খাবারের ক্যালোরি সেই খাবারে সঞ্চিত শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। মানবদেহ প্রতিদিনের ক্রিয়াকলাপ যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস, নড়াচড়া, চিন্তাভাবনা, হাঁটা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদনের জন্য ক্যালোরি ব্যবহার করে। একজন ব্যক্তির বর্তমান ওজন বজায় রাখতে প্রতিদিন প্রায় 2000 ক্যালোরির প্রয়োজন হয়।
প্রোটিন জাতীয় খাবার সহ গর্ভবতী মায়ের খাবার সম্পর্কে বিস্থারিত জানুন
যাইহোক, দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা ব্যক্তির লিঙ্গ, বয়স এবং শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, পুরুষদের সাধারণত মহিলাদের চেয়ে বেশি ক্যালোরির প্রয়োজন হয়।
সুষম খাবারের উপাদান –সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে এমন পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাবার সুষম খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত। একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্য রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
সুষম খাবার কাকে বলে?
যে খাদ্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় ৭টি উপাদান (কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং পানি এই ৭টি খাদ্য উপাদান) সঠিক অনুপাতে উপস্থিত থাকে এবং যে খাদ্য গ্রহণ করলে ব্যাক্তির সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে, তাকে সুষম খাদ্য বলে।
যে খাদ্যে মানবদেহের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান থাকে তাকে, সুষম খাদ্য বলে।
সুষম খাবারের তালিকা
১।শাকসবজি এবং শিম (মটরশুটি)
২।শস্য বা দানা জাতীয় খাদ্য(গম, ভুট্টা, ভুট্টা, বাজরা, ওট, চাল, আটা, পাস্তা ইত্যাদি)
৩।নিয়মিত ফল গ্রহণ করুন।
৪।চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছ, ডিম, বাদাম জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।
৫।দুধ, পনির, দই জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন
সুষম খাবারের উপাদান ৬টি
১।আমিষ/প্রোটিন
২।শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
৩।চর্বি
৪।ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ
৫।খনিজ উপাদান
৬।পানি
১।কার্বোহাইড্রেট: কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলি হল প্রাথমিক শক্তির উত্স যা আমাদের মস্তিষ্ক এবং পেশী ব্যবহার করে। আমাদের ক্যালোরির প্রায় 55-60% কার্বোহাইড্রেট থেকে আসা উচিত।
২।প্রোটিন: প্রোটিন আমাদের শরীরের দ্বারা ব্যবহৃত হয় আমাদের সঠিকভাবে বিকাশ এবং বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। প্রোটিন আমাদের পেশী, অঙ্গ, ত্বক এবং চুল তৈরি করে।
৩।চর্বি: আমাদের দৈনিক ক্যালোরির প্রায় 35% এর বেশি চর্বি থেকে আসা উচিত নয়। চর্বিগুলি শক্তির একটি দুর্দান্ত উত্স: 1 গ্রাম চর্বি 9 ক্যালোরি সরবরাহ করে।
৪।ভিটামিন: ভিটামিন হল জটিল জৈব পদার্থ যা আমাদের খাবারে পাওয়া যায় যা শরীরের প্রায় প্রতিটি সিস্টেমকে সমর্থন করে, যার মধ্যে ইমিউন সিস্টেম, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র রয়েছে।
খনিজ: খনিজগুলি মৌলিক পদার্থ এবং মাটিতে পাওয়া যায়। এগুলি গাছপালা দ্বারা শোষিত হয়, যা আমরা খাই বা প্রাণীরা খাই – যা আমরা খাই।
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা।গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার
৫।ফাইবার: ফল, শাকসবজি এবং শস্যের মতো উদ্ভিদে ফাইবার পাওয়া যায়। ফাইবার দুটি প্রধান প্রকারের দ্বারা গঠিত: দ্রবণীয় ফাইবার এবং অদ্রবণীয় ফাইবার, উভয় প্রকারই সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন।
৬।পানি: আমাদের শরীর প্রায় 65% পানি দ্বারা গঠিত, এটি শোষণ, হজম, মলত্যাগে সহায়তা করে এবং আমাদের শরীরের চারপাশে পুষ্টির সঞ্চালনে সহায়তা করে। আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তাপ বিতরণের জন্যও পানি অপরিহার্য। এছাড়াও পানি আমাদের শরীরের চলন্ত জয়েন্ট এবং আমাদের চোখ লুব্রিকেট করে।
সুষম খাবারের উপকারিতা
১।একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য মানবদেহকে নির্দিষ্ট ধরণের রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
২।উন্নত স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য।
৩।অনাক্রম্যতা এবং স্বাস্থ্যকর বিকাশের জন্য খাদ্যের ভিটামিন এবং খনিজগুলি অত্যাবশ্যক।
৪।স্বাস্থ্যকর খাবার পর্যাপ্ত শরীরের ওজনেও অবদান রাখতে পারে।
৫।ভাল মেজাজ এবং শক্তি স্তর।
সুষম খাবারের প্রয়োজনীয়তা
১।এটি আমাদের দেহে সমস্ত প্রয়োজনীয় শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।
২।সুষম খাবার আমাদের শরীরকে অসংখ্য রোগ থেকে রক্ষা করে।
৩।দেহ বৃদ্ধি এবং মেরামতে কাজ করে। তাছাড়া নতুন কোষ গঠনের জন্য এটিতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ আকারে পুষ্টি প্রয়োজন যা আমরা সুষম খাদ্য হতে পাই।
৪।এটি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে।
৫।সুষম খাবার স্বাস্থ্যকর শরীরের ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে।
৬।সুষম খাদ্য গ্রহণ করার পরে আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়।
৭।স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার মনকে সুস্থ করে তোলে মন আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করে এবং এটি ফোকাস এবং ঘনত্বও বাড়ায়।
৮।সুষম ডায়েট আপনার দেহকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে যা ভাইরাস এবং অন্য ধরণের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
৯।স্বাস্থ্যকর ডায়েটে কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা শরীরকে অনেকগুলি ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।
১০।স্বাস্থ্যকর খাবার কেবল আপনার মেজাজকে উন্নত করে না, এটি আপনার মানসিক ফোকাসকে তীক্ষ্ণ করে তোলে।
১১।স্বাস্থ্যকর ভারসাম্যযুক্ত খাদ্যও আপনার চেহারা উন্নত করে। ভাল খাওয়া স্বাস্থ্যকর ত্বক এবং চুল এবং একটি “আলোক” অবদান রাখে যা আপনাকে আরও কম বয়সী দেখায়।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
মানব শরীরের জন্য একটি প্রয়োজনীয় মিনারেল হলো আয়রন। এটি মেটাবলিজমে সহায়তা করে। আমাদের শরীর পর্যাপ্ত আয়রন না পেলে রক্তস্বল্পতায় ভুগতে পারে। রক্তস্বল্পতা থেকে ক্লান্তি, বমিভাব ও হার্টে সমস্যা (যেমন- অনিয়মিত হার্টবিট) হতে পারে। একারণে চিকিৎসকেরা গর্ভবতী নারী, ঘন মাসিকের নারী, শিশু বা অল্পবয়সি ছেলেমেয়ে, মাংস বর্জনকারী লোক, ঘনঘন রক্তদাতা, পরিপাকতন্ত্রের রোগী ও কিছু ক্যানসার রোগীদের আয়রন সাপ্লিমেন্ট প্রেসক্রাইব করেন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারের অন্তর্গত অ্যাকাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিক্সের মতে- প্রতিদিন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ৮ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ১৮ মিলিগ্রাম ও গর্ভবতী নারীর ২৭ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয়। এটা মনে রাখা ভালো যে প্রয়োজনাতিরিক্ত আয়রন বিপদজনক হতে পারে। যাদের বয়স ১৪ বছরের বেশি তাদের সর্বোচ্চ লিমিট হচ্ছে ৪৫ মিলিগ্রাম।
অতিরিক্ত আয়রন গ্রহণে কেবল বমিভাবের মতো ছোটখাট উপসর্গ নয়, অর্গান ড্যামেজও হতে পারে। তাই মিনারেলটির সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। আপনি ডায়েটে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার সংযোজন করে দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে পারেন। এখানে আয়রন পাওয়া যায় এমনকিছু খাবারের তালিকা দেয়া হলো।
১।কলিজা: কলিজা অনেকেরই পছন্দের খাবার নয়, কিন্তু এটা হলো আয়রনের অন্যতম সর্বোত্তম উৎস। ৪ আউন্স কলিজাতে ৭ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২ এবং প্রোটিনও পাওয়া যায়। সাবধান, এতে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরলও রয়েছে। তাই বেশি পরিমাণে বা প্রতিদিন কলিজা খাবেন না। সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি কমিটি অন নিউট্রিশনের মতে, প্রতিসপ্তাহে একবারের বেশি কলিজা খাওয়া উচিত নয়।
২।গরুর মাংস: কাটের ভিত্তিতে গরুর মাংসে দৈনিক প্রয়োজনীয় আয়রনের ১০ থেকে ২৪ শতাংশ পাওয়া যায়। মাংসের আয়রনকে হিমি আয়রন বলা হয়, যা শরীরে উদ্ভিজ্জ আয়রনের চেয়ে ভালোভাবে শোষিত হয়। মাংস খেতে না চাইলে আপনার ডায়েটে সেসব খাবারের পরিমাণ বাড়ান যা একজন ভেজিটারিয়ান আয়রনের চাহিদা মেটাতে খেয়ে থাকেন।
৩। ফর্টিফায়েড সিরিয়াল: ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, নন-হিমি আয়রনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হলো ফর্টিফায়েড ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল। বিশেষ করে যারা মাংস এড়িয়ে চলেন তাদের জন্য এই খাবার শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রন যোগাতে বিশেষ সহায়ক হতে পারে। এক বাটি ফর্টিফায়েড সিরিয়ালে দৈনিক প্রয়োজনীয় আয়রনের ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব। এর পাশাপাশি এক গ্লাস ভিটামিন সি সমৃদ্ধ অরেঞ্জ জুস পান করুন, যা শরীরকে আয়রন শোষণে সাহায্য করবে। পরামর্শটি দিয়েছে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক।
৪।রাজমা: মাংস অনাহারীদের জন্য নন-হিমি আয়রনের আরেকটি সমৃদ্ধ উৎস হলো রাজমা বা কিডনি বিনস। এক বাটি রাজমাতে প্রায় ৩ মিলিগ্রাম আয়রন পেতে পারেন।
৫।মুরগির মাংস: আয়রনের অন্য একটি ভালো উৎস হলো মুরগির মাংস। হোয়াইট মিটের চেয়ে ডার্ক মিটে আয়রন একটু বেশি থাকে। মুরগির এক বাটি ডার্ক মিটে (পা বা উরুর মাংস) দৈনিক প্রয়োজনীয় আয়রনের ৮ শতাংশ পাওয়া যায়।
৬।পালংশাক: বাজারে বা রাস্তায় পালংশাক চোখে পড়লেই কিনে ফেলুন, কারণ এটি হলো নন-হিমি আয়রনের একটি সর্বোৎকৃষ্ট উৎস। এক বাটি পালংশাক খেয়ে শরীরে ৪ মিলিগ্রাম আয়রন সরবররাহ করতে পারবেন। কেবল আয়রন নয়, শাকটিতে উচ্চ মাত্রায় অন্যান্য পুষ্টিও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক বাটি পালংশাকে আমাদের শরীরে প্রতিদিন যতটুকু ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন তার ৪০ শতাংশ পাওয়া যায়।
৭। ডিমের কুসুম: ডিমের সাদাংশের তুলনায় কুসুমেই সবচেয়ে বেশি পুষ্টি থাকে। একটি মধ্যম আকারের ডিমের কুসুম থেকে ০.৫ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। এখানেই শেষ নয়- ডিমের কুসুমে স্বাস্থ্যকর চর্বি, কোলাইন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, ফোলেট ও সেলেনিয়ামও রয়েছে।
৮।মসুর ডাল: আপনার জন্য সবচেয়ে বড় চমক মসুর ডালেই। এক বাটি মসুর ডালে প্রায় ১৪ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে। একারণে সম্ভবত এটাই শাকাহারীদের জন্য আয়রনের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উৎস।
৯। কাজুবাদাম: সকল বাদামই আয়রনের ভালো উৎস, কিন্তু সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় কাজুবাদামে। প্রতি আউন্স (প্রায় ১৭টি) কাজুবাদামে প্রায় ২ মিলিগ্রাম আয়রন পেতে পারেন। কাজুবাদামে ভলো পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ও ফাইটেটসও পাবেন।
১০।শিমের বিচি: শরীরে আয়রন যোগানোর একটি সুস্বাদু উপায় হলো শিম ও শিমের বিচি খাওয়া। আপনার জন্য আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য হলো, এক বাটি রান্নাকৃত শিমের বিচিতে প্রায় ৫.৪ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে। শিমের বিচিকে রান্না করে অথবা ভেজে যেভাবেই খান না কেন, আয়রন পাবেন। আধ বাটি ভাজা শিমের বিচিতে প্রায় ২ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
ভিটামিন সি এমন মানব শরীরের জন্য খুবই জরুরি। কারণ রক্ত চলাচল থেকে শুরু করে শিরা ও ধমনীর কর্মক্ষমতা বজায় রাখা, কোষ গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি সব কিছুতেই ভিটামিন সি-এর উপস্থিতি অপরিহার্য। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ভিটামিন সি-এর প্রাত্যহিক চাহিদা হলো ৬০ মিলিগ্রাম। এই ভিটামিন সি আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবার থেকেই পেয়ে থাকি। ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উত্সের কথা ভাবতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে লেবুর ছবি! কিন্তু জানেন কি, সর্বোচ্চ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ প্রথম দশটি খাবারের মধ্যেই লেবুর স্থান নেই? আসুন জেনে নিই সারাবিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ ভিটামিন সি যুক্ত দশটি খাবারের কথা –
১।কাঁচা মরিচ : সর্বোচ্চ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের তালিকার প্রথমেই রয়েছে আমাদের অতি চেনা কাঁচা মরিচ।
আমরা স্যুপ, সালাদ, ভর্তার সাথে বা এমনিতেই কাঁচা মরিচ খেয়ে থাকি। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচে রয়েছে ২৪২.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। এর পরেই রয়েছে লাল মরিচের স্থান। প্রতি ১০০ গ্রাম লাল মরিচে রয়েছে ১৪৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
২।পেয়ারা : দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পেয়ারা। পেয়ারা প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে ২২৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। একটি মাঝারি আকারের পেয়ারায় প্রায় ১২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। তবে পেয়ারার জাতভেদে এর পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।
শিশুর মানসিক বিকাশে বাবা-মার করণীয়
৩।বেল মরিচ: বেল মরিচ পাস্তা সস বা পিজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি মেক্সিকান মরিচ। প্রতি ১০০ গ্রাম বেল মরিচে রয়েছে ১৮৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
৪।টাটকা ভেষজ : বেশির ভাগ ভেষজই নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর। সেটা তাজা হোক অথবা শুকনো। তবে তাজা থাইম ও পোর্সলেতে রয়েছে আর সব ভেষজ থেকে বেশি ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম থাইমে রয়েছে ১৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং প্রতি ১০০ গ্রাম পোর্সলেতে রয়েছে ১৩৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
৫।গাঢ় সবুজপাতা এবং শাক : আমার খাবার হিসেবে যেসব কাঁচা পাতা খাই যেমন পুদিনা বা লেটুস তেমনই একটি হলো কধষব। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম কধষবতে রয়েছে ১২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। শাকের ভেতরে সরিষা শাক সর্বোচ্চ ভিটামিন সি যুক্ত। প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষা শাকে রয়েছ ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
৬।ব্রকোলি: সবুজ টাটকা ব্রকোলি ভিটামিন সি-এর আরেকটি ভালো উত্স। প্রতি ১০০ গ্রাম ব্রকোলিতে রয়েছে ৯৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
৭।কিউয়ি ফল : কিউয়ি ফল ভিটামিন সি-এর আরেকটি উত্কৃষ্ট উত্স। প্রতি ১০০গ্রাম কিউয়িতে রয়েছে ৯৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
৮।পেঁপে: আমাদের অতি পরিচিত ফল পেঁপে রয়েছে অষ্টম স্থানে। পেঁপেকে ভিটামিন এ এবং ফোলেটের আধার হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হলেও এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে রয়েছে মিলিগ্রাম ৬২ ভিটামিন সি।
৯।কমলা: কমলার খাদ্যযোগ্য প্রতি ১০০ গ্রাম অংশে রয়েছে ৫৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
১০।স্ট্রবেরী: চমত্কার স্বাদের ফল স্ট্রবেরী এমনিতে খাওয়ার পাশাপাশি কেক, আইসক্রিম, ডেজার্ট এবং আরো বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরীতে রয়েছে ৫৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার
আমাদের শরীরের কাঠামো তৈরি হয় হাড়ের মাধ্যমে। অথচ হাড়ের যত্নের বিষয়ে আমরা বেশির ভাগ মানুষই খুব উদাসীন বা তেমন ভাবে কিছুই জানি না। কয়েকটি খাবার বা খাদ্য উপাদান আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রয়েছে যেগুলি আমাদের হাড়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
