জমির দলিল সংশোধন করার কারন | দলিল সংশোধন করা হয় কেন

জমির দলিল সংশোধন করার কারনজমি রেজিস্ট্রির পর দেখা যায় অনেক জায়গায় দলিলে ভুল আছে এ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩১ নং ধারা অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রির পর দাগ খতিয়ান মৌজা বা নামের কোন ভুল থাকলে তা তিন বছরের মধ্যেই সংশোধন করা যায়।

জমির দলিল সংশোধন করার কারন
জমির দলিল সংশোধন করার কারন

এরূপ ভুল হলে দেওয়ানী আদালতে তিন বছরের মধ্যে দলিল সংশোধনের মামলা করতে হবে। এই মামলার যে রায় হয় তাই হলো সংশোধন দলিল।

দলিল কি?দলিল কত প্রকার ও  কি কি?

এই মামলার রায়ের এক কপি আদালত হতে সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রার নিকট পাঠানো হলে সাব রেজিস্টার উক্ত রায়ের আলোকে সংশ্লিষ্ট ভলিউম সংশোধন করে নিবেন ফলে নতুন কোন দলিল করার প্রয়োজন হবে না।

কি কারনে দলিল সংশোধন করা হয়

রেজিস্ট্রি করার পর দলিল যদি দাগ নাম্বার  খতিয়ান নামের ক্ষেত্রে কোন ভুল থাকে অথবা প্রতারণার শিকার হয়ে কেউ যদি ভুল সম্পত্তি ক্রয় করে তাহলে সেই দলিলের সংশোধন প্রয়োজন হয়। দলিলের সংশোধন করার বেশ কিছু কারণ বিদ্যমান।

১।প্রতারণার শিকার হয়ে যদি ভুল হয়

২।পক্ষগনের পারস্পরিক ভুলের জন্য যদি দলিল ভুল ভাবে লিখিত হয়।

৩।পক্ষগনের প্রকৃত মনোভাব যদি দলিলে ভুল ভাবে লিখিত হয়

৪।পক্ষগণের প্রতারণা বা ভুল যদি আদালত দলিল কার্যকর করার সময় নির্ণয় করতে পারেন।

৫।কোন চুক্তিপত্রের সাথে যদি ভগবানের ইচ্ছা পরস্পর বিরুদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে চুক্তিপত্রটি আদালত সংশোধন করতে পারবেন।

কিভাবে দলিল সংশোধন করা হয়

পর্দাতে দাগ খতিয়ান বা নামের ছোটখাটো কোন ভুল ধরা পড়লে এবং যে ভুল সংশোধন করলে দলিলের মূল কাঠামো বা স্বত্বের কোন পরিবর্তন ঘটবে না সেরূপ ভুল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্টার বরাবরে আবেদন করা যাবে। সাব রেজিস্টার এ ধরনের ছোটখাটো ভুল সংশোধন করতে পারবেন। এটাকে বলা হয় ভ্রম সংশোধনী দলিল।

জমির দলিল হারিয়ে গেলে করণীয়

রেজিস্ট্রেশন বিধিমালয়ের ৭৪ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “কোন রেজিস্ট্রিট মৃত ব্যালেন্স স্টেশনের জন্য গৃহীত দলিলের ভুল ত্রুটি থাকলে এবং তা সংশোধনের জন্য কোন সম্পূরক দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য, উক্ত ভুলত্রুটি প্রমাণের জন্য মূল দলিল বা অবিকল নকলসহ দাখিল করা হলে যে রেজিস্টার বহিতে মুলদলিলটি নকল করা হয়েছে তার মার্জিনী এইরূপ সংশোধনের বিষয়ে সাব রেজিস্টার একটি টীকা লিখবেন যে, এই দলিলটি অমুক কার্যালয়ের এত সনের এত নং দলিল মূলে সংশোধন করা হইয়াছে।

রেজিস্ট্রেশন বিধিমালার ৭৪ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে,যে রেজিস্টার বহিতে মূল দলিলটি নকল করা হয়েছে তা যদি সদর রেকর্ডরুমে প্রেরিত হয়ে থাকে তাহলে যে সাব রেজিস্টার ভ্রম সংশোধন দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন তিনি জেলার রেজিস্ট্রারকে তার নিজের স্বাক্ষরের সংশোধনী সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় টিকা যথাযথ রেজিস্টার বহিতে লেখার জন্য অনুরোধ করে পত্র লিখবেন।

ভ্রম সংশোধন দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ

ভ্রম ও সংশোধন দলিলের রেজিস্ট্রেশন ফি মাত্র ১০০ টাকা স্টাম্প শুল্ক ৩০০ টাকা দিতে হবে। সেই সাথে ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা। এর সাথে রয়েছে এন ফি। বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশবিশেষের জন্য ১৬ টাকা।

