গর্ভকালীন মায়ের খাবার তালিকা- গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা (খাদ্য ও পুষ্টি)

গর্ভকালীন মায়ের খাবার-একটি মেয়ের কাছে  স্পেশাল সময় হচ্ছে তার‌ গর্ভকালীন সময়। এ সময় একটি মেয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে পারে। শারীরিক মানসিক পরিবর্তন ঘটতে পারে। যার কারণে এই সময় একজন গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজন হয় বিশেষ যত্ন। খাবার ঘুম চলাফেরা সকল দিক থেকে তাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। বিশেষ করে খাবারের ক্ষেত্রে বেশি যত্নশীল হতে হয়। কারণ একজন মায়ের গর্ভকালীন সময় সুষম খাদ্য গ্রহণ করা অতীব জরুরি।গর্ভকালীন মায়ের খাবার তালিকা-

গর্ভকালীন সময়ে মা যদি পুষ্টিকর খাবার খায় তাহলে বাচ্চার দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ সুষ্ঠু উপায়ে ঘটবে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা পুষ্টিতে ভরপুর হওয়া উচিত। গর্ভকালীন সময়ে একজন মা যদি স্বাস্থ্যকর সুসময় এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খায় তাহলে তার বাড়তি পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত হবে। এতে করে গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে।

আপনি কি গর্ভকালীন সময় আপনার খাদ্য তালিকা নিয়ে চিন্তিত? ভাবছেন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কিভাবে তৈরি করবেন?  সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আজকে আর্টিকেলে সকলকে জানাচ্ছি স্বাগতম। অনেকেই গর্ভকালীন সময় মায়ের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করতে কি খাবার খাওয়া উচিত সে অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় তৈরি করতে বিভিন্ন জায়গায় সার্চ করে থাকেন। তাদের জন্য আজকে আমাদের আর্টিকেলে তুলে ধরা হবে গর্ভবতী মায়ের পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা।

গর্ভবতী মায়ের অন্যান্য মানুষের তুলনায় প্রয়োজন অধিক পুষ্টি যাকে তার নিজের শরীরের গোষ্ঠী চাহিদা পূরণ করে বাড়তি পুষ্টি বাচ্চার শরীরে সঠিক বিকাশ সাধনে সহায়তা করে। তাই গর্ভবতী মায়ের সার্বিক পুষ্টি চাহিদার কথা মাথায় রেখে আজকের আর্টিকেলের গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করব।গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানতে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ে আমাদের সাথে থাকবেন।

গর্ভকালীন মায়ের খাদ্য পুষ্টি

গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের খাদ্য তালিকায় সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার রাখা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় শরীর বাড়তি পুষ্টির প্রয়োজন পরে। মা যদি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে তাহলে সন্তানের শারীরিক ও মানসিক উপযুক্ত বিকাশ ঘটবে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। তবে প্রতিদিন এখন সবার গ্রহণ করার ফলে খাবারের আসতে পারে। তাই একেক সময় একেক ধরনের খাবার খেতে হবে যাতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি পাওয়া যায়।

মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

গর্ভাবস্থার পূর্বে গর্ভকালীন সময়ে কিংবা গর্ভের পরবর্তী সময়গুলোতে একজন মায়ের পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা মেইনটেইন করে খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজন।গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। মহিলাদের গর্ভধারণের পূর্বে  নিজের স্বাস্থ্য গর্ভধারণ ও সন্তান পালন সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার। কারণ একজন সুস্থ মা ই পারে একটি সুস্থ শিশু জন্ম দিতে। তাই গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রয়োজন সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা।

গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকা

একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিন যে সকল খাবার খাওয়া দরকার অর্থাৎ যে সকল খাবারে একজন গর্ভবতী মা তার শরীরের পুষ্টি পূরণের পাশাপাশি তার অনাহত শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে সেইসব খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো;

প্রথম তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার রুটিন

প্রথম তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের ১৬০০ ক্যালোরি প্রয়োজন।

