গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার-মানবদেহে হেরিকব্যাক্টোর ফাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে গ্যাস্ট্রিকের সূত্রপাত ঘটে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যাটি এত বেশি সকলের কাছে পরিচিত যে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কি সম্পর্কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। তবে আমরা না বুঝে গ্যাস্ট্রিক রোগে ভুগি এবং গ্যাস্ট্রিক হওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেয়ে রোগটি থেকে প্রাথমিকভাবে মুক্তি পাবার চেষ্টা করি।
যা কখনোই উচিত নয় আপনি ঘরোয়া উপায়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করার চেষ্টা করতে পারেন প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারে।যদি আপনার সমস্যা বেশি প্রকট ধারণ করে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে পারেন। কিন্তু কখনই না বুঝে না জেনে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যে কোন ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে।
আমরা আজকে জানবো গ্যাস্ট্রিক থেকে ক্যান্সার হলে তার লক্ষণ গুলো কি কি। কিভাবে বুঝবেন আপনি গ্যাস্ট্রিকের কারণে ক্যান্সারে ভুগছেন। গ্যাস্ট্রিকের থেকে ক্যান্সার সাধারণত পাকস্থলীতেই হয়ে থাকে। তাই সমস্যা শুরু হওয়ার পরপরই যাতে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করে ক্যান্সার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন সে জন্য লক্ষণগুলো আপনাদের জেনে রাখা জরুরী। চলুন আজকে আপনাদের গ্যাস্ট্রিকের ক্যান্সার রোগের লক্ষণ গুলো কি কি তা জানাই।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার কি
ক্যান্সার!! রোগটির নামের মধ্যেই যেন ভয়ানক কিছু লুকায়িত। ক্যান্সার মানেই মরণব্যাধি। তবে সব ক্যান্সার এক নয়। আবার সব ক্যান্সারের চরিত্রগত লক্ষণও কিন্তু দেখা যায় না।গ্যাস্ট্রিক থেকে যেই ক্যান্সার সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় পাকস্থলীর ক্যান্সার।পাকস্থলী যেহেতু পেটের মাঝখানে থাকে এবং এটি শারীরিক কার্যকলাপের পাশাপাশি অন্যান্য অঙ্গ যেমন লিভার, অগ্নাশয়, খাদ্যনালী এবং কোলন এর সাথে সম্পর্কিত। তাই ক্যান্সারের ভয়াবহ রূপ নেওয়ার সাধারণ একটি ঝুঁকি থাকে।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের লক্ষণ
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের লক্ষণগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে খুব একটা বেশি পরিলক্ষিত হয় না। তবে কখনো কখনো যদি গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে প্রাথমিকভাবে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন:
গ্যাস্টিক ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ের লক্ষণ
*অম্বল বেড়ে যাওয়া।
*নাভির উপরে পেটে ব্যথা করা।
*অল্প খাবার খাওয়ার পরেই পেটের উপরঅংশ ভরে যাওয়া।
*বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া।
*ঘনঘন বদ হজম হওয়া।
*হঠাৎ করে খিদে প্রচুর কমে যাওয়া।
*মেজাজ খিটখিটে থাকা।
*খাবারে এলার্জি।
*পেটে আলসার।
*ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
*এবং অহেতুক ওজন রাস পাওয়া।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার যখন প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তখন এই লক্ষণ বা উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ের লক্ষণ গুলো
ক্যান্সার রোগটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে সহজে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়। কিন্তু যখন এই রূপটি ভয়াবহ আকার নেয় এবং লিভার ফুসফুস এবং প্যারিটিোনিয়াম এর মত অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে তখন তা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। যেমন:
*মলের সাথে রক্ত আসা।
*শরীর সাধারণত দুর্বল এবং ক্লান্ত হয়ে যাওয়া।
*জন্ডিস যখন ক্যান্সার লিভার কে প্রভাবিত করে।
*তলপেট ফুলে যাওয়া বা তরল জমা হওয়া।
*লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যাওয়া।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের প্রকারভেদে
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের বিভিন্ন রকম প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন: অ্যাডেনোকর্টীনোমাস এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল স্ট্রোমাল টিউমার।
অ্যাডেনোকর্টীনোমাস হল পেটের অভ্যন্তরীণ আস্তরণে গ্রন্থি কোষ থেকে বিকশিত হয় যা মুকোসা নামে পরিচিত।
গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তির উপায়
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল স্ট্রোমাল টিউমার হল এমন একটি ক্যান্সার যা পেটের দেয়াল থেকে হওয়া শুরু করে এবং তারপরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের কারণ
আমরা যেই খাদ্য গ্রহণ করি তা পেট হজম করে। তারপর সেই খাদ্য থেকে শরীর পুষ্টি গ্রহণ করে এবং শরীরের শক্তি সঞ্চালন করে। কিন্তু যখন পেটের হজম তন্ত্রের মধ্য থাকা কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং সেখান থেকে একটি টিউমার গঠন করে সেই টিউমার ধীরে ধীরে ক্যান্সারে পরিণত হয়। তবে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার একদিনে তৈরি হয় না। দীর্ঘদিন ধরে এটি গঠিত হয় এবং এই টিউমার থেকেই জন্ম হয় ক্যান্সারের।
