প্রোটিন জাতীয় খাবার-মা হতে চলেছেন, বেশি বেশি খাও’—এমন উপদেশ হরহামেশা শুনতে হয় হবু মাকে। কিন্তু কী খাবেন, আর কতটাই–বা খাবেন, সেই পরামর্শ কজন পান। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর হয়তো খাবার খাচ্ছেন প্রচুর, ওজনও বাড়ছে ঠিকঠাক, কিন্তু রয়ে গেল পুষ্টির ঘাটতি। এ রকম যাতে না হয়, তার জন্য জেনে রাখতে হবে পুষ্টি উপাদান ও এগুলোর উৎস সম্পর্কে।
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা।গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার
গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস বাদ দিয়ে বাকি সময়টায় গড়ে অন্তত ১০ কেজি ওজন বাড়া প্রয়োজন। পুষ্টি নিশ্চিত করা আর ওজন বাড়ানোর জন্য বাড়তি খাবার তো খেতেই হবে। আগে হয়তো তিন বেলা খেতেন নিজের জন্য, অনাগত সন্তানের জন্য খেতে হবে আরও কমপক্ষে তিন বেলা। কিন্তু এ সময় খাবারের পর কারও বমিভাব দেখা যায়। আবার ভোগেন হজমের সমস্যায়। শারীরিক অবস্থার বিবেচনা করে নিজের রুচি অনুযায়ী সারা দিনের খাবার ভাগ করে নিন।
গর্ভবতী মায়েদের কি কি খাবার খাওয়া উচিত
শিশুর ঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এবং তার মস্তিস্কের স্বাভাবিকতার জন্য গর্ভাবস্থায় মায়ের পর্যাপ্ত পুষ্টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভকালীন সময়কে তিন ভাগে ভাগ করে সেই মতো মায়ের ক্যালরি গ্রহণের হিসাব ঠিক করতে হবে।
প্রথম তিন মাস
গর্ভধারণের পর প্রথম ১২ সপ্তাহ (তিন মাস) ভ্রূণের বৃদ্ধি খুব একটা হয় না, তবে অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গঠন হয় এ সময়। এটা তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় মায়ের প্রয়োজন পর্যাপ্ত ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। লোহা আর ফলিক অ্যাসিডের কথা বিশেষভাবে মনে রেখে লাল মাংস, কলিজা, কচুশাক, ডাঁটাশাক, আমলকী, গাঢ় লাল রঙের ফল (আনার) ও শাকসবজিসহ অন্যান্য টাটকা ফলমূল এবং শাকসবজিও খাবেন অবশ্যই। এ সময় মায়ের ওজন তেমন একটা বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দৈনিক মাত্র ১০ ক্যালরি বেশি খাবার গ্রহণ করাই যথেষ্ট।
১২ সপ্তাহের পরপর
গর্ভাবস্থার মধ্যবর্তী তিন মাসে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশ খানিকটা বাড়তি ক্যালরির প্রয়োজন হয়। দৈনিক ৩৪০ ক্যালরি বাড়তি গ্রহণ করতে হবে এ সময়। শেষ তিন মাসে এই বাড়তি পরিমাণটা হবে ৩৫০ ক্যালরি। ক্যালরির হিসাব ঠিক রাখতে গর্ভধারণের আগেই একজন পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হওয়া ভালো। জিংক ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা বাড়ে ১২ সপ্তাহ পেরোনোর পর। দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, ডিম ও ছোট মাছে ক্যালসিয়াম আছে পর্যাপ্ত।
খাবারের বৃত্তান্ত
ক্যালরির উত্স হিসেবে শুধু ভাত বা শর্করাজাতীয় খাবার খেলেই হবে না, আমিষজাতীয় খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। সাধারণভাবে মোট ক্যালরির অর্ধেকটা নিতে হবে শর্করা থেকে, এক–চতুর্থাংশ আমিষ থেকে, বাকি এক–চতুর্থাংশ নিতে হবে স্নেহজাতীয় খাবার থেকে। এক গ্রাম শর্করাজাতীয় খাবার থেকে ৪ ক্যালরি, এক গ্রাম আমিষজাতীয় খাবার থেকে ৪ ক্যালরি আর এক গ্রাম স্নেহজাতীয় খাবার থেকে ৯ ক্যালরি পাওয়া যায়। এটা মাথায় রেখে ক্যালরির হিসাব করতে হবে।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল ও অন্যান্য বিচিজাতীয় খাবার আমিষের উত্স। প্রাণিজ উত্স থেকে পাওয়া আমিষ সবচেয়ে ভালো। তবে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাণিজ আমিষ খেতে না পারলেও কয়েক ধরনের উদ্ভিজ্জ আমিষ গ্রহণ করুন (যেমন কয়েক ধরনের ডাল)। প্রতিদিন অন্তত ১টা ডিম এবং ২ বার দুধ খেতে পারলে খুবই ভালো।