যেমন, লবণ অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইড, সফট ড্রিংকস বা নরম পানীয়, চা ও কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন, অতিরিক্ত প্রোটিন বা প্রাণীজ প্রোটিন ইত্যাদি। তবে এমন অনেক খাবার বা খাদ্য উপাদান রয়েছে যেগুলি নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়, হাড় হয়ে ওঠে মজবুত।
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারগুলো হল
১) কমলালেবু, মুসম্বি, পাতিলেবুর মতো যে কোনও লেবুতেই থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড আর ভিটামিন সি যা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দ্রুত মেটাতে সাহায্য করে।
২) কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে থাকে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে প্রায় ২৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে প্রতিদিন পাতে রাখুন এক মুঠো কাঠ বাদাম।
৩) ব্রোকলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামে ভরপুর এই সবজি শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।
৪) ৫০ গ্রাম ঢ্যাড়স বা ভেন্ডিতে প্রায় ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে পাতে রাখুন ঢ্যাড়স। উপকার পাবেন।
৫) শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সয়াবিন অত্যন্ত কার্যকর। এক কাপ সয়াবিনে প্রায় ১৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই নিয়মিত পাতে রাখুন সয়াবিন। উপকার পাবেন।
৬) তিলের বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ১০০ গ্রাম কাঁচা তিলের বীজে ১,০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
শর্করা জাতীয় খাবার
সাধারণত যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি থাকে এই ধরনের খাবার কি শর্করা জাতীয় খাবার বলা হয়ে থাকে।
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের শর্করা জাতীয় খাবার প্রয়োজন হয়। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকা শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তিনটি মৌলিক উপাদান নিয়ে শর্করা জাতীয় খাবার গঠিত হয়ে থাকেঃ হাইড্রোজেন, কার্বন ও অক্সিজেন।
শর্করা জাতীয় খাবার কি কি?
এ জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো- রুটি, মুড়ি , চিড়া , আলু, পাউরুটি ইত্যাদি। আমরা 4 ক্যালরি শক্তি পেয়ে থাকে মাত্র 1 গ্রাম শর্করা মাধ্যমে। মানুষের শরীরে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম শর্করা জমা থাকে। আর এই শর্করা থেকেই আমরা আমাদের শক্তির যোগান পেয়ে থাকি।
শর্করা জাতীয় খাবারের কাজ
এই জাতীয় খাবার খুব সহজে হজম যোগ্য তাই আমরা এর মাধ্যমে পর্যাপ্ত শক্তির যোগান পেয়ে থাকি। এটি আমাদের দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখে। এ জাতীয় খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
যেভাবে বুঝবেন আপনার শর্করার অভাব রয়েছে কিনাঃ
১।ক্ষুধা অনুভব করা
২।বমি ভাব
৩।অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়া
৪।হার্টের কম্পন বেড়ে যাওয়া
৫।ক্লান্তি এবং বিভ্রান্তিকর অনুভূতি
৬। মাথা ঘোরা
এমন সম্ভাবনা দেখা দিলে এটি শর্করার অভাব বলে চিহ্নিত করা হয়। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ২৭৬ গ্রাম শর্করা গ্রহণ করা উচিত।
আরও পড়ুন-
৬ মাস থেকে ৫ বছরের বাচ্চার খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা দিন শেষ
বাচ্চার পুষ্টি নিয়ে ভাবছেন?অধিক পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ বাচ্চার খাবার তালিকা
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন
SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এএখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
SS IT BARI-সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালিখি করি। এর আগে বিভিন্ন পোর্টালের সাথে যুক্ত থাকলেও, SS IT BARI-আমার হাতেখড়ি। তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিশ্লেষণ বাংলায় জানতে ভিজিট করুন http://ssitbari.com
খুবি তথ্যবহুল একটা কন্টেন্ট। ধন্যবাদ❤