তবে ক্যান্সারের মূল কারণ বা গঠনগত কোন কারণ এখনো জানা সম্ভব হয়নি। কয়েকটি বিষয়কে বিশেষজ্ঞরা ক্যান্সারের কারণ হিসেবে দায়ী করেন। যেমন:
*স্থুলতা।
*বংশগত।
*এ বাল্ড টাইপ থাকলে।
*ক্রমাগত লবণ জাতীয় এবং স্মোকি খাবার খেলে।
*ফল ও শাক-সবজি কম পরিমাণে খেলে।
*নিয়মিত ধূমপান করলে অথবা অ্যালকোহল গ্রহণ করলে।
*গ্যাস্ট্রাইসোফেগাল রিফ্লাক্স রোগ থাকলে।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধ
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সচেতনতা।আপনি যদি একজন সচেতন নাগরিক বা সচেতন ব্যক্তি হন তাহলে অবশ্যই আপনি গ্যাস্ট্রিকের ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবেন। গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধে করণীয়গুলো হলো:
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
*ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
*ধূমপান অ্যালকোহ ল বর্জন করা।
*অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগুলো তালিকা থেকে বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা।
*নিয়মিত সঠিক সময় খাদ্য গ্রহণ করা।
*অতিরিক্ত মসলাযুক্ত তৈলাক্ত খাবার গুলো বাদ দেওয়া।
*নিয়মিত শরীর চর্চা করা।
*পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া।
ক্যান্সার এমন একটি মারাত্মক রোগ যা বলে কয়ে আসে না।এমনও অনেক রোগী আছে যাদের ক্ষেত্রে হয়েছে যে ক্যান্সার কোন লক্ষণ বা উপসর্গ ছাড়াই পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়েছে। এটা কোন আশ্চর্যজনক বিষয় নয়। তাই সকলের উচিত স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা। সুস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা। সচেতনতাই পারে ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তি দিতে।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার কি কোন ছোঁয়াচে বা সংক্রমিত রোগ?
উত্তর: গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার কোন ছোঁয়াচে বা সংক্রমিত রোগ নয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকলে অন্য কারো এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
পেপটিক আলসার কি পাকস্থলীর কোনো রোগ?
উত্তর:পেপটিক আলসার যে শুধুমাত্র পাকস্থলীতেই হয়ে থাকে তা কিন্তু নয় বরং এটি পোস্ঠিক তন্ত্রের যে কোন অংশেই হতে পারে।
পেপটিক আলসার কি ক্যান্সারের কারণ হতে পারে?
উত্তর: যদি যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না করা হয় তাহলে পেপটিক আলসার ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গ্যাস্টিক ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি। আপনারা এতক্ষণ আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিশ্চয়ই এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের ওয়েবসাইটে আরও বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পেতে অবশ্যই নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আর অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের সাথে থাকবেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
পোস্ট ট্যাগ-
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা,গ্যাস্ট্রিক আলসারের লক্ষণ,পেটে টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ,পাকস্থলীর ক্যান্সার কি ভালো হয়,পেটের ক্যান্সারের লক্ষণ,খাদ্যনালীর ক্যান্সারের লক্ষণ,লিভার ক্যান্সার লক্ষণ,গ্যাস্ট্রিক এর লক্ষণ,
আপনার জন্য আরো –
- ইংলিশে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ইউটিউবে – ব্লগিং,ইউটিউবিং,ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত ভিডিও পেতে–এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে- ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত সকল ভিডিও পেতে –এখানে ভিজিট করুন।
আপনার জন্য-
অ্যাজমা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা
থাইরয়েড রোগ থেকে মুক্তি পেতে করণীয়
চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকারী চিকিৎসা
যক্ষা বা টিবি রোগের লক্ষণ
ক্যান্সার রোগের যেসব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না
শ্বেতী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”
প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন
SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে :এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
SS IT BARI- টুইটার থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- লিংকদিন থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- টুম্বলার (Tumblr)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে :এখানে ক্লিক করুন।।
SS IT BARI- পিন্টারেস্ট (Pinterest)থেকে আমাদের খবর সবার আগে পেতে : এখানে ক্লিক করুন।।

SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ টিম