সকালের নাশতার পর বেলা ১১টার দিকে হয়তো ফল খেলেন, স্ন্যাকসজাতীয় খাবার খেলেন। এভাবে মূল খাবারগুলোর কিছু না কিছু খেতে হবে। একবারে বেশি খেতে না পারলে বারবার অল্প করে খেতে হবে (৬ বারের বেশিও হতে পারে)। ফলমূল আর শাকসবজি পুরো সময়ই খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে, ভিটামিন আর খনিজ উপাদান পেতে।
গর্ভে একাধিক সন্তান থাকলে অবশ্য পুষ্টির চাহিদা আরও বেড়ে যায়। আর মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে চিনি, গুড়, মধু ও মিষ্টিজাতীয় খাবার বাদ দিয়ে অন্যান্য খাবার অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে, যাতে গর্ভের শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত হয়।এ ক্ষেত্রে শর্করাজাতীয় খাবার থেকে মোট ক্যালরির এক–তৃতীয়াংশ নিতে হবে। আমিষের মোট পরিমাণ অন্যান্য গর্ভবতী মায়ের মতোই থাকবে।
গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার
অতিরিক্ত চা-কফি পান করা ঠিক নয়। একেবারে বাদ দিতে পারলে ভালো হয়। পান করলেও সারা দিনে তা হবে ২০০ মিলিলিটারের কম (সারা দিনে ১ চা-চামচের ৩ ভাগের এক ভাগের কম পরিমাণ চা বা কফি দিয়ে তৈরি পানীয় পান করা যাবে)। এ ছাড়া খেয়াল রাখতে হবে, চা-কফি অন্যান্য খাবারে থাকা আয়রন শোষণের হার কমিয়ে দেয়। তাই চা-কফি পান করলেও তা কোনো খাবার খাওয়ার ঠিক আগে, খাওয়ার সঙ্গে বা খাওয়ার পরপরই নয়। আধঘণ্টা সময়ের ব্যবধান রেখে অন্য খাবারের আগে বা পরে খাওয়া যাবে।
অবশ্যই পান-সুপারি, জর্দা, সাদাপাতা, খয়ের, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে। ডায়াবেটিক চিনি হিসেবে পরিচিত বিশেষ ধরনের যে চিনি কিনতে পাওয়া যায়, গর্ভাবস্থায় তা খাবেন না। বড় আকারের সামুদ্রিক মাছও এ সময় খাবেন না। এসব বিধিনিষেধ গর্ভকালীন পুরো সময়টাতেই মেনে চলতে পারলে ভালো। নিদেনপক্ষে প্রথম ৩ মাস তো অবশ্যপালনীয়।
সিজারের পর খাবার তালিকা
১. প্রোটিন, খনিজ এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
প্রোটিন নতুন টিস্যু কোষগুলির বিকাশে সহায়তা করে যা নিরাময় প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলি টিস্যু মেরামত করতে সহায়তা করে এবং সার্জারির পর পেশী শক্তি বজায় রাখে। অন্যদিকে, ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতকে শক্তিশালী করে, পেশীগুলি শিথিল করে, রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়, 250 থেকে 350 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম নবজাতকের শিশুর কাছে স্থানান্তরিত হয়।
শিশুর মানসিক বিকাশে বাবা-মার করণীয়
কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য যেমন স্কিমড মিল্ক, কম ফ্যাটযুক্ত দই, পনির, শুটি এবং শুকনো কড়াইশুঁটি প্রোটিন ও ভিটামিনগুলির দুর্দান্ত আধার।
ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে।
তিলের বীজে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, তামা, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে।
২. গোটা শস্য জাতীয় খাদ্য
গোটা শস্য জাতীয় খাবার যেমন পাস্তা, ব্রাউন ব্রেড ও ব্রাউন রাইস আপনার ডায়েটের একটি অংশ হওয়া উচিত কারণ এগুলি শর্করা সমৃদ্ধ যা শক্তির মাত্রা এবং বুকের দুধের উৎপাদন বজায় রাখতে সহায়তা করে। সমৃদ্ধ গোটা শস্য জাতীয় পণ্যগুলিতে আয়রন, ফাইবার এবং ফোলিক অ্যাসিড রয়েছে যা শিশুর বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয়। নিদ্রাহীন রাত এবং রাতে জ্বালা অনুভব করা মায়েদের দিনটি গোটা শস্যের সিরিয়ালের প্রাতঃরাশ দিয়ে শুরু করা উচিত।
৩. ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিনগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ এবং টিস্যু মেরামতে সহায়তা করে। ভিটামিন শরীরে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে যা ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুকে নতুন করে বানায়, লিগামেন্ট এবং ত্বক তৈরিতে সহায়তা করে।
ব্রকলি, পালংশাক ও মেথি পাতার মতো সবজি ভিটামিন এ এবং সি, ডায়েটারি ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের ভাল উৎস।
কমলালেবু, পেঁপে, তরমুজ, স্ট্রবেরি, আঙ্গুর এবং মিষ্টি আলু জাতীয় ফল ও সবজি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে সহায়তা করে।
৪. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
কোষ্ঠকাঠিন্য ক্ষত ও কাটাস্থানগুলিতে চাপ দিয়ে নিরাময় প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে পারে, এবং ফাইবার হল সেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি যা ঝামেলা মুক্ত অন্ত্রের গতি নিশ্চিত করে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।
কাঁচা ফল এবং শাকসবজি ডায়েটে রাফেজ যুক্ত করে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।
ওটস ও রাগিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং এটি শর্করা, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং আয়রনেরও সমৃদ্ধ উৎস।
মসুর ডাল, সবুজ কলাই ও অন্যান্য ডালও তাদের প্রোটিন এবং ফাইবার উপাদানের জন্য ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
৫. সহজে-হজমযোগ্য খাবারগুলি
জন্ম দেওয়ার পরে শরীরে গ্যাস জমে থাকে। নতুন মায়েদের উচিত গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ঘটানো খাবারগুলি না খাওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা। সি-সেকশনের পরের সময়কালে, আপনার জাঙ্ক ফুড ও কার্বনেটেড পানীয় গ্রহণ না করা উচিত এবং খাদ্য উপাদান যেমন স্যুপ, কটেজ পনির, ঝোল, দই এবং অন্যান্য এমন আইটেমগুলি খাওয়া উচিত যা শরীর সহজেই হজম করে।
প্রোটিন জাতীয় খাবার
১. চিংড়ি – প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা
চিংড়িতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ও সোডিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এছাড়া প্রতি ১০০গ্রাম চিংড়িতে ২৪গ্রাম প্রোটিন এবং আশ্চর্যজনক ০.৩গ্রাম ফ্যাট থাকে।
২. আলু
আলু প্রোটিন ও পুষ্টির ভাল উৎস। একটি মাঝারি আলুতে ৪ গ্রাম প্রোটিন থাকে। আলু খাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত কারণ লোকেরা প্রায়শই আলুতে অতিরিক্ত যে পরিমাণ অতিরিক্ত যোগ করে তা ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৩. ফুলকপি
ফুলকপিতে খুব কম ক্যালোরিযুক্ত প্রচুর প্রোটিন রয়েছে। এক কাপ কাটা ফুলকপিতে ২৭ ক্যালোরি এবং ২ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
৪. ডিম – প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা
ডিম হ’ল প্রোটিন, পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটগুলির উত্স। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিম খাদ্য হিসেবে মানুষকে আরও বেশি সন্তুষ্ট বোধ করতে এবং তাদের অত্যধিক খাওয়া বন্ধ করতে সহায়তা করে। আরো পড়ুনঃ কাঁচা ডিম খাওয়ার উপকারিতা – নাকি ক্ষতি কোনটি বেশি?
৫. গরুর মাংস
গরুর মাংস প্রতি পরিবেশনায় উচ্চ পরিমাণে প্রোটিন সরবরাহ করে। ওজন কমানোর জন্য বেছে নিতে বিভিন্ন ধরণের গো-মাংস রয়েছে। একটি মাঝারি শর্করা যুক্ত ডায়েট অনুসরণকারী লোকেরা চর্বিযুক্ত গরুর মাংস খাওয়া উচিত। একটি স্বল্প- কার্ব ডায়েটে চর্বিযুক্ত গরুর মাংস খেতে পারেন।
৬. ওটস
ওটস প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৭ গ্রাম প্রোটিন সরবরাহ করে। এগুলি উচ্চ কার্বোহাইড্রেটের উত্স। ওটমিল হিসাবে কাঁচা ওট প্রস্তুত করা সহজ এবং ফল ও বাদামের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে এগুলির স্বাদ নিতে পারেন।
৭. টুনা- প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা
টুনা হ’ল প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত এবং বহুল পরিমাণে উপলব্ধ উত্স যা খুব কম ক্যালোরি গণনা করে। টুনা একটি চর্বিযুক্ত মাছ। সালাদ, স্যান্ডউইচ এবং স্ন্যাক্সে টুনা যুক্ত করুন।
৮. পেয়ারা
পেয়ারা একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল যা সর্বত্র পাওয়া যায়। পেয়ারা সবচেয়ে প্রোটিন সমৃদ্ধ ফলগুলির মধ্যে একটি। এটি ভিটামিন সি এর মতো অতিরিক্ত পুষ্টি সরবরাহ করে।
৯. ছোলা- প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা
ছোলা একটি স্বাস্থ্যকর নিরামিষ প্রোটিন যাতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি এবং এটি হৃৎপিণ্ড ও হাড়ের স্বাস্থ্যকে ভাল করে এমন পুষ্টিগুণে পূর্ণ। এগুলি ক্যান্সার থেকেও মুক্তি দেয়।
১০. বাদাম
বাদামের উচ্চ ক্যালরির জন্য খ্যাতি রয়েছে। শুকনো, ভাজা বা কাঁচা বাদাম একটি ভরাট প্রোটিন সমৃদ্ধ নাস্তা তৈরি করতে পারে।
১১. দুধ- প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা
গরুর দুধে রয়েছে প্রোটিনের দুর্দান্ত উত্স। ৮ আউন্স দুধের পরিবেশনায় ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
১২. মসুর ডাল
মসুর ডাল প্রোটিন এবং ফাইবারের একটি বিশাল প্যাকেজ হিসেবে কাজ করে থাকে। এগুলি খুব সাশ্রয়ী মূল্যের এবং হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
১৩. কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজে প্রোটিন এবং খনিজ, যেমন ম্যাগনেসিয়াম এবং সেলেনিয়ামে ভরপুর থাকে। ওজন হ্রাস করতে চায় এমন লোকদের তেল ভাজা কুমড়োর বীজ থেকে দূরে থাকা উচিত এবং এর পরিবর্তে শুকনো ভাজা বীজ খাওয়া উচিত।
১৪. দই
আমরা সকলেই জানি যে দই হলো একটি পুষ্টিকর খাবার। দই খেতে সবাই পছন্দ করি। প্রতি কাপ দই এ ১৮-২৫ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন থাকে।
১৫. মটরশুটি
বিভিন্ন খাবারের সাথে আমরা মটরশুটি খেয়ে থাকি। প্রতি কাপ মটরশুটি তে রয়েছে ২৫ গ্রাম প্রোটিন। এতে কোলেস্টরেল এর পরিমাণ শূণ্য।
১৬. সবুজ মুগ ডাল
আপনার প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন সবুজ/কাঁচা মুগ ডাল। প্রতি ১০০গ্রাম সবুজ মুগ ডালে থাকছে ২৪গ্রাম প্রোটিন এবং মাত্র ১.৫-২গ্রাম ফ্যাট। আর তাই এটি হতে পারে আপনার ডায়েটের অন্যতম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর উপাদান কেননা এতে যেমন শর্করার মাত্রা কম, তেমনি হজমও হয় সহজে।
১৭. স্বাদু পানির মাছ
মাছ আমাদের আমিষের চাহিদা পূরণে প্রকাণ্ড ভূমিকা রেখে থাকে। সাধারণত প্রতি ১০০গ্রাম মাছে থাকে ২১-২৫গ্রাম প্রোটিন এবং ৮-১২গ্রাম পর্যন্ত ফ্যা্ট । মাছের ফ্যাটে ভয় পাবার কিছু নেই, কারণ এটি আপনার ত্বক, চোখ, চুল, নখ এবং এমন কি হৃৎপিণ্ডও ভালো রাখতে সহায়তা করে। তবে ক্যাটফিশ/মাগুর গোত্রীয় ও অতি চর্বি যুক্ত মাছ এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
১৮. সয়াবিন/ Soya Chunks
সয়াবিনের টুকরো আমিষের এক অনন্য উৎস হিসেবে বিবেচিত। প্রতি ১০০গ্রামে প্রায় ৫২গ্রাম প্রোটিন বিদ্যমান থাকে, এতে ফ্যাট রয়েছে মাত্র ০.৫গ্রাম। তাই প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা থেকে এ উপাদানটিকে বাদ দেয়া অসম্ভব।
১৯. শিমের বিচি
আমিষের জন্য শিমের বিচি খুবই পরিচিত একটি নাম। এতে প্রতি ১০০গ্রামে রয়েছে প্রায় ২১গ্রাম প্রোটিন। এজন্য সুষম খাদ্যে শিমের বিচির জুড়ি মেলা ভার।
২০. চিজ/পনির
পনির যেমন স্বাদের, তেমনি এতে গুনেরও কমতিবাদেরপ্রতি ১০০গ্রাম পনিরে প্রায় ২৫গ্রাম প্রোটিন, ৩৩গ্রাম ফ্যাট, এবং ১গ্রাম শর্করা থাকে।
২১. মুরগির বুকের মাংস/ চিকেন ব্রেস্ট
চিকেন ব্রেস্ট অন্ত্যন্ত জনপ্রিয় একটি প্রোটিন-পুষ্ট উপাদান। আর সাধারণত প্রতি ১০০গ্রাম চিকেন ব্রেস্টে পাবেন প্রায় ৩১গ্রাম প্রোটিন এবং ৫ শতাংশ ফ্যাট। যেহেতু মুরগির অন্যান্য অংশে ফ্যাট পরিমানে বেশি, তাই উইংস এবং লেগ-পিসেস কম খাওয়া ভালো। প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা চিকেন ব্রেস্ট ছাড়া অনেকাংশে অপূর্ণ।
২২. টার্কি মুরগির কিমা/ গ্রাউন্ড টার্কি
টার্কি আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ব্যাপক প্রচলিত না হলেও, আমিষের উৎস হিসেবে এটি জগদ্বিখ্যাত। প্রতি ১০০গ্রাম টার্কি মুরগির কোষযুক্ত মাংসের কিমায় রয়েছে অন্তত ২৭গ্রাম প্রোটিন এবং প্রায় ৮-১২গ্রাম ফ্যাট।
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার
আমাদের শরীরের কাঠামো তৈরি হয় হাড়ের মাধ্যমে। অথচ হাড়ের যত্নের বিষয়ে আমরা বেশির ভাগ মানুষই খুব উদাসীন বা তেমন ভাবে কিছুই জানি না। কয়েকটি খাবার বা খাদ্য উপাদান আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রয়েছে যেগুলি আমাদের হাড়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
যেমন, লবণ অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইড, সফট ড্রিংকস বা নরম পানীয়, চা ও কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন, অতিরিক্ত প্রোটিন বা প্রাণীজ প্রোটিন ইত্যাদি। তবে এমন অনেক খাবার বা খাদ্য উপাদান রয়েছে যেগুলি নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়, হাড় হয়ে ওঠে মজবুত।
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারগুলো হল–