আর ইংরেজি ভাষা হলে ২৪ টাকা।স্ট্যাপ সুলকমুষ চাইলে স্টাম্প আইন ১৮৯৯ এর ১৬ ধারা মোতাবেক ২০ টাকার  কোর্ট ফিসহ আবেদন করতে হবে। তাহলেই হয়ে যাবে ভ্রম সংশোধনী দলিল।

দলিল সংশোধনের মেয়াদ বা সময়কাল

তামাদি আইন ১৯০৮ এর ৯৫ এবং ৯৬ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে, দলিল সংশোধনের তামাদি মেয়াদ হচ্ছে ৩ বছর।

তবে এই ক্ষেত্রে উল্লেখ খোজে তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে যেদিন হতে বাদী অর্থাৎ আপনি আপনার দলিলের ভুল বা প্রতারণা বা প্রকৃত উদ্দেশ্য প্রকাশের ব্যর্থতা সম্বন্ধে জানতে পারবেন সেই দিন থেকে তিন বছরের মধ্যে দলিল সংশোধনের মামলা দায়ের করতে হবে।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 

দেওয়ানী মামলায় সব সময় তামাদি মেয়াদ খেয়াল রাখতে হয় ।একটি নির্দিষ্ট সময়ের মতো মামলা দায়ের না করলে মামলাটি খারিজ হয়ে যাবে তাই দলিল সংশোধনের মেয়াদ বা সময়কালের বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে।

কি বা কারা দলিল সংশোধন মামলা দায়ের করতে পারবেন

দলিল সংশোধনের মামলা করতে হলে ব্যক্তিকে অবশ্যই দলিলের পক্ষে হতে হবে বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বৈধ প্রতিনিধি হতে হবে।কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকলে আপনি একটি দলিল সংশোধনের মামলা করতে পারবেন না বাদী হিসেবে আপনাকে দলিলের পক্ষ বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বৈধ প্রতিনিধি হতে হবে। যারা দলিল সংশোধনের মামলা করতে পারবে তারা হলো

১।দলিলের যেকোনো পক্ষ

২।দলিলের যেকোনো পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিগণ

৩।দলিলের যেকোনো পক্ষের উত্তরাধিকারীগণ

৪।দলিলের যে কোন পক্ষের নিকট হতে হস্তান্তর গ্রহীতা গন

৫।দলিলের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ

সর্বোপরি, দলিল সংশোধনের এই বিধানটি দেওয়া হয়েছে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ৩১ নং ধারায়।যদিও ৩১ ধারায় এই দলিলের পরিধি অনেক বড় করে দেখানো হয়েছে ৩১ ধারায় বলা হয়েছে যে, a contract or other instrument in writing, অর্থাৎ একটি লিখিত চুক্তি বা অন্য কোন লিখিত দলিলকে সংশোধন করার জন্য ৩১ ধারার ব্যবহার করা যেতে পারে।

কি কি শর্তে দলিল সংশোধন করা যায়?

১। দলিলের কোন পক্ষের প্রতারণা

২। পক্ষসমূহের পারস্পরিক ভুল

৩। দলিলের পক্ষ সমূহের সত্যিকার উদ্দেশ্য প্রকাশের ব্যর্থতা।

কে কে দলিল সংশোধন মামলা করতে পারবে?

১। দলিলের যে কোন পক্ষ।

২। দলিলের পক্ষ সমূহের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বৈধ প্রতিনিধি।

দলিল সংশোধনের তামাদি মেয়াদ কত বছর?

তামাদি আইন ১৯০৮ এর অনুচ্ছেদ ৯৫ এবং ৯৬ অনুযায়ী তামাদি মেয়াদ ৩ বছর।

শেষ কথা –

আশা করছি উপরের এই জমির দলিল সম্পর্কিত পোস্ট থেকে আপনি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। এরপরেও আপনাদের যদি জমির দলিল সম্পর্কিত আরো কোন জিজ্ঞাসা থেকে থাকে তাহলে আপনারা পোষ্টের কমেন্টসে আমাদের জানিয়ে দিবেন। আমরা আমাদের সাধ্যমত আপনাকে রিপ্লাই করার বা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

বিশেষ দ্রষ্টব্য -উপরের ইনফরমেশনগুলো সম্পূর্ণভাবে ইন্টারনেট থেকে কালেক্ট করা। এজন্য কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে পরবর্তী পোস্ট পড়ার অনুরোধ রইল।

আরো তথ্য

জমির দলিল সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য

নকল দলিল উত্তোলন খরচ কত?

অনলাইনে জমির খতিয়ান যাচাই করার সঠিক পদ্ধতি

জমির দলিল বের করার নিয়ম

জমির পুরাতন দলিল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

জমির দলিল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join ৫০৬ other subscribers

SS It BARI JOB NEWS

SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ টিম