাখা যেতে পারে। আর পুরো ১০ রাতে ইবাদত করা সম্ভব না হলে যত রাতে ইবাদত করা সম্ভব তত রাতে ইবাদত করা যেতে পারে। এতেও সাওয়াব পাওয়া যাবে।

৫।বিশেষত আরাফার দিন   রোজা রাখা

আরাফার দিন তথা ৯ জিলহজ রোজা রাখলে দুই বছরের (সগিরা) গুনাহ মাফ হয়ে যায়। তাই এ দিন রোজা রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিনের রোজার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি যে তিনি আগের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)

অতএব যে এলাকায় যখন জিলহজের ৯ তারিখ হবে সে এলাকায় তখন রোজা রাখলে এ ফজিলত লাভ করবে, ইনশাআল্লাহ।

৬।নখচুল ইত্যাদি না কাটা

যারা কোরবানি করার ইচ্ছা করবে তাদের জন্য জিলহজ মাসের প্রথম থেকে কোরবানি করা পর্যন্ত নখ-চুল ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন জিলহজের প্রথম দশক শুরু হবে তখন তোমাদের মধ্যে যে কোরবানি করবে সে যেন তার চুল ও নখ না কাটে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৯৭৭)

তবে কোরবানি করতে অক্ষম ব্যক্তি ঈদের পর নখ-চুল ইত্যাদি কাটলে তার পূর্ণ একটি কোরবানির সওয়াবের কথা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। (আবু দাউদ, হাদিস: ২৭৮৯)

এমনকি এ সময় বাচ্চাদের নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকাও ভালো। অতএব জিলহজ আগমনের আগেই নখ-চুল ইত্যাদি কেটে পরিপাটি হয়ে থাকা বাঞ্ছনীয়।

৭।তাকবিরে তাশরিক পড়া

৯ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত নামাজ। এর প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার তাকবিরে তাশরিক পড়া ওয়াজিব। চাই জামাতে নামাজ পড়া হোক বা একাকি, পুরুষ হোক বা নারী, মুকিম হোক বা মুসাফির। তাকবিরে তাশরিক পুরুষের জন্য জোরে পড়াও ওয়াজিব। তাকবিরে তাশরিক হলো, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। ’

৮।ঈদুল আজহার নামাজ পড়া

ঈদুল আজহার নামাজ প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন পুরুষের ওপর ওয়াজিব। সূর্যোদয়ের ২০-৩০ মিনিট পর থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত ঈদের নামাজ পড়া যায়। নবীজি (সা.) ঈদুল আজহার নামাজ সাধারণত সূর্যোদয়ের আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে আদায় করতেন। ঈদুল আজহার নামাজ একটু তাড়াতাড়ি পড়াই উত্তম। তবে প্রয়োজনে কিছুটা বিলম্ব করাও নিষিদ্ধ নয়।

জিলহজ্জ মাসের রোজা নিয়ে প্রশ্ন উত্তরঃ

১। জিলহজ্জ মাসে আরাফার দিন কত তারিখ?

উত্তরঃ জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ।

২। জিলহজ্জ মাসে কয়টা রোজা করতে হবে?

উত্তরঃ জিলহজ্জ মাসের প্রথম ৯ দিন রোজা।

৩।জিলহজ্জ মাসে ৯দিন রোজা রাখা কি?

উত্তরঃ মুস্তাহাব।

৪।আরাফার দিন রোজা রাখলে কয় বছরের গুনাহ মাফ হবে?

উত্তরঃ ২ বছরের গুনাহ মাফ হবে।

৫। হজ্জপালনকারীর জন্য আরাফার দিন রোজা  রাখা কি?

উত্তরঃ হজ্জপালনকারীর জন্য আরাফার দিন রোজা রাখা মাকরূহ।

আরও আপনার জন্য-

রিযিকের মালিক আল্লাহ

অর্থ বুঝে নামাজ পড়ি

আত্মীয়তার সম্পর্ক

সালামের ফযিলত সম্পর্কে বিস্তারিত

আজান অর্থ কি? আজানের জবাব এবং ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত

আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি? আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত সহ বিস্তারিত

আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া-ক্ষমা প্রার্থনার নিয়ম ও ৫ দোয়া

মোনাজাতের দোয়া বাংলা উচ্চারণ । দোয়া কবুলের আমল-রিজিক বৃদ্ধির দোয়া-আয়না দেখার দোয়া

তওবাতুন নাসুহা, সঠিক পথে আসুন

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join ৫০৬ other subscribers

         

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এএখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
SS IT BARI-সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে

SANAUL BARI

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *