ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম – আব্দুর রহমান আল হাসান – তিরমীজি শরীফের একটি হাদীস পড়তে গিয়ে বরাবরের মতো আশ্চর্য হতে হয়, হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত,
রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, যেই ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করার পর সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত উক্ত স্থানে বসে থাকবে এবং সেখানে সে আল্লাহর জিকির করবে। তারপর সে সূর্য উঠার পর দুই রাকাত নামাজ আদায় অর্থাৎ ইশরাকের নামাজ আদায় করবে, তার জন্য রয়েছে পূর্ণাঙ্গ হজ্জ্ব ও ওমরাহর সওয়াব।
ইসলামের শ্বাশ্বত বিধানের মধ্যে ফরজ বিধানগুলোর গুরুত্ব অন্যতম। এর মধ্যেও আল্লাহ তা’আলা বান্দার সুবিধার্থে এবং উম্মাহ যেন জাহান্নামে না যায়, তাই বিভিন্ন নফল ও সুন্নত বিধি-বিধান দিয়েছেন। রাসূল সা. তার দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আমল করেছেন।
পড়ুন: আশুরা কি?
কখনো তিনি সাহাবাদেরকে করতে বলেছেন। আবার কখনো তিনি সাহাবাদেরকে করতে বলেন নি। কারণ, বললে তা সুন্নত বা ফরজ হিসেবে সাব্যস্ত হবে। আর তা উম্মাহর জন্য কষ্টের কারণ হবে।
এখন আমরা একটু দেখি, উক্ত নামাজটি কি? যেই নামাজ আদায় করতে পূর্ণাঙ্গ হজ্জ্বের সওয়াব পাওয়া যাবে।
ইশরাকের নামাজ কি
ফজরের নামাজের পর যখন সূর্য উদিত হয় তখন থেকে নিয়ে সূর্য মধ্য আকাশে আসার আগ পর্যন্ত সেই সময়টি রয়েছে, সেই সময়টিকে বলা হয় ইশরাক।
আরবীতে ইশরাক শব্দের অর্থ, আলোকিত হওয়া। আর এই সময় যেহেতু সূর্যের আলোতে পুরো পৃথিবী ঝলমলিয়ে উঠে, তাই এই সময়ে পড়া নামাজের নামকরণ করা হয়েছে ইশরাক নামে।
ইশরাকের নামাজের সময় কখন শুরু হয় – ইশরাকের নামাজ
ফজরের নামাজের ২০/৩০ মিনিট পর হতে অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত ইশরাকের নামাজের সময় থাকে। তবে অনেকে বুঝার সুবিধার্থে এই সময়টাকে দুইভাগে ভাগ করে নেন।
প্রথম ভাগ হলো, ফজরের পর থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত। এটাকে ইশরাকের সময় হিসেবে নামকরণ করা হয়। দ্বিতীয় ভাগ হলো, সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত বা সূর্য মাথার উপর আসার আগ পর্যন্ত। এই সময়টাকে নামকরণ করা হয়, চাশতের সময় হিসেবে।
পড়ুন: আবু বকর রা. এর যামানায় মুসায়লামাতুল কাজ্জাবের ফেতনার আত্মপ্রকাশ
মূলত এই দুইটি সময় একই। শব্দগত পার্থক্যটি মূখ্য কোনো বিষয় নয়। ইশরাক বলা হয় আরবীতে আর চাশত বলা হয় উর্দূ বা ফার্সিতে।
ইশরাকের নামাজ কত রাকাত – ইশরাকের নামাজ
ইশরাক যেহেতু একটি নফল নামাজ ও নফল ইবাদত। তাই এই নামাজে কত রাকাত পড়তে হবে, সেটা নির্দিষ্ট নেই। রাসূল সা. কখনো কখনো দুই রাকাত পড়তেন। আবার কখনো কখনো চার রাকাত পড়তেন। তাই এই নামাজ দুই রাকাত থেকে শুরু করে আট রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।
অনেক উলামায়ে কেরাম সহীহ হাদীস ও সাহাবাদের ইবাদতের মাধ্যমে মত দিয়েছেন যে, দুই রাকাত থেকে ১২ রাকাত পর্যন্ত এই নামাজ পড়া যায়।
তবে এটা একান্তই আপনার বিষয় যে, আপনি কত রাকাত আদায় করতে চান। আপনি বেশি পড়তে আপনি লাভবান হবেন। আপনার কোনো কাজ থাকলে আপনি কম পড়তে পারেন।
ইশরাক নামাজের ফজিলত – ইশরাকের নামাজ
প্রথমেই রাসূল সা. এর ইশরাকের নামাজ পড়া নিয়ে একটি হাদীস উল্লেখ করেছি। নিচে আরো কতগুলো হাদীস উল্লেখ করছি, যাতে আমরা বুঝতে পারি যে, ইশরাকের নামাজের গুরুত্বটি কতুটুকু!
যদি কেউ দুই রাকাত ইশরাকের নামাজ পড়ে এরপর সে আরো দুই রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে তার সকল কাজের জিম্মাদার আল্লাহ তা’আলা হয়ে যাবেন। এমনকি হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, বান্দা যদি সকালে চার রাকাত নামাজ পড়ে, সন্ধা পর্যন্ত বান্দার যত কাজ আছে সকল কাজের জিম্মাদার আমি (আল্লাহ) হয়ে যাই।
পড়ুন: আবু বকর রা. এর রাজনৈতিক জীবন কেমন ছিল?
সহীহ তিরমিজী শরীফের ৪৭৫ নং হাদীসে উল্লেখ রয়েছে,
حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ السِّمْنَانِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُسْهِرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ بَحِيرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، وَأَبِي، ذَرٍّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ عَنِ اللَّهِ، عَزَّ وَجَلَّ أَنَّهُ قَالَ ابْنَ آدَمَ ارْكَعْ لِي مِنْ أَوَّلِ النَّهَارِ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ أَكْفِكَ آخِرَهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবু দারদা ও আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হে আদম সন্তান! দিনের প্রথম ভাগে আমার জন্য চার রাক’আত নামায আদায় কর, আমি তোমার দিনের শেষ পর্যন্ত প্রয়োজন পূরণ করে দিব।
শেষ কথা
আল্লাহ তা’আলা নিয়মিত আমল করা পছন্দ করেন। আমরা অনেক সময় হিম্মত করি ভালো কাজ করার। কিন্তু দিন শেষে আমরা তা করি না বা করতে আগ্রহবোধ করি না। আপনি যদি একদিন ভালোভাবে আমল করে ৬ দিন আমলহীন থাকেন, তাহলে এটা কখনো আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হয় না।
আপনি দুনিয়ার একটা বিষয় দিয়েই বুঝুন, যদি আপনার অফিসের প্রধানের কিছু কাজ আপনি করে দেন, আর একদিন অনেক কাজ করে বাকী ছয়দিন ঠিকমতো অফিসই করলেন না, তাহলে কিন্তু উক্ত অফিসে আপনার চাকুরি থাকবে না।
পড়ুন: আবু বকর রা. এর পূর্ণাঙ্গ জীবনী
তাই আমল হোক আমাদের মেধা ও মননের পরিচর্যার মাধ্যম। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমীন
SS IT BARI– ভালোবাসার টেক ব্লগের যেকোন ধরনের তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের মেইল টি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!
”এছাড়াও আমাদের প্রতিদিন আপডেট পেতে আমাদের নিচের দেয়া এই লিংক এ যুক্ত থাকুন।
SS IT BARI- ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যে কোনো প্রশ্ন করুনঃএখানে ক্লিক করুন।
SS IT BARI- ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃএই পেজ ভিজিট করুন।
SS IT BARI- ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এএখানে ক্লিক করুনএবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতেএখানে ক্লিক করুনতারপর ফলো করুন।
SS IT BARI-সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুনএই লিংকে।
স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ইংলিশে সকল সঠিক তথ্য জানতে আমাদের SS IT BARI- ভালোবাসার টেক ব্লকের আরেকটি সংস্করণ, US IT BARI- All About Healthy Foods ওয়েব সাইট টি ভিজিট করতে পারেন।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন –www.usitbari.com

আমি কওমী মাদ্রাসা থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছি। এখন মেশকাত জামাতে অধ্যয়নরত আমি। লেখালেখিতে আগ্রহ আমার ছোটবেলা থেকেই। প্রায় সময়ই গল্প-উপন্যাস, বিজ্ঞান, ইতিহাস বিষয়ে লেখালেখি করি। লেখালেখির প্রাথমিক হাতেখড়ি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক কামরুল হাসান নকীব সাহেবের হাত ধরে। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাই নি। অনলাইন ফ্লাটফর্মে লেখালেখি আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শুরু করি। এর মধ্যে দু’একটা সুনামধন্য পত্রিকায় লেখার সুযোগ পাই। বর্তমানে এসএস আইটি বারী ডট কমে ইসলামিক বিষয়ক লেখালেখিতে কর্মরত।
অবসরে তাফসীর, সীরাত গ্রন্থ, মুৃসলিম ইতিহাস, পৃথিবীর ইতিহাস, বিজ্ঞান ও বিশেষ করে জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত বই পড়তে পছন্দ করি। পাশাপাশি নিজের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গ্রাফিক্স, ওয়েব ডেপলপমেন্ট, এসইও, প্রোগ্রামিং ও মার্কেটিং শেখার চেষ্টা করি।