১) কমলালেবু, মুসম্বি, পাতিলেবুর মতো যে কোনও লেবুতেই থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড আর ভিটামিন সি যা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দ্রুত মেটাতে সাহায্য করে।
২) কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে থাকে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে প্রায় ২৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে প্রতিদিন পাতে রাখুন এক মুঠো কাঠ বাদাম।
৩) ব্রোকলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামে ভরপুর এই সবজি শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।
৪) ৫০ গ্রাম ঢ্যাড়স বা ভেন্ডিতে প্রায় ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে পাতে রাখুন ঢ্যাড়স। উপকার পাবেন।
৫) শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সয়াবিন অত্যন্ত কার্যকর। এক কাপ সয়াবিনে প্রায় ১৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তাই নিয়মিত পাতে রাখুন সয়াবিন। উপকার পাবেন।
৬) তিলের বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ১০০ গ্রাম কাঁচা তিলের বীজে ১,০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
শর্করা জাতীয় খাবার
সাধারণত যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি থাকে এই ধরনের খাবার কি শর্করা জাতীয় খাবার বলা হয়ে থাকে।
আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের শর্করা জাতীয় খাবার প্রয়োজন হয়। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকা শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তিনটি মৌলিক উপাদান নিয়ে শর্করা জাতীয় খাবার গঠিত হয়ে থাকেঃ হাইড্রোজেন, কার্বন ও অক্সিজেন।
শর্করা জাতীয় খাবার কি কি?
এ জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো- রুটি, মুড়ি , চিড়া , আলু, পাউরুটি ইত্যাদি। আমরা 4 ক্যালরি শক্তি পেয়ে থাকে মাত্র 1 গ্রাম শর্করা মাধ্যমে। মানুষের শরীরে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম শর্করা জমা থাকে। আর এই শর্করা থেকেই আমরা আমাদের শক্তির যোগান পেয়ে থাকি।
শর্করা জাতীয় খাবারের কাজ
এই জাতীয় খাবার খুব সহজে হজম যোগ্য তাই আমরা এর মাধ্যমে পর্যাপ্ত শক্তির যোগান পেয়ে থাকি। এটি আমাদের দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখে। এ জাতীয় খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
যেভাবে বুঝবেন আপনার শর্করার অভাব রয়েছে কিনাঃ
১।ক্ষুধা অনুভব করা
২।বমি ভাব
৩।অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়া
৪।হার্টের কম্পন বেড়ে যাওয়া
৫।ক্লান্তি এবং বিভ্রান্তিকর অনুভূতি
৬। মাথা ঘোরা
এমন সম্ভাবনা দেখা দিলে এটি শর্করার অভাব বলে চিহ্নিত করা হয়। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ২৭৬ গ্রাম শর্করা গ্রহণ করা উচিত।
কোন খাবারে কত ক্যালরি রয়েছে?
আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে সব খাবার খাই, সে সব খাবারে কি পরিমাণ ক্যালোরি রয়েছে তার তালিকা এখানে দেয়া হয়েছে। যারা ওজন কমানোর ডায়েট করেন অথবা যারা মোটা হওয়ার ডায়েট করেন তাদের ক্যালরি যুক্ত খাবারের তালিকা জানার দরকার হয়। কারণ এই তালিকা যদি না জানা থাকে তাহলে কোন খাদ্য কি পরিমাণ খাবেন তা বুঝতে পারবেন না।
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
ক্যালরি যুক্ত খাবারের তালিকা:
১। লাল চালের ভাত এক কাপ ২১৮ক্যালরি
২।সাদা চালের ভাত এক কাপ ২০০-২৪২ক্যালরি
৩।ফ্রাইড রাইস এক কাপ ১২০-৩৯০ক্যালরি
৪।খাসির বিরিয়ানি এক প্লেট ৪৭০ক্যালরি
৫।চিকেন বিরিয়ানি এক কাপ ৪১৮ক্যালরি
৬।সবজি বিরিয়ানি এক কাপ ২২০ক্যালরি
৭।পোলাও এক কাপ ২৫৮ক্যালরি
৮।মুগ ডাল খিচুড়ি এক কাপ ১৭৬-২১৫ক্যালরি
৯।লাল পাউরুটি এক স্লাইস ৬০-৮৯ক্যালরি
১০।বান রুটি একটি ১৫০ক্যালরি
১১।রুমালি রুটি একটি ২০০ক্যালরি
১২।রুমালি রুটি ঘি সহ একটি ২৪৫ক্যালরি
১৩।তন্দুরি রুটি ঘি সহ একটি ১০২-১২০ক্যালরি
১৪।তন্দুরি রুটি ঘি ছাড়া একটি ১৪৭ক্যালরি
১৫।লুচি একটি ১৪০ক্যালরি
১৬।নান রুটি মাখন সহ একটি ৪২৪ক্যালরি
১৭।চালের রুটি একটি ১০৫ক্যালরি
১৮।পরোটা তেলে ভাজা একটি ২৪৩-২৯০ক্যালরি
১৯।আলু পরোটা একটি ৩০০ক্যালরি
২০।সাদা আটা এক কাপ ৩৬৪ক্যালরি
২১।লাল আটা এক কাপ ৩৫৬ক্যালরি
২২।নুডলস সিদ্ধ এক কাপ ২২০ক্যালরি
২৩।চাওমেন এক প্লেট ১৮২০-২৪৩০ক্যালরি
আরও পড়ুন-
৬ মাস থেকে ৫ বছরের বাচ্চার খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা দিন শেষ
বাচ্চার পুষ্টি নিয়ে ভাবছেন?অধিক পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ বাচ্চার খাবার তালিকা
নবজাতক শিশুর যত্ন ও পরিচর্যায় বাবা-মার করণীয়
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন
SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এএখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
SS IT BARI-সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
SS IT BARI- ভালবাসার টেক ব্লগ এ হেলথ/স্বাস্থ্য/স্কিন কেয়ার এবং ইতিহাস বিষয়ক লেখালিখি করি। এর আগে বিভিন্ন পোর্টালের সাথে যুক্ত থাকলেও, SS IT BARI-আমার হাতেখড়ি। হেলথ/স্বাস্থ্য/স্কিন কেয়ার বিষয়ক বিশ্লেষণ বাংলায় জানতে ভিজিট করুন http://ssitbari.com