 সকালের নাস্তা

*রুটি /পাউরুটি 60 গ্রাম= ২ পিস।

*ডিম একটা/ ডাল ১০ গ্রাম।

*সবজি ইচ্ছামতো।

সকাল ১০ টা থেকে ১১টা

*মুড়ি/ বিস্কুট/ কেক ইত্যাদি ৬০ গ্রাম + ফল।

দুপুরের খাবার

*ভাত দুই কাপ= ২৪০ গ্রাম।

*মাছ /মাংস ৬০ গ্রাম।

*ডাল আধা কাপ মাঝারি/ ঘন।

*সবজি ইচ্ছামতো।

বিকালের নাস্তা

*নুডুলস /ছোলা /মুড়ি সেমাই ইত্যাদি=৩০ গ্রাম।

রাতের খাবার

*দুপুরের মতো।

*ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ।

দ্বিতীয় তিন মাস

দ্বিতীয় তিন মাস একজন গর্ভবতী মায়ের দৈনিক ১৯০০ ক্যালোরি প্রয়োজন।

*রুটি /পাউরুটি ৯০ গ্রাম= ৩ পিস।

*ডিম একটা/ মাংস দুই টুকরা।

*সবজি ইচ্ছামত।

সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা

*বিস্কুট/ মুড়ি /নুডলস ইত্যাদি ৩০ গ্রাম + ফল।

দুপুরের খাবার

*ভাত ৩০০ গ্রাম/আড়াই কাপ।

*মাছ /মাংস ৮০ গ্রাম।

*ডাল এক কাপ।

* সবজি ইচ্ছামত।

বিকালের নাস্তা

*সেমাই/নুডুলস /ছোলা/ মুড়ি কেক ইত্যাদি ৪০ গ্রাম।

রাতের খাবার

*দুপুরের মত।

* শোয়ার আগে এক গ্লাস দুধ।

শেষ তিন মাস

একজন গর্ভবতী মায়ের শেষ তিন মাস দৈনিক ২১০০ ক্যালোরি প্রয়োজন।

সকালের নাস্তা

*রুটি পাউরুটি ১২০ গ্রাম=চার পিস।

*ডিম একটা।

*সবজি ইচ্ছা মত।

সকাল ১০ থেকে ১১ টা

*দুধ এক কাপ।

*যে কোন নাস্তা ৬০ গ্রাম+ফল।

দুপুরের খাবার

*ভাত ৩৬০ গ্রাম=তিন কাপ।

*মাছ/ মাংস 100 গ্রাম।

*ডাল এক কাপ, ঘন।

*সবজি ইচ্ছামতো।

বিকালের নাস্তা

*দুধ অথবা দুধের তৈরি নাস্তা ৬০ গ্রাম।

অথবা

* ডালের তৈরি নাস্তা ৬০ গ্রাম।

রাতের খাবার

*দুপুরের মত।

*ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ।

 

গর্ভকালীন মায়ের খাবার

গর্ভকালীন সময়ে একজন মাকে যে সমস্ত খাবার তার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে সেগুলো হচ্ছে;

প্রোটিন বা আমিষ

প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে দৈনিক ৯০ থেকে ১০০ গ্রাম। অর্থাৎ অন্য ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি।

এই পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায় মাঝারি আকারের তিন টুকরো মাংস থেকে। প্রোটিন আসতে পারে মাছ, মাংস, ডিম ,দুধ,ডাল ,বাদাম, শিমের বিচি থেকে।

প্রোটিন গর্ভস্থ শিশুর কোষ ও মস্তিষ্কের সঠিক গঠনে সহায়তা করে। মায়ের স্তন কোষ বাড়ায়। শ্রেণী চক্রকে সন্তান জন্মদানে উপযোগী করে।

ফ্যাট বা চর্বি

ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার শক্তির ভালো উৎস। এগুলোতে চর্বি দ্রবণীয় ভিটামিন কে কাজে লাগায়।

আর এইসব ভিটামিন স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক গঠন নিশ্চিত করে। চর্বি পাওয়া যায় ঘি মাখন তেল মাংসের চর্বি থেকে।

কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা

শর্করা জাতীয় খাবার ও শরীরে শক্তি যোগায়। শর্করা পাওয়া যায় ভাত, রুটি, চিড়া, মুড়ি, খই, আলু, চিনি, মিষ্টি ও গুড় থেকে।অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলতে হবে।

ক্যালসিয়াম

নবজাতক শিশুর হার গঠনে গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে খাবারে ক্যালসিয়াম বেশি আছে এমন খাদ্য বাড়াতে হবে।

দুধ ও দুগ্ধ জাত সামগ্রী ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। তবে দুধ বেশি খেতে না পারলে ডাল ছোট মাছ ইত্যাদি খেয়েও ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটানো যায়।

গর্ভকালীন দৈনিক 1000 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন।

ভিটামিন

ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স শিশুর দেহ গঠনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া গর্ভকালীন রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে বলে গর্ভের শেষ দিকে ভিটামিন কে খুবই প্রয়োজন।

শিশুর হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন ডি প্রয়োজন। কারণ এই ভিটামিন খাদ্যের ক্যালসিয়ামকে শোষণ করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে কি কি খাবার খাওয়া উচিত

ভিটামিন সি ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই প্রয়োজন। তার নিজের ত্বক ও নবজাতকের ত্বক এবং চুলের জন্য যেসব খাবার থেকে এ ধরনের ভিটামিন পাওয়া যাবে সেগুলো হলো: দুধ, মাখন,ডিম, ছানা, কডলিভার অয়েল, ইলিশ মাছ, টমেটো, গাজর, পালং শাক, বিট, লাল শাক, মাংস বিভিন্ন ধরনের ডাল আলু ইত্যাদি।

বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি যেমন কমলালেবু, টমেটো, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, আমলকি, পেয়ারা, বরই ইত্যাদি থেকে দৈনিক ৮০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন গ্রহণ করা উচিত।

লৌহ ফলিক এসিড

গর্ভধারণের আগেই ফলিক এসিড ও লৌহ সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া উচিত।কারণ গর্ভকালীন এই দুটি ঘাটতি বেশি দেখা যায়। লৌহ ও ফলিক এসিড আছে দুধ, ডিম, মাছ ,মাংস,চালতা, গুড়, কলিজা, পাকা কলা, খেজুর, আম, টমেটো, তরমুজ, সবুজ শাকসবজি, কালো কচু শাক ইত্যাদিতে।

গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসে দৈনিক ৬০০ মাইক্রো গ্রাম ফলিক এসিড ও ২৭ মিলিগ্রাম লৌহ প্রয়োজন।

শক্তি ক্ষয় পুরুন এবং নবজাতকের শরীর বৃদ্ধিকারক খাবার

একজন গর্ভবতী মায়ের শক্তি ক্ষয় পূরণ এবং তার অনাগত শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি করার জন্য যে সকল খাবার খাওয়া উচিত সেগুলো হচ্ছে-

*মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের সাদা অংশ।

*বিভিন্ন ধরনের ডাল, মটরশুটি, সিমের বিচি ইত্যাদি।

শক্তি রোগ প্রতিরোধক খাবার

শরীরের শক্তি যুগিয়ে শারীরিক রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এমন খাবার একজন গর্ভবতী মায়ের খাওয়া উচিত। আর এই খাবারগুলো হচ্ছে;

*সবুজ, হলুদ ও অন্যান্য রঙিন শাকসবজি।

*সব ধরনের মৌসুমী ফলমূল।

গর্ভবতী মায়েদের খাবারের পরিমাণ

একজন গর্ভবতী মাকে নির্দিষ্ট পরিমাণে তার খাবার তালিকায় খাবার নির্বাচন করতে হবে। একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার কি পরিমানে খাওয়া উচিত দেখে নিন-

*প্রতিদিন তিন ধরনের খাবারের তালিকা থেকে কিছু কিছু খাবার খেতে হবে।

*প্রতিবেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি খেতে হবে।

*গর্ভবতী মাকে বেশি করে পানি পান করতে হবে।

*আয়োডিনযুক্ত লবণ তরকারির সাথে খেতে হবে। তবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবেনা।

গর্ভাবস্থায় করণীয়

গর্ভাবস্থায় যে সকল কাজগুলো একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী সেগুলো হচ্ছে;

*গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্য সেবা দানকারীর দ্বারা কমপক্ষে তিনবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।

*গর্ভাবস্থায় দুটি টিটি টিকা নিতে হবে।

*দৈনিক স্বাভাবিকের চেয়ে সাধ্যমত বেশি খাবার খেতে হবে।

*গর্ভবতী মহিলাকে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

*গর্ভবতী মহিলাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তাকে নিয়মিত গোসল করতে হবে।

*দুপুরের খাবারের পর কমপক্ষে এক থেকে দুই ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে।

গর্ভবতী মায়ের জন্য নিষিদ্ধ খাবার

গর্ভাবস্থায় নারীদের অনেক কিছুই খেতে ইচ্ছে করে। সাধারণত যেসব খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগে  এই সময় সেগুলো তারা খেতে চান। প্রিয়জনের ইচ্ছেকে সম্মান দিয়ে স্বামী ও কোন কিছু বিবেচনা না করে স্ত্রীকে এনে দেন। সেসব খাবার কিন্তু স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় সব খাবার খাওয়া গর্ভবতী নারীদের জন্য মোটেও উচিত নয়। সম্প্রতি মার্কিন স্নায়ু ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর নিকল আভেনা জানিয়েছেন, কোন কোন খাবার খেলে গর্ভবতী নারী ও তার অনাগত সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় যে সকল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে.

যষ্টিমধু

চিকিৎসা সম্পর্কিত মার্কিন ম্যাগাজিন “আমেরিকান জার্নাল অফ ইপিডেমিয়লজি”এতে বলা হয় গর্ভা অবস্থায় যষ্টি মধু খেলে অনাকত সন্তানের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় যেসব নারী যষ্টি মধুর রস গ্রহণ করেন তাদের বুদ্ধির মাত্রা অর্থাৎ আইকিউ লেভেল অন্তত ৭ পয়েন্ট কমে যায়।

অংকুর জাতীয় খাদ্য

কোন সন্দেহ নেই গর্ভাবস্থায় সবুজ শাকসবজি গ্রহণ করা উত্তম। তবে তা হজম যোগ্য কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে গর্ভা অবস্থায় যারা অংকুর বা গন্ধ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে থাকেন তারা এখন থেকে সেগুলো কাঁচা অবস্থায় না খেলেই ভালো করবেন। যেমন রসুন, মূলা, পেঁয়াজ ইত্যাদি যদি এসব খাদ্য খেতে হয় তবে রান্না করে খাবার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার নিকল আভেনা।

কাঁচা অথবা আধা পাকা পেঁপে

কাঁচা অথবা আধা পাকা পেঁপে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। কাঁচা পেঁপেতে লাটেক্স নামক একটি উপাদান আছে যা গর্ভপাতের মত ঘটনা ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন পেঁপে পাকলে খাওয়া যাবে। তবে সেটিও গাছ পাকা হতে হবে।বর্তমানে বেশিরভাগ সময় পেঁপের রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পাকানো হয়। এসব পাকা পেঁপেও ক্ষতিকর।

অনেকেই বলেন  গর্ভা অবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেলে কোন সমস্যা হয় না। এমনটা হতেই পারে। কাঁচা পেঁপে খেলে সমস্যা হবেই তা নয়। কিন্তু এর ফলে ঝুঁকি রয়ে যায়। তাই গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে এই ঝুঁকি না নেওয়াই উচিত। তাই গর্ভাবস্থায় সব ধরনের পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এমনকি রান্না করেও না।

খরমুজ

পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে ভাঙ্গি তরমুজ বা খরমুজের মতো রসালো ফল উত্তম। তবে সেটা গর্ভবতী নারীদের জন্য কতটা উত্তম সেই বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। কেননা মার্কিন স্ত্রীর রোগ বিশেষজ্ঞের মতে এমন সময় যতটা সম্ভব খরমুজ জাতীয় ফল এড়িয়ে চলা উচিত। খরমুজে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে যা গর্ভের সন্তানের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এমনকি গর্ভপাত ঘটাতে পারে।

কাঁচা ডিম দুধ

কাঁচা বা কম সিদ্ধ করার ডিম ও ফুটানো ছাড়া দুধ খাওয়া ঠিক না। এগুলো থেকে জীবাণু সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ডিম প্রোটিনের প্রধান উৎস। গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি ডিম রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কাচা ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কাঁচা ডিমে আছে শালমনেরা নামক একটি ব্যাকটেরিয়ার যা জ্বর, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়ার মত রোগের কারণ হতে পারে। ডিম ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে যাতে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

অপ্রস্তরিত দূত বা কাঁচা দুধে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থাকে যা মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তাই ভালো করে না ফুটিয়ে দুধ পান করা যাবে না।অপস্তরিত দুধ দিয়ে তৈরি খাবার যেমন নরম পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ অপাস্তরিত এই সকল পনির মা এবং গর্ভের বাচ্চা উভয়ের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। অপস্তরিত বলতে আমরা বুঝি পুরোপুরি কাঁচা দুধ থেকে যে পনির তৈরি করা হয়।

এছাড়াও যে সব খাবার থেকে গর্ভবতী মায়ের বিরত থাকতে হবে সেগুলো হচ্ছে; অপস্তরিত ফলের রস, দোকানের বানানো ফলের জুস, সংরক্ষিত সালাদ, খাবারের সোডা, কিছু গভীর সমুদ্রের মাছ (টুনা ফিস, শার্ক সহ অনেক নোনা পানির মাছ, কাকড়া), ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় ঔষধ, হাই মার্কারি ফিস, হাফ বয়েল্ড ডিম।

গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় সর্বদা তাজা খাদ্য রাখার চেষ্টা করবেন। রিফ্রিজারেটরে সংরক্ষিত বা অতিরিক্ত গরম খাবার না খাওয়াই ভালো। এই সময় গর্ভাবস্থায় খাদ্যাভাসে যে কোন খাবার গ্রহণ বা বর্জনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

গর্ভাবস্থায় একজন মাকে কত গ্রাম প্রোটিন এবং আমিষ গ্রহণ করতে হবে?

উত্তর: দৈনিক ৯০ থেকে ১০০ গ্রাম প্রোটিন এবং আমিষ একজন গর্ভবতী মাকে গ্রহণ করতে হবে।

প্রথম তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের কি পরিমানে ক্যালরি প্রয়োজন?

উত্তর: প্রথম তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের দৈনিক 1600 ক্যালোরি প্রয়োজন।

অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে সন্তান জন্ম দিলে তার কি সমস্যা হতে পারে?

উত্তর: অপুষ্টিতে আক্রান্ত মায়েরা যে সন্তানের জন্ম দেয় তাদের জন্মের পর ওজন কম হয়, বুদ্ধির বিকাশ ব্যাহত হয় ও স্বাস্থ্য খারাপ থাকে।

শেষ কথা

সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আশা করছি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে আমাদের আজকের আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনারা যথাযথ ধারণা অর্জন করেছেন। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি সামান্য উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং যেকোনো সমস্যার কথা আমাদের জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন কনটেন্ট পেতে এবং নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন এবং ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন।

পোস্ট ট্যাগ-

4 মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা,১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা,গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা,২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা,গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা pdf,৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা,৫ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা।

আপনার জন্য আরো 

আপনার জন্য-

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

বমি হলে কি খাওয়া উচিত

থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য উপযোগী খাবার

সিজারিয়ান মায়ের খাদ্য তালিকা

সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাবার গ্রহণ

কিডনি পরিষ্কার রাখার ৯টি খাবার সম্পর্কে জেনে নেই

শীতে ত্বকের যত্ন নিন রুটিন মাফিক

শীতের মৌসুমে ত্বকের যত্ন নিতে মধু ব্যবহার করুন

শীতে ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন

SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 505 other subscribers

 

প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন

SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।

SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।

SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।