এসএমএস মার্কেটিং কি? কিভাবে এটি করে?

আপনি কি আপনার ব্যবসার জন্য প্রচুর কাস্টমার চান? আপনার বাজেট অথবা সময় কম থাকার কারনে বেশি কাস্টমার আনতে পারছেন না? তাহলে এসএমএস মার্কেটিং আপনাকে অনেক দিক থেকে সাহায্য করতে পারে।

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে এসএমএস মার্কেটিং অনেক ফলদায়ক একটি মার্কেটিং পদ্ধতি। তাই আজকের পোস্টে আমরা এসএমএস মার্কেটিং নিয়ে সম্পুর্ন আলোচনা করবো। তো চলুন দেরী না করে আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করি।

 

এসএমএস মার্কেটিং কি?

এসএমএস মার্কেটিং এক প্রকারের ডিজিটাল মার্কেটিং যেখানে মোবাইলে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠানোর মাধ্যমে মার্কেটিং করা হয়। মোবাইলে এসএমএস পাঠানোর মাধ্যমে বর্তমানে অনেক কোম্পানি তাদের মার্কেটিং করে।

এটির সবথেকে বড় সুবিধা হলো কম খরচে সরাসরি অনেক কাস্টমার পাওয়া যায়। স্পেশাল ডিল, সেল, ইভেন্ট ইত্যাদির প্রচারণার ক্ষেত্রে এসএমএস মার্কেটিং ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

এসএমএস মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

আপনি অনেক মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে এসএমএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কুপন, স্পেশাল অফার, অন্যান্য তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন।

নাম্বার গুলো আপনি আপনার সাইটের সাইনআপ ফর্ম বা অন্য কোনো মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। এসএমএস পাঠালে ব্যবহারকারী সেগুলো সাধারণত স্প্যাম হিসেবে ধরে না। এটি এসএমএস মার্কেটিং এর একটি বড় সুবিধা।

 

আপনার কোম্পানির জন্য এসএমএস মার্কেটিং কি ভালো?

আপনার কোম্পানির জন্য এটি একটি ভালো অপশন হতে পারে। আপনার সরাসরি এসএমএস মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার কাস্টমারদের কাছে পৌছাতে পারবেন এবং মার্কেটিং করতে পারবেন।

এছাড়া এতে তুলনামূলক কম খরচ পড়ে। আবার OTP, Confirmation Massage, Transactional massage ইত্যাদি এসএমএসের মাধ্যমে পাঠালে আপনার কোম্পানি আরোও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।

 

এসএমএস মার্কেটিং এর সুবিধা সমুহ।

এসএমএস মার্কেটিং এর অনেক সুবিধা রয়েছে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো।

১. এর মাধ্যমে আপনি সবথেকে বেশি ইম্প্রেশন পাবেন। অর্থাৎ সবথেকে বেশি লোক আপনার এসএমএস দেখবে।

২. নতুন কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এসএমএস মার্কেটিং সবথেকে বেশি ফলদায়ক।

৩. কম খরচেই এটি করা যায় তাই এটি বাজেট ফ্রেন্ডলি।

৪. এসএমএস মার্কেটিং একটি অফলাইন মার্কেটিং সিস্টেম তাই ইম্প্রেশন অনেক বেশি পাওয়া যায়।

৫. এসএমএসের উপর মানুষ অনেক বেশি বিশ্বাস করে তাই সহজেই কাস্টমার পাওয়া যায়।

 

কিভাবে এসএমএস মার্কেটিং করবেন?

কয়েকটি শব্দের কিছু এলোমেলো এসএমএস পাঠিয়ে দিলেই আপনি কাস্টমার পাবেন না। এর জন্য আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। নিচে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।

একটি ফলদায়ক এসএমএস ক্যাম্পেইন তৈরী করুন
আপনি একটি এসএমএস একসাথে অনেক গুলো লোকের কাছে পৌছাবেন।

তাই আপনাকে এসএমএসটি এমনভাবে লিখতে হবে যেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আপনার এসএমএসটির প্রতি আকৃষ্ট হয়। এরকম এসএমএস তৈরী করার জন্য আপনি নিম্নোক্ত টিপস গুলো অনুসরণ করতে পারেন।

১. একটি সেরা এসএমএস মার্কেটিং টুল বাছুন।

২. আপনার এসএমএস যথাসম্ভব ছোট এবং আকর্ষণীয় করে তুলুন।

৩. ক্যাম্পেইনের উপর সর্বদা নজর রাখুন।

৪. আগের ক্যাম্পেইনের ভুল গুলো পরের ক্যাম্পেইনে শুধরে নিন।

 

একটি ফলদায়ক এসএমএস কিভাবে তৈরী করবেন?

আপনি যদি ভালোভাবে এসএমএস লিখতে পারেন তাহলে একটি ক্যাম্পেইনেই অনেক গুলো কাস্টমার পেয়ে যাবেন। এর ফলে আপনার টাকা কম খরচ হবে।

নিচে কিছু টিপস উল্লেখ করা হলো যেগুলো একটি এসএমএস তৈরী করার সময় কাজে লাগতে পারে।

১. আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কথা ভেবে একটি সেগমেন্ট তৈরী করুন।

২. প্রতিটি সেগমেন্টের জন্য আলাদা করে এসএমএস লিখুন।

৩. একটি CTA ( Call to Action ) ব্যবহার করুন।

৪. এসএমএস যথাসম্ভব কম শব্দের করুন।

৫. সঠিক বানান, ব্যাকরন এব‍ং সহজ সরল ভাষা ব্যবহার করুন।

এভাবে আপনি একটি সুন্দর এসএমএস লিখতে পারবেন।

 

একটি এসএমএস মার্কেটিং টুল বাছুন।

যে সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি এসএমএস পাঠানো, ট্র্যাকিং ইত্যাদি করতে পারবেন তাকে এসএমএস মার্কেটিং টুল বলে। বর্তমানে ইন্টারনেটে অনেক এসএমএস মার্কেটিং টুল রয়েছে।

তাই একটি ভালো টুল বাছাই করা একটু কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। তবে একটি সঠিক টুল বাছাই করার জন্য আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বর্তমানে কিছু টুল রয়েছে যেগুলো স্টার্টআপ বা নতুন কোম্পানির জন্য ভালো।

আপনার কোম্পানি যদি এমন নতুন হয়ে থাকে তাহলে সেই টুল গুলো বাছাই করতে পারেন। এছাড়া এসএমএস কতো দ্রুত সেন্ড হবে? ট্র্যাকিং করা যাবে কি না ইত্যাদি বিষয় গুলোও মাথায় রাখতে হবে।

 

সঠিক সময়ে এসএমএস প্রেরন করুন।

একজন মানুষ সবসময় তার মোবাইল নিয়ে বসে থাকে না। তাই আপনাকে এমন একটি সময় নির্নয় করতে হবে যে সময়ে বেশিরভাগ মানুষ সক্রিয় থাকে।

যেমন উদাহরণ হিসেবে ধরে নিন অনেক মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে একটু আধটু মোবাইল চালায়। আবার সকালের নাস্তা করার আগেও অনেকে মোবাইল চালায়। তবে বেশিরভাগ মানুষ রাত্রে মোবাইল চালায়।

এভাবে আপনি সবার আচরণ পর্যবেক্ষণ করে একটি সঠিক সময়ে এসএমএস পাঠাতে পারেন। আপনি আগের ক্যাম্পেইন গুলো পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমেও আইডিয়া নিতে পারেন।

 

যে ভুল গুলো আপনার এড়িয়ে চলা উচিৎ

 

একটি সফল ক্যাম্পেইন চালানোর জন্য আপনাকে অনেক বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে একটি ছোট্ট ভুল আপনার অনেক গুলো কাস্টমার হারানোর জন্য দায়ি হতে পারে। নিচে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো যেগুলো আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে।

১. CTA ব্যবহার না করা।

২. অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার করে এসএমএস লিখবেন না।

৩. অসময়ে এসএমএস প্রেরন করবেন না।

৪. রেজাল্ট এর দিকে সর্বদা নজর রাখবেন।

৫. কম শব্দের একটি অসাধারন এসএমএস লিখার চেষ্টা করবেন।

৬. অতিরিক্ত এসএমএস প্রেরন করবেন না।

 

আমাদের শেষ কথা

এসএমএস মার্কেটিং অনেক বেশি কাস্টমার পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি অসাধারন পথ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া Confirmation massage, Transactional massage ইত্যাদি ক্ষেত্রে এসএমএস ব্যবহার করা হয়।

তবে আপনাকে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত এসএমএস প্রেরন করলে সেগুলো স্প্যাম হিসেবে ধরে নিতে পারে। তাই সপ্তাহ সাধারণত ২ টা এসএমএস প্রেরন করাই শ্রেয়।

আপনি যদি অতি দ্রুত আপনার কোম্পানিকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান তাহলে এসএমএস মার্কেটিং আপনার জন্য একটি সেরা অপশন হতে পারে।

আশাকরি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাকে এসএমএস মার্কেটিং সম্পর্কে সম্পুর্ন ধারনা দিতে পেরেছে। এমন নতুন নতুন এব‍ং শিক্ষানীয় আর্টিকেল পড়তে প্রতিদিন আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

SANAUL BARI

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।